E-Paper

দেশে ফেরার পরেই মোদীকে ট্রাম্প-খোঁচা বিরোধী নেতাদের

কংগ্রেস-সহ সব বিরোধী দলেরই প্রশ্ন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যে ১১ বার বলে ফেলেছেন যে তিনি চাপ দিয়ে ভারত-পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছেন। তার পরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চুপ কেন?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫ ০৯:০৩
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

বিদেশের মাটিতে বিরোধী সাংসদরা মোদী সরকারের পাশে থেকে এক সুরে পাকিস্তানকে নিশানা করেছিলেন। সন্ত্রাসের মোকাবিলায় ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা তৈরি হয়েছিল, পহেলগামের সন্ত্রাসবাদী হামলা বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংঘর্ষবরতির ঘোষণা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের তির অনেকটাই ভোঁতা হয়ে যাবে। কিন্তু সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলে বিরোধী নেতানেত্রীরা দেশে ফিরতেই মোদী সরকারকে লক্ষ্য করে প্রশ্নের তির ছুড়তে শুরু করলেন।

কংগ্রেস-সহ সব বিরোধী দলেরই প্রশ্ন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যে ১১ বার বলে ফেলেছেন যে তিনি চাপ দিয়ে ভারত-পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছেন। তার পরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চুপ কেন?

রাহুল গান্ধী গত তিন দিন ধরে লাগাতার ‘নরেন্দ্র কেন সারেন্ডার করলেন’ প্রশ্ন তুলে সরব। আজ বিহারের রাজগীরে সংবিধান সুরক্ষা সম্মেলনে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘ট্রাম্প সাহেব ১১ বার প্রকাশ্যে বলেছেন যে তিনি নরেন্দ্র মোদীকে সারেন্ডার বা আত্মসমর্পণ করিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী টুঁ শব্দও করতে পারছেন না। এই টুকুও বলতে পারছেন না যে ট্রাম্প মিথ্যে বলছেন। কারণ, ওটাই সত্যি।’’ রাহুলের অভিযোগের জবাবে বিজেপি নেতারা বলছেন, কংগ্রেসের শশী তারুর, মণীশ তিওয়ারিরা ভারতের হয়ে বিদেশে সরব হয়েছেন। অথচ রাহুল দেশে বসে পাকিস্তানের ভাষায় কথা বলছেন। কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে আজ পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘সব দলের প্রতিনিধিরা ভারতের দূত হয়ে গেলেও মোদীর বিদেশনীতি ব্যর্থ। বিদেশ মন্ত্রক এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিদেশের কোনও রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারেনি। তা হলে এই সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে লাভ কী হল?” তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ১১ বছরে ৯০টি দেশে গিয়েছেন। একটা দেশও পহলগামের পরে পাকিস্তানের নিন্দা করেনি।’’

এমআইএম দলের প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে বিদেশ সফর সেরে দেশে ফিরেছেন। বিদেশে ভারতের সরকারি অবস্থানের পক্ষে গলা ফাটালেও দেশে ফিরেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও তার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর করা উচিত ছিল। সেই ঘোষণা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন করলেন?”

সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ জন ব্রিটাসও সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে একাধিক দেশ ঘুরে ফিরেছেন। তিনি এবং তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একই দলে ছিলেন। দু’জনেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব। কিন্তু আজ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবী অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘বিরোধীরা সরকারের পাশে থাকলেও সরকার বিরোধীদের দাবি মেনে সংসদের বিশেষঅধিবেশন ডাকেনি। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ব্যাখ্যা দিতে হবে, কী ভাবে সংঘর্ষবিরতি হল? উনি এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেনি।’’ মোদী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে গেলেও তাতে বিরোধীরা বাড়তি কোনও কৃতিত্ব দেখছেন না। সন্ত্রাসে মদতের প্রশ্নে পাকিস্তানের ভূমিকা তুলে ধরার ক্ষেত্রে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিশ্ব-দরবারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা অনেক তীক্ষ্ণ। আমরাই প্রথম পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছি। প্রধানমন্ত্রী নতুন আর কী বলছেন!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PM Narendra Modi Operation Sindoor India-Pakistan ceasefire

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy