মধ্যপ্রদেশে সরকারি বণ্টনকেন্দ্র থেকে সার সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ৫৮ বছরের প্রৌঢ়া ভুরিয়া বাই। টানা দু’দিন কেটে গেলেও তাঁর ডাক আসেনি। লাইনেই একসময় মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বুধবার রাতের এই ঘটনা সাড়া ফেলে দিয়েছে বিজেপিশাসিত রাজ্যটিতে। ঘটনাটি ঘটেছে খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কেন্দ্র গুনায়।
মৃত প্রৌঢ়া গুনার কুশেপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। বাগরি সার বণ্টনকেন্দ্র থেকে সার সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, টানা দু’দিন প্রৌঢ়াকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। রাতেও বিশ্রামের ব্যবস্থা ছিল না। সারা দিন এবং সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকার পর একসময় প্রৌঢ়া বমি করতে শুরু করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। এলাকার বিজেপি বিধায়ক এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। সরকারি ব্যবস্থা নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলাশাসকের কাছে জানতে চেয়েছেন, কেন এমন একটা ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুন:
গুনায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সাংসদ মন্ত্রী সিন্ধিয়া স্বয়ং। সেই মঞ্চ থেকেই প্রৌঢ়ার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিধায়ক শাক্য বলেন, ‘‘এটা কী ধরনের সিস্টেম? তোমরা কি সিন্ধিয়া সাহেবের মুখ পোড়াতে চাও? তাঁর এলাকায় এমন ঘটনা আমি চাই না। মহিলার এত কষ্ট হল যে, তিনি মারাই গেলেন! এর কারণ কী? আগে জবাব দাও।’’ জেলাশাসককে উদ্দেশ করেই কথাগুলি বলেছিলেন বিধায়ক। পরক্ষণেই সুর নরম করে তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি কঠোর ভাবে কিছু বলে থাকি, সিন্ধিয়া সাহেবের কাছে ক্ষমা চাইছি। কিন্তু জেলাশাসকের কাছ থেকে আমরা উত্তর চাই। এখানে উত্তর না পেলে বিধানসভায় প্রশ্ন করব।’’ সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক অবশ্য দাবি করেছেন, প্রৌঢ়ার রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি ছিল। ফলে আগে থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।
গোটা ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন সিন্ধিয়া নিজেও। মৃতার পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে রেড ক্রসের মাধ্যমে ওই পরিবার আরও ১০ হাজার টাকা পাবে। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।