সাধারণত গ্রীষ্মকালে কলকাতায় পানীয় জলের সঙ্কটের কথা শোনা যায়। কিন্তু ডিসেম্বরে শীতের মরসুমে পানীয় জলের অভাবের অভিযোগ শুনতে হল কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক নিজের ওয়ার্ডে থাকা বিস্তীর্ণ অফিসপাড়ায় জলসঙ্কটের কথা জানিয়ে সরব হন। লিখিত ভাবে জমা দেওয়া ওই প্রশ্নে কাউন্সিলর সন্তোষ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা পুরসভার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি যে, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের চিনা বাজার, ব্র্যাবোর্ন রোড, বনফিল্ড লেন, সায়নাগো স্ট্রিট, চুরা মার্কেট প্রভৃতি অঞ্চলে খাওয়ার জলের প্রেশার দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। এর ফলে শুধুমাত্র ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই নন, যাঁরা প্রতিদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের জীবিকা অর্জনের জন্য ওই এলাকায় চাকরি করতে আসেন, তাঁরাও অসুবিধায় পড়ছেন।’’ অর্থাৎ এটি একটি বৃহত্তর সমস্যা বলে উল্লেখ করেন ওই কংগ্রেস কাউন্সিলর।
আরও পড়ুন:
তাঁর প্রশ্নে আরও বলা হয়, ‘‘কবে এই সব অঞ্চলে পানীয় জলের লাইনের মেরামতি হবে? কতদিন লাগবে এই সমস্যার সমাধান করতে?’’ জবাবেব মেয়র বলেন, ‘‘ওই এলাকায় দিনের পর দিন জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন অফিস তৈরি হয়েছে। তাই ওই সব এলাকায় জলের চাহিদা বেড়েছে। ব্র্যাবোর্ন রোডের দিক দিয়ে ওই এলাকাগুলিতে যে জলের জোগান পৌঁছোয়, তা এখন পর্যাপ্ত হচ্ছে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘টেরিটি বাজারের দিক থেকে আরও একটি জলের লাইন এনে ওই এলাকায় জলের জোগান বাড়ানো হবে। আগামী জানুয়ারি মাসে এই নতুন পদ্ধতিতে জল দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ মেয়র আশাপ্রকাশ করেন, নতুন এই পথ দিয়ে ওই এলাকায় পানীয় জল পৌঁছোলে সাধারণ মানুষের চাহিদা অনেকটাই মেটানো সম্ভব হবে।
ঘটনাচক্রে, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওই বিস্তীর্ণ অফিসপাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে বহু সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দফতর। মহাকরণ, নব মহাকরণের পাশাপাশি, রাজভবন বর্তমানে লোকভবন, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা, কলকাতা হাইকোর্ট, ব্যাঙ্কশাল কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলি রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে আসেন। তাই স্বাভাবিক কারণেই ওই এলাকায় পানীয় জলের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে এই সব এলাকায় পানীয় জলের চাহিদা একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যায়। কলকাতা পুরসভার পানীয় জল বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, টেরিটি বাজার থেকে নতুন ওই লাইনটি জল সরবরাহ শুরু করলে আগামী গ্রীষ্মকালে পানীয় জলের সঙ্কট ওই সব এলাকায় আর থাকবে না।