অনেক কষ্টে হাত বাড়িয়ে প্রিয় মানুষটিকে শেষ এক বার ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করলেন সন্দীপ কউর। হাসপাতালে সঙ্কটজনক অবস্থায় ভর্তি। তাঁর শয্যার পাশে নিয়ে আসা হল আদ্যোপান্ত সাদা কাপড়ে ঢাকা নভজ্যোত সিংহের মরদেহকে। মুখের কাছটায় কাপড়টা সরানো। যাতে তাঁকে শেষ বারের মতো প্রিয়জনেরা দেখে নেন। তবে যে ছবি অনেকের হৃদয়ে মোচড় দেবে, তেমনই একটি দৃশ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
গত রবিবার দিল্লির ধৌলা কুয়াঁয় এক বিএমডব্লিউ-এর ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে অর্থ মন্ত্রকের উপসচিব নভজ্যোতের। তাঁর স্ত্রী সন্দীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার পর একই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল নভজ্যোত এবং সন্দীপকে। নভজ্যোতের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর নভজ্যোতের মরদেহ নিয়ে আসা হয় তাঁর স্ত্রী সন্দীপের কাছে। প্রায় অচৈতন্য সন্দীপ দেখলেন তাঁর চারপাশে অনেক চেনা মুখের ভিড়। তাঁর শয্যার পাশে একটি স্ট্রেচার। সেই স্ট্রেচারে শোয়ানো নভজ্যোতের মরদেহ। স্বামীর মরদেহ সন্দীপের খুব কাছে আনা হল। অনেক কষ্টে ডান হাতটা তুলে এক বার নভজ্যোতের মুখে হাত বোলালেন সন্দীপ। শেষবারের মতো প্রিয় মানুষটিকে ছুঁয়ে দেখলেন। কাঁদার মতো অবস্থা নেই তাঁর। শুধু চোখের কোনা বেয়ে অঝোরে নিঃশব্দে জল গড়িয়ে পড়ল। আত্মীয়-পরিজনেরা দেখলেন। তাঁরাও এই দৃশ্যে নিজেদের কান্না সামলাতে পারলেন না।
বেশি ক্ষণ নয়। অল্প সময়ের জন্য নভজ্যোতকে সন্দীপের কাছে রাখা হয়েছিল। তার পরই শেষকৃত্যের জন্য তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। কে জানত, রবিবারই তাঁদের জীবনে নেমে আসবে অন্ধকার। এক জন চিরতরে বিদায় নেবেন! গত ৪৮ ঘণ্টায় দিল্লির সিংহ পরিবারের ছবিটাই পুরো বদলে গিয়েছে। রবিবার স্ত্রী সন্দীপকে নিয়ে বাইকে করে সেন্ট্রাল দিল্লির বাংলা সাহিব গুরুদ্বারে গিয়েছিলেন নভজ্যোত। সেখান থেকে আরকে পুরমে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তার পর প্রতাপনগরে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। সেই সময় ধৌলা কুয়াঁর কাছে একটি বিএমডব্লিউ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নভজ্যোতের বাইকে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন নভজ্যোত এবং তাঁর স্ত্রী। গুরুতর জখম হন দু’জনেই। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয় নভজ্যোতের। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন গাড়িচালক গগনপ্রীত।