Advertisement
E-Paper

প্রবল মতানৈক্য, জিএসটি নিয়ে ‘নাছোড়’ দুই রাজ্যকে শেষে কী ভাবে রাজি করালেন নির্মলা? বৈঠকের নাটকীয় আড়াই ঘণ্টা

বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে জিএসটি কাউন্সিলের প্রথম বৈঠক হয়েছিল। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা চলে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। তার পরে জিএসটি ঘোষণা করা হয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:০৬
বুধবার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকের পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

বুধবার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকের পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।

বুধবার পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকের পরে নতুন জিএসটি কাঠামো ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। জিএসটি-তে রাখা হয়েছে কেবল দু’টি স্তর— ৫ এবং ১৮ শতাংশ। এর আগে ১২ এবং ২৮ শতাংশের আরও যে দু’টি স্তর প্রচলিত ছিল, তা তুলে দেওয়া হয়েছে। শুধু সিগারেট, পানমশলার মতো কিছু পণ্যে ৪০ শতাংশের বিশেষ কর ধার্য রয়েছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন জিএসটি ব্যবস্থা কার্যকর হবে দেশ জুড়ে। বুধবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা চলে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। তার পরে জিএসটি ঘোষণা করা হয়।

বাড়তি এই আড়াই ঘণ্টায় কী কী হয়েছিল জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে? বস্তুত, কেন্দ্রের এই দ্বিস্তরীয় জিএসটি ব্যবস্থায় প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলি। পশ্চিমবঙ্গ এর ব্যতিক্রম ছিল না। বিরোধী রাজ্যগুলির বক্তব্য ছিল, নতুন হারে জিএসটি কার্যকর করা হলে বিপুল রাজস্ব ঘাটতি হবে। কেন্দ্র থেকে তা পূরণের আশ্বাস প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি এ বিষয়ে একমত ছিল কেরল, কর্নাটক, পঞ্জাবের মতো রাজ্য।

একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, বৈঠকে জিএসটি নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় অনেকে পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আবার আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্মলা তাতে রাজি হননি। তিনি নতুন জিএসটি-তে প্রত্যেকের সম্মতি আদায়ের বিষয়ে অনড় ছিলেন। ফলে সন্ধ্যা ৭টার পরেও বৈঠক চলেছে। অর্থমন্ত্রী রাজ্যগুলিকে রাজস্বের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বার বার আশ্বাস দিয়েছেন। একটা সময়ের পরে পশ্চিমবঙ্গ এবং পঞ্জাব কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু ‘নাছোড়’ ছিল কর্নাটক এবং কেরল।

সূত্রের খবর, দীর্ঘ তর্কবিতর্কের পর ছত্তীসগঢ়ের অর্থমন্ত্রী ওপি চৌধরি একটি প্রস্তাব দেন। জিএসটি-র বিষয়ে ভোটাভুটির কথা বলেন তিনি। কিন্তু কোনও রাজ্যই ভোটাভুটিতে যেতে চায়নি। যে হেতু নতুন জিএসটি ব্যবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমছে, ভোটাভুটিতে তার বিরোধিতা করা হলে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারত। সূত্রের খবর, এর পর বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে পশ্চিমবঙ্গ। কর্নাটক এবং কেরলকে নতুন জিএসটি-তে রাজি করায় তারাই। তার পরে জিএসটি-র নতুন কাঠামোটি ঘোষণা করেন নির্মলা। তিনি রাজ্যগুলিকে আশ্বাস দিয়েছেন, কারও প্রতি অবিচার করা হবে না। সকলকে সমান চোখে দেখা হবে।

নতুন জিএসটি ব্যবস্থা চালু করার জন্য গত ছ’মাস ধরে প্রস্তুত হয়েছে কেন্দ্র। স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লা থেকে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম জিএসটি সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, দীপাবলির আগেই মানুষ ‘উপহার’ পাবেন। নতুন জিএসটি-র মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেকটা কমতে চলেছে। স্বাস্থ্যবীমা এবং যে কোনও জীবনবীমার উপর থেকে জিএসটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘ দিন ধরে এই দাবি জানিয়ে এসেছেন।

GST Nirmala Sitharaman New GST Slab GST Council Meeting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy