এক মাস কেটে গিয়েছে। অহমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি সেই বিমানের একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ। এখনও ঘোরের মধ্যে আছেন। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। এমনকি, তাঁকে স্বাভাবিক করে তুলতে পরিবারের লোকজন মনোবিদের পরামর্শও নিতে শুরু করেছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এ কথা জানিয়েছেন রমেশের আত্মীয়েরা।
গত ১২ জুন অহমদাবাদ থেকে ভাইয়ের সঙ্গে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন রমেশ। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তাঁদের সেই বিমান রানওয়ে ছাড়ার ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে সামনের বহুতলে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে। বিস্ফোরণও হয়। তার পরেও বেঁচে গিয়েছেন রমেশ। ছিলেন বোয়িং সংস্থার ওই বিমানের ১১এ আসনটিতে। ২৪২ জনের মধ্যে তিনিই ওই বিমানের একমাত্র জীবিত যাত্রী। মৃত্যু হয়েছে রমেশের ভাই অজয়ের।
আরও পড়ুন:
রমেশের তুতো ভাই সানি জানিয়েছেন, আতঙ্ক কাটাতে তাঁকে মনোবিদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখনও ভাল করে ঘুমোতে পারেন না তিনি। সানির কথায়, ‘‘ঘটনার পর থেকে অনেকে ফোন করেছেন। রমেশের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। এমনকি, আমাদের যে সমস্ত আত্মীয় বিদেশে থাকেন , তাঁরাও ফোন করেছেন অনেক বার। রমেশের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু রমেশ কারও সঙ্গে কথা বলেননি। বিমান দুর্ঘটনা এবং ভাইয়ের মৃত্যুর মানসিক আতঙ্ক এখনও উনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি।’’
রাতের ঘুম প্রসঙ্গে সানি বলেন, ‘‘রাতে বার বার জেগে ওঠেন রমেশ। তার পর ঘুমোতে পারেন না অনেক চেষ্টা করেও। এর সমাধান খুঁজতে আমরা ওঁকে মনোবিদের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম দু’দিন আগেই। আপাতত লন্ডনে ফিরে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই ওঁর। চিকিৎসা শুরু হয়েছে।’’
দুর্ঘটনার পর বিমানের ধ্বংসস্তূপের কাছ থেকে বেরিয়ে হেঁটে হেঁটেই অ্যাম্বুল্যান্সে উঠতে দেখা গিয়েছিল রমেশকে। কী ভাবে বেঁচে গেলেন, তা নিজেও জানেন না। পাঁচ দিন ছিলেন অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতালে। গত ১৭ জুন সেখান থেকে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের দেহও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রমেশ জানিয়েছিলেন, তিনি বিমানের যে দিকে বসেছিলেন, সে দিকটা হস্টেল ভবনের এক তলায় পড়েছিল। তিনি ভাঙা দরজা দেখে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।