এক সরপঞ্চকে গলা কেটে খুন করার অভিযোগ উঠল মাওবাদীদের বিরুদ্ধে। ছত্তীসগঢ়ের বস্তার জেলার ঘটনা। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, ছিন্দগুড় গ্রামের ওই সরপঞ্চের নাম পন্ড্রু (৪৫)। শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় এক দল সশস্ত্র মাওবাদী। পন্ড্রুকে হত্যার পাশাপাশি ভাঙচুর চালানো হয়েছে তাঁর বাড়িতেও।
দক্ষিণ বস্তার রেঞ্জের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল অব পুলিশ পি সুন্দররাজ জানান, দরভা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ছিন্দগুড় গ্রামটি ঘন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত। ঘটনার কথা জানার পর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ। পন্ড্রুর দেহ ময়না-তদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কয়েক মাস ধরেই ছিন্দগুড় এবং তার কাছের গ্রাম কোলেঙের বাসিন্দারা মাওবাদী কার্যকলাপের বিরোধিতা করছেন। যা মাওবাদীদের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁডি়য়েছে। তার উপর গ্রামবাসীদের দাবি মেনে গত মাসেই কোলেঙ গ্রামে একটি পুলিশ শিবির করা হয়েছে। সম্প্রতি সেই শিবিরের দায়িত্ব নিয়েছে সিআরপিএফ। এই সব কারণে স়রপঞ্চ পন্ড্রুকে খুন করে মাওবাদীরা গ্রামবাসীদের বার্তা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সুন্দররাজ জানান, গত কয়েক বছরে অনেক মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বহু মাওবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বহু মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। এই সব কারণে দরভা এলাকার মাওবাদীদের শক্তি অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই নিজেদের শক্তি জাহির করার জন্যও মাওবাদীরা এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছে পুলিশ।
ঘটনাচক্রে এ দিনই ছত্তীসগঢ়ের মরদাপল এলাকা থেকে পুলিশ তিন মাওবাদীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের কাছ থেকে ১০ কিলোগ্রাম টিফিন-বম্ব, তার, একটি শুকনো ব্যাটারি এবং মাওবাদী পুস্তক ও ব্যানার উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মরদাপল এলাকার রানাপল থেকে বায়ানার পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। রাস্তা নির্মাণকারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য এ দিন এলাকায় টহল দিচ্ছিল পুলিশ এবং আইটিবিপি-র যৌথ বাহিনী। সেই সময় তারা জঙ্গলের মধ্যে ওই মাওবাদীদের দেখতে পায়। গ্রেফতার করা হয়েছে তিন জনকেই। ধৃতদের নাম লক্ষ্মীনাথ কোররাম (২৮), চন্দন কোররাম (১৯) এবং জৈত্রম কোররাম (২১)। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা স্বীকার করেছে, রাস্তা নির্মাণকারীদের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের খুন করার জন্যই বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা।
শুক্রবার বিজাপুর জেলার বাসাগুড়া থেকে তিনটি আইইডি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাওবাদীরাই সেগুলি পুঁতে রেখেছিলেন বলে সন্দেহ তাদের। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, বাসাগুড়া থেকে সুকমা জেলার জগরগুন্দা পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরি হচ্ছে। সেই কাজে বাধা দেওয়ার জন্যই বিস্ফোরণ ঘটাতে চেয়েছিলেন মাওবাদীরা। বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড এসে আইইডিগুলি নিষ্ক্রিয় করে। গত সপ্তাহেও ওই এলাকার দু’টি জায়গা থেকে তিনটি আইইডি উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ দিনই ছত্তীসগঢ়ের বলরামপুরে ছ’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন মাওবাদীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy