E-Paper

সংসদ চত্বরে সংস্কারের জেরে কি সরবে দেশনেতাদের মূর্তি

একশো বছর ছুঁই ছুঁই পুরনো সংসদ ভবনের পাশেই এখন ৬৪ হাজার ৫০০ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে নতুন সংসদ ভবন তৈরি হয়েছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪ ০৫:৫৭
parliament

নতুন ও পুরনো সংসদ ভবনের মাঝের অংশ। — ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন সরকার। নতুন লোকসভা গঠন হবে। জুলাই মাসে শুরু হবে সংসদের নতুন অধিবেশন। তার আগেই সংসদ চত্বরের ভোল পাল্টে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নতুন সংসদ ভবন, পুরনো সংসদ ভবন (যার পোশাকি নাম এখন সংবিধান ভবন), সংসদ ভবন অ্যানেক্স, (যার নাম সংসদীয় সৌধ) এবং সংসদীয় জ্ঞানপীঠ বা গ্রন্থাগার ভবনকে একই সীমানার মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। মূলত নিরাপত্তা ও মন্ত্রী-সাংসদদের যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবে এই কাজ শুরু হলেও এর জন্য সংসদ চত্বরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা যাবতীয় মূর্তি সরিয়ে একসঙ্গে রাখার কথা পরিকল্পনা হচ্ছে।

একশো বছর ছুঁই ছুঁই পুরনো সংসদ ভবনের পাশেই এখন ৬৪ হাজার ৫০০ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে নতুন সংসদ ভবন তৈরি হয়েছে। নতুন সংসদ ভবনেই এখন লোকসভা, রাজ্যসভার অধিবেশন বসছে। পুরনো সংসদ ভবনের নাম রাখা হয়েছে সংবিধান ভবন। কিন্তু সেখানেও অনেক সরকারি দফতর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংসদীয় দফতর রয়ে গিয়েছে।

এই দুই ভবনের পাশেই কিছুটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো রয়েছে সংসদীয় সৌধ বা পার্লামেন্ট হাউস অ্যানেক্স। যেখানে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির বৈঠক হয়। সেখান থেকে পুরনো বা নতুন সংসদ ভবনের দিকে যেতে পড়ে লাইব্রেরি বিল্ডিং বা সংসদীয় জ্ঞানপীঠ। পুরনো সংসদ ভবনের এক-এক দিকের সীমানা প্রাকার এক রকম ভাবে তৈরি। নতুন সংসদ ভবনের সীমানা প্রাকার আবার আর এক রকম ভাবে তৈরি। এদের পাশে অ্যানেক্সি ভবনের দেওয়াল ঢুকে পড়েছে। ফলে একই চত্বরে হলেও প্রাকারে সামঞ্জস্য থাকছে না। সূত্রের খবর, এ বার এই সমস্ত ভবনকে এক চত্বরের মধ্যে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। যাতে এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যেতে কোনও সমস্যা না হয়। সংসদ-চত্বরকে গাড়ি-মুক্ত ঘোষণা করে দিয়ে ভবিষ্যতে শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত গাড়ির মাধ্যমে সাংসদ-মন্ত্রীদের যাতায়াতের ভাবনাচিন্তাও রয়েছে।

সমস্যা বেঁধেছে অন্যত্র। পুরনো সংসদ ভবন ও অ্যানেক্স ভবনের মাঝে রয়েছে বাবাসাহেব অম্বেডকরের মূর্তি। পুরনো সংসদ ভবনের সামনের দিকে রয়েছে ছত্রপতি শিবাজির ঘোড়ায় চড়া বিরাট মূর্তি। জ্যোতিরাও ফুলের মূর্তিও রয়েছে। সর্বোপরি, পুরনো ও নতুন সংসদ ভবনের মাঝে রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর ধ্যানমুদ্রায় বসে থাকা মূর্তি। যার সামনেই সাংসদেরা ধর্না, বিক্ষোভে বসেন। সূত্রের খবর, যাবতীয় মূর্তি একসঙ্গে পুরনো সংসদ ভবনের পিছন দিকে সরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অম্বেডকর মূর্তির কিছুটা স্থান বদল হতে পারে। তবে গান্ধী-মূর্তি সরানো নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। রাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয় বলে যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা করে এগোনো হচ্ছে। নতুন সংসদ ভবন তৈরির সময় পুরনো সংসদ ভবনের মূল ফটকের সামনে থেকে গান্ধী মূর্তি সরানো হয়েছিল।

সরকারি কর্তাদের বক্তব্য, পুরনো সংসদ ভবনের ভিতরে ও মাঝের চত্বরেও অজস্র মূর্তি রয়েছে। সেগুলি সরানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। বাইরের দিকে মূর্তি সরানোর ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য কারও মূর্তির স্থানবদল নয়। লক্ষ্য হল, নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করে সংসদ চত্বরের মধ্যে যাতায়াত মসৃণ করা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

parliament India Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy