Advertisement
০২ মে ২০২৪
COVID-19

ডিসেম্বর এলেই করোনার হানা বাড়ে কেন? দেশে কোভিডের নতুন উপরূপের বাড়বাড়ন্তে ফের আতঙ্ক

ওমিক্রনের এই নতুন উপরূপে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু উপসর্গ বেশ সাধারণ। যেমন, হালকা জ্বর হচ্ছে। গলাব্যথা, সর্দির সঙ্গে মাথাধরা রয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৭
Share: Save:

চার বছর আগে সেটাও ছিল ডিসেম্বর মাস। বড়দিনের আনন্দ এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সময়ে সারা বিশ্ব কেঁপে উঠেছিল এক ভাইরাসের তাণ্ডবে— করোনা। অতিমারি শেষ হয়েছে। কিন্তু চার বছর পর আবার ডিসেম্বর মাসেই তার বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। করোনার নতুন নতুন উপরূপের জন্য আবারও ত্রস্ত বিভিন্ন দেশ। এ বারের ডিসেম্বরে ওমিক্রনের উপরূপ দুনিয়া ‘কাঁপাচ্ছে’ তার নাম জেএন.১। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) একে বলছে, ‘‘ভ্যারিয়ান্ট অফ ইন্টারেস্ট।’’

আশার কথা, মানবশরীরে তুলনামূলক ভাবে এই উপরূপের প্রভাব অতটা ক্ষতিকর নয়। কিন্তু কেন ডিসেম্বরেই ঘুরেফিরে বাড়বাড়ন্ত হয় করোনার? কেন ফি বছর শেষের দিকেই ভাইরাস ভয় ঘুরেফিরে আসছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল কারণ হল শীত। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঠান্ডা এবং শুষ্ক পরিবেশে কোভিড-১৯ ছড়ায় বেশি। যেটা নতুন উপরূপ জেএন.১- এর ক্ষেত্রেও সত্যি। শীতের মরসুমে এই উপরূপ দ্রুত ছড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে ভারত, চিন, আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডে প্রচুর মানুষ জেএন.১-এ আক্রান্ত হচ্ছেন। যখন করোনাকে অতিমারি ঘোষণা করা হয়, সেই সময়ও সংক্রমণের বৃদ্ধি এবং হ্রাসের বড় কারণ হিসাবে আবহাওয়াকে দায়ী করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনার দ্বিতীয় বার বাড়বাড়ন্তের সময় উত্তর গোলার্ধের দেশগুলি বেশি প্রভাবিত হচ্ছে। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের তুলনায় শীতপ্রধান জায়গায় করোনার উৎপাত তীব্র। বস্তুত, যতই আমরা গ্রীষ্ম থেকে শীতের দিকে এগোই, যতই তাপমাত্রা কমে এবং বাতাস শুষ্ক হয়, করোনা সংক্রমিতের সংখ্যাও তত বৃদ্ধি পায়। ডিসেম্বরে যে হেতু ঠান্ডা সর্বত্রই বেশি হয়, এই সময়ে করোনাও বেশি ছড়াচ্ছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

বস্তুত, শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণকারী অন্যান্য ভাইরাসের মতো কোভিড-১৯-এরও মরসুমি ধাঁচ আছে। এক একটি আবহাওয়ায় এদের সংক্রমণ এক এক রকম হয়। আর একটি বিষয় হল, এই ভাইরাস ছড়ানোর সঙ্গে তার নতুন নতুন উপরূপ তৈরি হয়। এই নতুন উপরূপের সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ‘পরিচয়’ও নতুন বলে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ডিসেম্বরে করোনা ছড়ানোর আরও একটা বড় কারণ হল এটা ছুটির সময়। বড়দিন, নতুন বছরকে সামনে রেখে বহু দেশ উৎসবে মেতে ওঠে। বেড়াতে যান প্রচুর মানুষ। তাই ভিড়ের মধ্যে করোনা ছড়াতে পারে সহজেই।

ওমিক্রনের এই নতুন উপরূপে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু উপসর্গ বেশ সাধারণ। যেমন, হালকা জ্বর হচ্ছে। গলাব্যথা, সর্দি এবং মাথাধরা রয়েছে। বয়স্ক মানুষ এবং যাঁদের সিওপিডি-র সমস্যা রয়েছে, তাঁদের বিশেষ ভাবে সতর্ক এবং সাবধান থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর জন্য ভয় পাওয়ার কারণ নেই। ইন্ডিয়া-সার্স-সিওভি২ জিনোমিক কনসর্টিয়ামের প্রধান এনকে অরোরা জানিয়েছেন, এর জন্য নতুন করে টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, নতুন করে দেশে সোমবার কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৬২৮ জন। গত দিনের তুলনায় একটু হলেও কমেছে সংক্রমিতের সংখ্যা। রবিবার দেশে নতুন করে আক্রান্ত হন ৭৫২ জন। দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪,০৫৪। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গিয়েছেন এক জন। তিনি কেরলের বাসিন্দা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Covid 19 India Omicron
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE