দু’দশক ধরে মোটের উপর নিষ্ক্রিয় থাকার পরে আবার আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত ভারতের একমাত্র কাদার আগ্নেয়গিরি বারটাং-এ শুরু হয়েছে বড়সড় উদ্গীরণ। সরকারি সূত্রের খবর, গত কাল প্রথম উদ্গীরণ হয়। স্থানীয় এক জন পুলিশ আধিকারিক বলেন, “আমরা জারোয়া খাঁড়ির কাছে কাদামাটির আগ্রাসী উদ্গীরণের খবর পাই বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ। বিস্ফোরণের মতো কানফাটা একটা শব্দ হয়েছিল সঙ্গে। এমন বড় উদ্গীরণ শেষ বার হয়েছিল ২০০৫ সালে।”
আন্দামানে দু’টি আগ্নেয়গিরি। তার মধ্যে একটি বারটাংয়ের কাদামাটির ও অন্যটি ব্যারেন দ্বীপে লাভার। উত্তর ও মধ্য আন্দামান জেলায় রয়েছে বারটাং আগ্নেয়গিরিটি। লাভার পরিবর্তে এই আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত হয় উত্তপ্ত কাদা এবং গ্যাস। এক জন সরকারি আধিকারিক বলেছেন, “এটি পৃথিবীর গভীরে ক্ষয়প্রাপ্ত জৈব পদার্থ থেকে উৎপন্ন গ্যাসের ফলে তৈরি। সেটা কাদা এবং বাতাস উপরের দিকে ঠেলে তোলে এবং তার থেকে বুদবুদ ও গর্ত তৈরি হয়।”
পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে বারটাং। জনপ্রিয় পর্যটনস্থলটিতে আগ্নেয়গিরির দিকে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে বন দফতর। সতর্ক করা হয়েছে নৌকা মালিকদের সংগঠন এবং পর্যটকদের নিয়ে ঘোরা গাড়িগুলিকে।
ব্যারেন আগ্নেয়গিরিতে গত ১৩ এবং ২০ সেপ্টেম্বর, আট দিনের মধ্যে দু’বার মৃদু মাত্রার উদ্গীরণ লক্ষ করা গিয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। বারটাং আগ্নেয়গিরিতে সাম্প্রতিক উদ্গীরণের জেরে তিন-চার মিটার উঁচু একটা কাদার ঢিপি তৈরি হয়ে তা ক্রমশ এক হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এখনও টানা বেরিয়ে আসছে কাদা এবং ধোঁয়া।
বারটাং দ্বীপটি জনবসতিহীন। এটি রয়েছে ইন্ডিয়ান ও বার্মিজ টেকটনিক প্লেটের উপরে। মোট এলাকা ৮.৩৪ বর্গ কিলোমিটার। এখানে সরকারি তথ্য অনুযায়ী প্রথম বার উদ্গীরণ লক্ষ করা যায় ১৭৮৭ সালে। তার পরে ১৯৯১, ২০০৫, ২০১৭ এবংসর্বশেষ ২০২২ সালের নভেম্বরে মৃদু উদ্গীরণ হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)