গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুরুপের তাস ছিল লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। সেই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পকে রাজ্য সরকার এ বার দিল্লির কর্তব্য পথে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে রাজ্যের ট্যাবলোতে হাজির করছে। রাজ্য সরকারের দাবি, এই ট্যাবলো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গের অগ্রগতি গোটা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরবে।
গত বছরই পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজ্যের ট্যাবলোতে তৃণমূলের আর এক রাজনৈতিক হাতিয়ার কন্যাশ্রী প্রকল্প তুলে ধরতে চেয়েছিল। কিন্তু মোদী সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তা খারিজ করে দেয়। ফলে গত বছরের কুচকাওয়াজে বাংলার ট্যাবলো ছিল না। তার সঙ্গে আম আদমি পার্টির দিল্লি ও পঞ্জাবের ট্যাবলো জায়গা না পাওয়ায় এর পিছনে রাজনীতির অভিযোগ ওঠে।
এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থিম ছিল, স্বর্ণিম ভারত - ঐতিহ্য ও উন্নয়ন। পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোর সামনেই থাকছে ছৌ নাচের সাজে সিংহবাহিনী দুর্গার মূর্তি। যা নারী শক্তির প্রতীক বলে রাজ্য সরকারের দাবি। এই দুর্গা মূর্তির সামনেই থাকছে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রতীক হিসেবে বিরাট মাপের কলস। যার গায়ে বড় অক্ষরে লক্ষ্মীর ভান্ডার লেখা থাকবে। রাজ্য সরকারের মতে, এই ভান্ডার হল নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক। গোটা ট্যাবলোর পিছনে ভাবনা হল মানুষের জীবনে ক্ষমতায়ন ও স্বনির্ভরতা।লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রাজ্য সরকার লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছিল। বিরোধীদের দুর্নীতির অস্ত্রকে ভোঁতা করতে এই কৌশল কাজ দিয়েছিল। তৃণমূলের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের দেখাদেখি মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, দিল্লির ভোটে বিজেপি, অ-বিজেপি দলগুলি একই ভাবে মহিলাদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার প্রকল্পকে হাতিয়ার করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোতে লোক প্রসার প্রকল্পকেও তুলে ধরা হয়েছে। ছৌ নৃত্যের সঙ্গে থাকছে বিষ্ণুপুরের স্থাপত্যকলা। যা রাজ্যের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরছে। রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, লোক প্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে লোক শিল্পীদের আর্থিক সাহায্য করছে। ঐতিহ্যকে রক্ষা করে উন্নয়নের রাস্তা তৈরি করছে। সেই কারণে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থিম মেনে ট্যাবলোতে লক্ষ্মীর ভান্ডার ও লোক প্রসার প্রকল্পকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)