বিচারপতি অমিতাভ রায়
বিচারপতিদের একজোট হয়ে থাকতে হবে। অবসরের আগে শেষ কাজের দিনে বার্তা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অমিতাভ রায়। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রবীণ বিচারপতিদের বিদ্রোহ এবং বিচারপতিদের মধ্যে সাম্প্রতিক বিবাদ নিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘‘আমরা বিচার বিভাগের ভাঙাচোরা মুখ দেখাতে পারি না। আমার প্রত্যেক সহকর্মীই দারুণ বিচারপতি। কিন্তু একজোট হয়ে থাকাটা জরুরি।’’
বিচারপতি রায় অবসর নেবেন আগামী ১ মার্চ। কিন্তু মাঝে হোলির ছুটি পড়ছে বলে আজই ছিল তাঁর কাজের শেষ দিন। সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ দিন বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ও অন্য প্রবীণ বিচারপতিদের সামনেই বিচারপতি রায় বলেন, ভাঙাচোরা চেহারা দেখালে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে। বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হলে বিচার বিভাগ কর্তৃত্ব হারাবে। মানুষের আস্থা চলে যাবে।
জয়ললিতার দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চ শশিকলাকে জেলে পাঠানোয় রায় দিয়েছিল, তার অন্যতম সদস্য ছিলেন বিচারপতি অমিতাভ রায়। সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন যে বেঞ্চ কাবেরী নদীর জল বন্টনের রায় দিয়েছে, তারও সদস্য ছিলেন তিনি। ওই মামলায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা এ দিন উল্লেখও করেন প্রধান বিচারপতি মিশ্র। এরই সঙ্গে খানিকটা হালকা সুরে বলেন, ‘‘একটি গোপন কথা জানাই। বিচারপতি রায় অভিধান খুবই ভালবাসেন। শব্দের জন্য ওঁর অনেক ভালবাসা।’’
কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন, ডিব্রুগড়ে জন্ম নেওয়া এই বাঙালি বিচারপতিকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু বেণুগোপালের হতাশা, ৬৫ বছর বয়সেই বিচারপতিদের অবসর নেওয়ার অর্থ ‘ট্যালেন্ট’ নষ্ট হওয়া। কেন্দ্রের এই বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখার সময় এসেছে।
কাজের শেষ দিনে বিচারপতি হিসেবে অমিতাভ রায় জানান, তিনি আসলে ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম বারে পাশ করতে না পারায় ভাগ্য বদলে যায়। সেই সঙ্গে তাঁর সরস মন্তব্য, ‘‘প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনেই এক জন নারী থাকেন, যিনি বলেন তোমার সবই ভুল। আমার স্ত্রী আমার পিছনে ছিলেন। আমার জন্য এত স্নেহ ও শ্রদ্ধা এ বার ম্যাডাম রায়ের সামনে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy