পঞ্চপাণ্ডব!
এক জন মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে আশাতীত জয় এনে দিয়েছিলেন। এ বার তিনি পশ্চিমবঙ্গে পদ্মফুল ফোটানোর লক্ষ্যে নেমেছেন। অন্য চার জন বিজেপির হয়ে বিহারে এনডিএ-র জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
প্রথম জন ভূপেন্দ্র যাদব। বিহারে বিজেপির জয়ে ছাপ রেখে যাওয়া বাকি চার জন হলেন ধর্মেন্দ্র প্রধান, বিনোদ তাওড়ে, সি আর পাটিল এবং কেশবপ্রসাদ মৌর্য। যাঁরা অমিত শাহের নেতৃত্বে শুধু এনডিএ-র জয় ছিনিয়ে আনেননি, বিহারে বিজেপির আসন ও ভোটের হার বাড়াতেও সফল হয়েছেন।
বিজেপির এই ‘পঞ্চপাণ্ডব’-এর সাফল্যের পরে দলের অন্দরমহলে জল্পনা, নতুন প্রজন্মের এই পাঁচ জনের মধ্যেই কেউ একজন বিজেপির পরবর্তী জাতীয় সভাপতি হতে চলেছেন। কারণ আরএসএস-ও বিজেপির জাতীয় সভাপতি পদে নতুন প্রজন্মের কাউকে চাইছে।
ভূপেন্দ্র যাদব মহারাষ্ট্র নির্বাচনের পাঁচ মাস আগে ভোট পরিচালনায় দায়িত্ব নিয়ে বুথ স্তরে জয়ের উপরে জোর দিয়েছিলেন। তাঁর নীতিই ছিল, নির্বাচনী বুথ জয় থেকে বিধানসভা ভোট জয়। এ বার পশ্চিমবঙ্গে গিয়েও রাজ্যের বিজেপি নেতাদের কোন কোন বুথে দলের জেতার সম্ভাবনা প্রবল, তা চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী সরকারের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব।
ভূপেন্দ্র মতোই ওবিসি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধানকে বিজেপি বিহারের নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এর আগে হরিয়ানায় বিজেপির ভোট জয়ের কান্ডারি ছিলেন। হরিয়ানায় বিজেপির হারা ম্যাচ জেতার পরে তাঁকে বিহারে ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিহারের বিজেপি নেতারা বলছেন, আড়ালে থেকে আসন বণ্টনের জটিলতা মেটানো, জোটের বিরোধ দূর করা, প্রার্থীদের সমস্যা মেটানোর মতো কাজ করেছেন ধর্মেন্দ্র। তাঁর সঙ্গে বিহারের সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলেন বিনোদ তাওড়ে। সংগঠনের ফাঁকফোকর মেরামতের পাশাপাশি ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে প্রচারের ভাষ্যও তৈরি করার কাজ করেছেন তিনি। বিহারের সামাজিক সমীকরণ মেনে রণকৌশল তৈরি করেছেন।
ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে বিহারের নির্বাচন পরিচালনার সহ-দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল গুজরাতের পোড়খাওয়া নেতা সি আর পাটিল ও উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যকে। বাকিদের তুলনায় প্রবীণ কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাটিলের হাতে বিহারের ৭৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব ছিল। তিনি বিহারে কাজ করার জন্য গুজরাত থেকে শ’দুয়েক বিজেপি কর্মীকে বিহারে নিয়ে গিয়েছিলেন। বেগুসরাইয়ের মতো জেলায় পাটিলের ‘মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট’ পদ্ম ফোটাতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে বলে বিহারের বিজেপি নেতাদের দাবি। উত্তরপ্রদেশের নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্য অনগ্রসর ও অতি অনগ্রসরদের এনডিএ-র ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে এককাট্টা করতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিজেপির আসন সংখ্যা বাড়ানোর রণনীতিতেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বিহার জয়ের পরে মৌর্য ‘মগধের পরে অবধ’ জয়ের হুঙ্কার দিয়েছেন।
বিজেপি শিবিরে একটাই প্রশ্ন, জে পি নড্ডার উত্তরসূরি হিসেবে বিজেপি সভাপতি পদে এই পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে কাকে দেখা যাবে? আর সেই সিদ্ধান্ত নিতেই বা কত দেরি হবে?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)