Advertisement
E-Paper

রাজনীতির হেঁশেলে রাতজাগা প্রিয়ঙ্কা

উত্তরপ্রদেশে মায়া-অখিলেশের সঙ্গে বিজেপিরও অঙ্ক গুলিয়ে দিতে সঙ্গে নিয়ে এলেন ‘মহান দল’-এর নেতা কেশব দেব মৌর্যকে। কুর্মি সম্প্রদায়ে যাঁর দখল আছে।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৩
প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।—ছবি পিটিআই।

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।—ছবি পিটিআই।

অঘোর ঘুমে নবাবের শহর। তারই মধ্যে রাত জাগছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।

দুপুরে একমুঠো ডাল-ভাত খেয়েছেন। তার পর কিছু মুখেও তোলেননি। একের পর এক কেন্দ্র ধরে শয়ে-শয়ে কর্মীর সঙ্গে দেখা করে চলেছেন নিরন্তর। চোখেমুখে ক্লান্তির লেশমাত্র নেই। দশ ঘণ্টা, এগারো ঘণ্টা, বারো, তেরো, চোদ্দো…। ‘‘মোদী নাকি দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন? কেউ দেখেছেন আজ পর্যন্ত?’’ বলাবলি করছেন কংগ্রেস নেতারা।

পাখিরা যখন ভোরের সফর শুরু করল, প্রিয়ঙ্কা নামলেন নেহরু ভবনের দোতলা থেকে। ততক্ষণে ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। নেমেই প্রথম ‘নীরবতা’ ভাঙলেন। বললেন, ‘‘শিখছি সংগঠনের ব্যাপারে। কী ভাবে তৈরি হতে হবে, কী বদল দরকার, জেতার জন্য কী করতে হবে।’’ জবাব এড়ালেন না রবার্ট বঢরাকে জেরা নিয়েও: ‘‘ওরা ওদের কাজ করবে, আমার কাজ চলতে থাকবে।’’ আজও রবার্টকে ৯ ঘণ্টা জেরা করেছে ইডি।

এটা ছিল ট্রেলার। ধাপে ধাপে ঝাঁঝ বাড়ালেন সনিয়া-কন্যা। আজ উত্তরপ্রদেশে মায়া-অখিলেশের সঙ্গে বিজেপিরও অঙ্ক গুলিয়ে দিতে সঙ্গে নিয়ে এলেন ‘মহান দল’-এর নেতা কেশব দেব মৌর্যকে। কুর্মি সম্প্রদায়ে যাঁর দখল আছে। প্রিয়ঙ্কা ঘোষণা করলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে ভোটে লড়বেন মৌর্য। রাহুলজি আমাদের লক্ষ্য ঠিক করেছেন, এমন রাজনীতি করতে হবে সব বর্গ, সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব থাকে। সে দিকে তাকিয়েই এই চেষ্টা।’’ এসপি-বিএসপিকে তুলোধনা করে মৌর্যও বললেন, কংগ্রেসই পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নয়ন করেছে, বাকিরা ফায়দা লুটেছে।

কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, রাহুল লোকসভা ভোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ, প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর। সেই ঘুঁটি সাজিয়েই এগোচ্ছেন ভাই-বোন। যে কর্মীরা দেখা করতে আসছেন, আগেই তাঁদের জাতি-উপজাতি লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তা নিয়ে বিরোধীরা যতই বিতর্ক বাধাক, উত্তরপ্রদেশের মতো জাত-পাতের সমীকরণে চলা রাজ্যে জেলাওয়াড়ি সফরের আগে খুঁটিনাটি হিসেব কষছেন প্রিয়ঙ্কা। বিভিন্ন শ্রেণির জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও খুলে দিয়েছেন। কৃষকদের গ্রুপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘চৌপাল’। পরামর্শটা প্রিয়ঙ্কার মগজে পুরেছেন রাহুলই। বিধানসভা ভোটের সময় উত্তরপ্রদেশেই চৌপাল বসাতেন কংগ্রেস সভাপতি।

রাজ্যে সংগঠন দুর্বল কংগ্রেসের। কর্মীরা এসে নালিশ জানাচ্ছেন নানা রকম। প্রিয়ঙ্কা তাঁদের বলছেন, ‘‘বাইশ বছর সংসারে হেঁশেল সামলেছি। কী করে ভাল জিনিসটুকু ছেঁকে নিতে হয় জানি।’’ ভোর তখন সাড়ে পাঁচটা। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে এলেন দলের নেতা অজয় সিংহ। বললেন, “ইন্দিরা গাঁধী কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতেন। রাহুলও তা-ই করছেন। আর এখন প্রিয়ঙ্কা নিজে সারারাত বসে দলের দফতরে। আকাশের তারা দেখছেন? আমাদের মনোবল এখন আকাশছোঁয়া।”

Priyanka Gandhi Congress Uttar Pradesh Congress Lok Sabha Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy