Advertisement
E-Paper

রাজনীতির যুদ্ধে ফায়দা মাল্যেরই

প্রত্যর্পণ মামলায় মাল্যের সব থেকে বড় অভিযোগ, তিনি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’-র শিকার। দু’দিন আগেও লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে মাল্য বলেছেন, তাঁকে নিয়ে ফুটবল খেলা চলছে

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৯
ছবি পিটিআই

ছবি পিটিআই

পরিকল্পনা করেই কি তাঁকে নিয়ে নতুন রাজনৈতিক খণ্ডযুদ্ধ বাধিয়ে দিলেন বিজয় মাল্য! সিবিআইয়ের পোড়খাওয়া অফিসারদের একাংশের মনে সেই প্রশ্ন উঠেছে।

প্রত্যর্পণ মামলায় মাল্যের সব থেকে বড় অভিযোগ, তিনি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’-র শিকার। দু’দিন আগেও লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে মাল্য বলেছেন, তাঁকে নিয়ে ফুটবল খেলা চলছে। এবং সেই দিনই দাবি করেন, দেশ ছাড়ার আগে অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। তার পরেই ফের শুরু হয়েছে বিজেপি-কংগ্রেস বাগ‌্‌যুদ্ধ। আবার তৃণমূলের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। সিবিআইয়ের অফিসার ও আইনজীবীদের একাংশের আশঙ্কা, এই বিবাদের উদাহরণ দেখিয়েই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা প্রমাণের চেষ্টা করতে পারেন মাল্য।

রাহুল গাঁধী প্রশ্ন তুলেছেন, ঋণখেলাপি শিল্পপতিকে পালাতে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই জেটলিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না। আজ কংগ্রেস সভাপতির টুইট, ‘‘দেখা-মাত্র আটকানোর নোটিসকে শুধু খবর দেওয়ার নোটিসে চুপচাপ বদলে দিয়ে মাল্যর ‘গ্রেট এসকেপ’-এ সাহায্য করেছিল সিবিআই। এই সংস্থা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট করে। এত হাই-প্রোফাইল, বিতর্কিত মামলায়, প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই সিবিআই লুকআউট নোটিস বদলে ফেলবে, এটা মানা যায় না।’’

কংগ্রেসের চাপের মুখে এখন বিজেপির রণকৌশল হল, মনমোহন-জমানায় মাল্যকে কী ভাবে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের জন্য ঋণ পাইয়ে দিয়ে, তা সহজে শোধের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তা খুঁজে বার করা। সিবিআই সূত্রের খবর, প্রয়োজনে ওই লেনদেনে জড়িত অর্থ মন্ত্রক ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। বিজেপির আরও অভিযোগ, নিখরচায় কিংফিশারের বিমানে চড়েছেন সনিয়া ও রাহুল। ২০১৬-র ১ মার্চ সংসদে মাল্য-জেটলি কথা হয় বলে কংগ্রেসের দাবি। জেটলির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ওই তারিখে সংসদে, বিজ্ঞান ভবনে ব্যস্ত ছিলেন অর্থমন্ত্রী।.

আরও পড়ুন: আঙুল উপমায় কি মাল্য-ইঙ্গিত!

ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্ট ১০ ডিসেম্বর প্রত্যর্পণ মামলার রায় দেবে। রায়ের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ হাইকোর্টে যেতে পারবেন মাল্য। তার পরে সুপ্রিম কোর্ট রয়েছে। সিবিআইয়ের প্রবীণ অফিসারদের আশঙ্কা, হাইকোর্টে মাল্য বলতেই পারেন যে, বিরোধীদের চাপের মুখে ভারত সরকার তাঁর প্রত্যর্পণ চাইছে। ব্যবসা মার খাওয়ায় ঋণ শোধে ব্যর্থ হওয়া ছাড়া তাঁর আর কোনও দোষ নেই। ২০০২-এ রাজ্যসভার সদস্য হতে মাল্যকে সাহায্য করেছিল কংগ্রেস-জেডি(এস)। ২০১০-এ বিজেপি ও জেডি(এস)! এই তথ্যও মাল্যের পক্ষে যেতে পারে। এর সঙ্গে আর্থার রোড জেলের দুরবস্থার দাবি তো রয়েইছে।

প্রবীণ আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে নতুন অস্ত্র দিয়েছেন রাহুলদের। কিংফিশারের ৯ হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ কিছু সরকারি ব্যাঙ্কের কাছে। দুষ্মন্তের দাবি, তিনি ২০১৬-য় স্টেট ব্যাঙ্কের আইনজীবী ছিলেন। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি স্টেট ব্যাঙ্ককে বলেছিলেন, মাল্য দেশ ছাড়তে পারেন। তা আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া উচিত। কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সেই পরামর্শ মানেননি। ২ মার্চ মাল্য দেশ ছাড়েন। সে দিনই সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ব্যাঙ্কগুলি।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘সিবিআই ২০১৫-র অক্টোবরে কিংফিশারের দফতরে হানা দেয়। নথি আটক হয়। তার পরেও তারা কী করে বলে, মাল্য দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন, এমন কোনও প্রমাণ ছিল না? স্টেট ব্যাঙ্ক ও অন্য সরকারি ব্যাঙ্কের অভিযোগ জানাতেই বা এত দেরি হল কেন?’’ স্টেট ব্যাঙ্ক বলেছে, ‘‘আমাদের গাফিলতি নেই।’’ তবে সিবিআই চুপ।

Advantage Politics Vijay Mallya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy