Advertisement
E-Paper

নদীতে ভেসে এল দিদিমা এবং দু’বছরের নাতির মুণ্ডহীন দেহ, কার্ফু জারির পরেও শান্ত হয়নি মণিপুর

মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার এক বয়স্কা এবং বছর দুয়েকের এক শিশুর মুণ্ডহীন দেহ নদীতে ভেসে আসে। রবিবার পর্যন্ত জিরিবামে মোট ছ’টি দেহ উদ্ধার করা হল। কারও কারও দাবি, সংখ্যাটি আরও বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৬
অশান্ত মণিপুর। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ।

অশান্ত মণিপুর। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি।

গোষ্ঠীহিংসার জেরে ফের উত্তপ্ত মণিপুর। রবিবারও সে রাজ্যের জিরিবাম জেলার জিরি নদী থেকে দু’টি দেহ উদ্ধারের খবর মিলেছে। মণিপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ষাটোর্ধ্ব এক বয়স্কা এবং বছর দুয়েকের এক শিশুর মুণ্ডহীন দেহ নদীতে ভেসে আসে। রবিবার পর্যন্ত জিরিবাম জেলায় মোট ছ’টি দেহ উদ্ধার করা হল। মেইতেইরা মনে করছেন, ওই ছ’টি দেহ জিরিবাম থেকে অপহৃত তিন মহিলা এবং তিন শিশুর। যদিও আরও একটি অংশের দাবি, নদীতে আরও কিছু দেহ ভেসে আসতে দেখা গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে নিহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

গত সোমবার জিরিবামে অসম সীমানা লাগোয়া অঞ্চল থেকে অপহরণ করা হয়েছিল ওই ছ’জনকে। এ ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙুল ওঠে কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকে। নদীতে দেহ উদ্ধারের পরেই মণিপুরের ইম্ফল সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মেইতেই জনগোষ্ঠীর সদস্যেরা। প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, শনিবার সে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী গোবিন্দদাস কন্ঠৌজাম, বিজেপি বিধায়ক ওয়াই রাধেশ্যাম, বিজেপি বিধায়ক পাওনাম ব্রজেন, কংগ্রেস বিধায়ক টিএইচ লোকশ্বরের বাড়িতে আগুন ধরানো হয়। সে সময় মন্ত্রী, বিধায়ক এবং তাঁদের পরিবারেরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে বিক্ষোভকারীরা প্রথমে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। ইম্ফল পূর্ব জেলার লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়িতে হামলার অভিযোগও ওঠে।

হামলা হয় মণিপুরের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সাপম রঞ্জন, বিজেপি বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের জামাতা আরকে ইমোর বাড়িতেও। হামলাকারীদের দাবি, জিরিবাম জেলায় ছ’জনকে খুন করায় অভিযুক্ত যাঁরা, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ইম্ফলে কার্ফু জারি করা হয়। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর-সহ মোট সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তাজনিত একাধিক বিধিনিষেধও জারি করা হয়। সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেল্‌সের জওয়ানদের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমন করতে রবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনী। তবে তার পরেও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।

মণিপুরের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে রবিবার দিল্লি ফিরে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সরকারি ভাবে কিছু জানানো না-হলেও একটি সূত্রের খবর, দিল্লি ফিরেই মণিপুর-পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন শাহ।

ঘটনার সূত্রপাত কিছু দিন আগে। মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় ১০ কুকি জঙ্গি। যদিও কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’। জিরিবাম জেলা থেকে একই পরিবারের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণের অভিযোগও উঠেছিল কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। ওই ছ’জন ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের।

Manipur Curfew N Biren Singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy