Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডোকলাম সঙ্কটে দৌত্যই পথ: সুষমা

ডোকলাম পরিস্থিতিকে সামনে রেখে আজ দুপুর থেকেই এত বিস্তারিত ভাবে মোদীর বিদেশনীতির ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন বিরোধী সাংসদেরা যে শেষ পর্যন্ত আলোচনায় সময়সীমা বাড়াতে বাধ্য হন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১৪
Share: Save:

ডোকলাম সঙ্কট-সহ বিদেশনীতির নানা দিক নিয়ে আজ সংসদে বিরোধীদের প্রবল আক্রমণের মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়ে দিলেন, যুদ্ধের প্রশ্নই নেই। শান্তির পথেই ডোকলাম সঙ্কটের সমাধান করা হবে।

বিদেশমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, কোনও সমস্যার সমাধানই যুদ্ধের মাধ্যমে হয় না। এমনকী যুদ্ধ হলেও জয়ী এবং পরাজিত আলোচনার টেবিলে বসে অন্তিম সমাধানের পথ বের করে। অনেকের মতে, প্রথমে যুদ্ধং দেহি মনোভাব দেখালেও মোদী সরকার শেষ পর্যন্ত কূটনীতির পথে ফিরেছে। সুষমা আজ সং‌সদে তাতেই সিলমোহর দিলেন। তবে চিন অবশ্য এ দিনও জানিয়ে দিয়েছে, ভারত সত্যি সত্যি শান্তি চাইলে ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। কূটনীতিকদের মতে, চিন ভারতকে অনেকটাই চাপে ফেলতে পেরেছে। তাই অজিত ডোভালের দৌত্যের সময়ে শান্তির চিত্রনাট্য তৈরির পরেও সুর চড়িয়েই রাখছে তারা।

ডোকলাম পরিস্থিতিকে সামনে রেখে আজ দুপুর থেকেই এত বিস্তারিত ভাবে মোদীর বিদেশনীতির ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন বিরোধী সাংসদেরা যে শেষ পর্যন্ত আলোচনায় সময়সীমা বাড়াতে বাধ্য হন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। মূলত তিন-চারটি বিষয় নিয়ে মুখর হন আনন্দ শর্মা, সীতারাম ইয়েচুরি, রামগোপাল যাদব, কানিমোজি, রাজীব শুক্ল, শরদ যাদব, সতীশ মিশ্রেরা। এক, প্রতিবেশী কূটনীতিতে ভারতের ক্রমশ একলা হয়ে যাওয়া। চিন এবং পাক নীতিতে ধারাবাহিকতার অভাব। দুই, ইজরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে গিয়ে প্যালেস্তাইনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি। তিন, বিদেশনীতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জওহরলাল নেহরুর নামোচ্চারণ না করা। চার, পুরনো মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে ফেলা।

আরও পড়ুন:যুদ্ধে সমাধান হবে না, কূটনৈতিক পথেই হবে, সংসদে বললেন সুষমা

আনন্দ শর্মা বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে মোদী ঠিক কোন পথে চলতে চাইছেন তা স্পষ্ট নয়। তৃণমূল সাংসদ মণীশ গুপ্তের দাবি, বিদেশি শত্রুভাবাপন্ন শক্তি শিলিগুড়ি করিডরের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে, অথচ সরকার গা করছে না।

প্রায় ৫০ মিনিটের বক্তৃতায় বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দেন বিদেশমন্ত্রী। বলেন, ‘‘যুদ্ধকে এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট কাটানো বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। এখন সামরিক ক্ষমতা দিয়ে নয়, অর্থনৈতিক ক্ষমতা দিয়ে যে কোনও দেশকে মাপা হয়।’’ চিনের বিনিয়োগই ভারতের আর্থিক ক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যতম বড় কারণ বলে জানিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘কূটনীতিতে উতলা হলে সমস্যার সমাধান হয় না। চিনের সঙ্গে আমাদের অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। দেখতে হবে তা যেন বিরোধে পরিণত না হয়।’’ ডোকলাম জট নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা না-বলে রাহুল গাঁধীর চিনা রাষ্ট্রদূতের কাছে যাওয়া নিয়ে তাঁকেও আজ প্রচ্ছন্ন খোঁচা দেন সুষমা।

পাকিস্তান প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করলে আগামিকালই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE