Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

হদিশ পাচ্ছে না তিন রাজ্যের পুলিশ, কারনানকে নিয়ে এজলাসেও নাটক

তিন রাজ্যের পুলিশ মিলে খুঁজছে এক বিচারপতিকে। হদিস পায়নি। ঘনিষ্ঠদের কেউ কেউ বলছেন, হয়তো দেশই ছেড়েছেন তিনি। অথচ সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী দাবি করছেন, তিনি চেন্নাইয়েই রয়েছেন— কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

তিন রাজ্যের পুলিশ মিলে খুঁজছে এক বিচারপতিকে। হদিস পায়নি। ঘনিষ্ঠদের কেউ কেউ বলছেন, হয়তো দেশই ছেড়েছেন তিনি। অথচ সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী দাবি করছেন, তিনি চেন্নাইয়েই রয়েছেন— কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান।

আদালত অবমাননায় সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার পরেও নাটকের অভাব নেই বিচারপতি কারনানকে ঘিরে। আজ নাটক দেশের প্রধান বিচারপতির এজলাসেও। তিন তালাক মামলার প্রথম দিনের শুনানি সবে শেষ হয়েছে তখন। চিৎকার করতে করতে প্রবেশ এক আইনজীবীর। জানালেন, তাঁর নাম ম্যাথিউজ জে নেদুমপারা। তিনি বিচারপতি কারনানের আইনজীবী।

ম্যাথিউজের দাবি, কারাদণ্ডের নির্দেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানাতে এসেছেন তিনি। অথচ গোটা সুপ্রিম কোর্টে গোটা ত্রিশেক জায়গা ঘুরেও কোথাও সেই আর্জি দায়ের করতে পারেননি। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর তখন বলেন, ম্যাথিউজ যে ওঁর আইনজীবী, তার প্রমাণ কী? ম্যাথিউজ ওকালতনামা দেখান। প্রধান বিচারপতি বলেন, ওঁকে (কারনান) তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ওকালতনামায় সই করলেন কী করে? আইনজীবী বলেন, গত রাতে চেন্নাইয়ে ছিলেন বিচারপতি কারনান। সেখানেই সই করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, আবেদন শোনা হবে। আর্জি নথিভুক্ত করা হোক।

আরও পড়ুন:তিন তালাক শুনানি শুরু

ঘটনা হল, কারনান এখন কোথায় বা কাল কোথায় ছিলেন— সব নিয়েই পরস্পরবিরোধী খবর ভাসছে। তাঁকে গ্রেফতার করতে কলকাতা পুলিশের দল গিয়েছে চেন্নাইয়ে। একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে চেন্নাইয়ের চিপক গেস্ট হাউসে ছিলেন বিচারপতি। গত কাল সকালে চেন্নাই পুলিশ জানতে পারে, অন্ধ্রের মন্দির-শহর কালাহস্তির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। সূত্রটির দাবি, তখন বিচারপতির মোবাইলের টাওয়ারে নজর রাখা শুরু হয়। কিন্তু শেষে দেখা যায়, অন্ধ্রে পৌঁছেছে শুধু তাঁর মোবাইলটি। বিচারপতি বেপাত্তা। অন্য একটি সূত্রের আবার দাবি, বিচারপতি কারনানের ফোন বন্ধই রয়েছে। তবে এ কথা ঠিক, পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখেও তাঁকে ছুঁতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রের পুলিশ।

আজ আবার বিচারপতি কারনানের ঘনিষ্ঠ আইনজীবী ডব্লিউ পিটার রমেশ কুমার দাবি করেন, সম্ভবত সড়কপথে নেপাল কিংবা বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি তাঁকে সাক্ষাতের সময় দিলে তবেই ফিরতে পারেন বিচারপতি। যদিও ম্যাথিউজ অভিযোগ করেন, ‘‘বিভ্রান্তিকর খবর ছড়ানো হচ্ছে। বিচারপতি কারনানের উপরে সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে। তিনি আইনি পথেই যা করার করছেন।’’

যদিও প্রশ্ন উঠছে, কলেজিয়াম যাঁকে নিয়োগ করেছিল, তাঁকেই জেলে পাঠাতে চেয়ে কী বার্তা দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট? আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহের মতো কারও কারও যেমন মত, সুপ্রিম কোর্ট চাইলে বিচারপতির ইমপিচমেন্টের জন্য সংসদকে আর্জি জানাতে পারত। কিন্তু কোনও বিচারপতির বিচারের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা সংবিধানে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CS Karnan Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE