কয়েক সপ্তাহ তদন্ত চালানোর পর অবশেষে ‘রহস্যভেদ’ হল মহারাষ্ট্রের বুলঢানার ঘটনার। এই জেলার বাসিন্দাদের আচমকাই চুল পড়ে টাক বেরিয়ে আসছিল। সেই তালিকায় যেমন শিশুরাও ছিল, তেমন বয়স্কেরাও রয়েছেন। চুল পড়ে টাক হয়ে যাওয়ার ঘটনায় হুলস্থুল পড়ে যায় গোটা জেলায়। এর নেপথ্যে কোন কারণ, তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়। কিন্তু কিছুতেই রহস্যভেদ হচ্ছিল না। কয়েক সপ্তাহ ধরে এর কারণ খোঁজার পর অবশেষে সম্ভাব্য কারণ প্রকাশ্যে এসেছে।
পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত চিকিৎসক হিমন্তরাও বাওয়াস্করের দাবি, এই ধরনের ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে গমে থাকা রাসায়নিক। রেশন থেকে যে গম সরবরাহ করা হয়েছিল, সেই গমে উচ্চমাত্রায় সেলেনিয়াম মিলেছে। আর এই গম খাওয়ার পরই তিন চার দিনের মধ্যেই দ্রুত চুল পড়ে যেতে শুরু করে ১৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের। সেই তালিকায় ৮ বছরের শিশুও যেমন ছিল, তেমনই ৭২ বছর বয়সি মানুষও রয়েছেন।
চিকিৎসক বাওয়াস্কারের দাবি, ঠাণের একটি গবেষণাগারে সেই গম পরীক্ষা করানো হয়। তাতে জানা গিয়েছে, গমে উচ্চমাত্রায় সেলেনিয়াম ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বুলঢানার গ্রামগুলি মূলত রেশন থেকে প্রাপ্ত চাল এবং গমের উপর নির্ভরশীল। গ্রামগুলিতে সরবরাহ করা গম পরীক্ষা করে দেখা হয়। তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে এখন চুল পড়া বন্ধ হয়েছে।’’
গত বছরের ডিসেম্বরের ঘটনা। আচমকাই বুলঢানার ১৮টি গ্রামের বাচ্চা থেকে বুড়ো— সকলেরই চুল পড়ে যেতে শুরু করে। রাতারাতি অনেকেরই চুল পড়ে টাক হয়ে যায়। অনেকে পুরোপুরি কেশশূন্য হয়ে যায়। সেই তালিকায় পুরুষ, মহিল-সহ প্রায় ৩০০ জনের চুল পড়ে যায়। যদিও এই সমীক্ষার বিষয়ে সরকারি তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আইসিএমআর-এর একদল বিজ্ঞানী এই রহস্যের অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। তাঁরা মাটি, জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তাতে উচ্চমাত্রায় সেলেনিয়াম মিলেছে। তবে গমের কারণেই যে এই ঘটনা, সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তাঁরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।