Advertisement
E-Paper

পুজো বন্ধের হুমকি পুরোহিতের, শবরীমালায় মন্দিরের দরজা থেকে ফিরলেন দুই মহিলা

মন্দির চত্বরে আসতেই তাঁরা প্রথম বাধা পান পুরোহিতদের কাছে। জনা কুড়ি পুরোহিত মন্দিরের গেটে পরপর দাঁড়িয়ে প্রাচীর তৈরি করেছিলেন। চলছিল তীব্র স্বরে প্রার্থনা। কবিতা আর রেহানা মন্দিরের দরজার কাছে পৌঁছতেই পুজো বন্ধের পাশাপাশি মন্দিরের তোরণ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন পুরোহিতের দল।

সংবাদসংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৪১
পুলিশি প্রহরায় মন্দিরের রাস্তায় কবিতা জাক্কাল। ছবি: পিটিআই।

পুলিশি প্রহরায় মন্দিরের রাস্তায় কবিতা জাক্কাল। ছবি: পিটিআই।

পাহাড়ি রাস্তায় পাঁচ কিলোমিটার ট্রেকিং করার পর বিগ্রহের প্রায় ৫০০ মিটার কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদের সাংবাদিক কবিতা জাক্কাল এবং কোচির বাসিন্দা রেহানা ফতিমা। তার পরেই ছিল সোনার সিঁড়ি। আক্ষরিক অর্থেই তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন ইতিহাসের দোরগোড়ায়। তাঁদের থেকে আঠারো ধাপ দূরেই ছিল আয়াপ্পাস্বামীর বিগ্রহ। ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি কোনও মহিলা এই বিগ্রহের দর্শন এর আগে কখনও করেননি।

পাঁচ কিলোমিটার ট্রেকিং রাস্তায় ওই দু’জন হাঁটেন কড়া পুলিশি প্রহরার মধ্যে। কিন্তু মন্দির চত্বরে আসতেই তাঁরা প্রথম বাধা পান পুরোহিতদের কাছে। জনা কুড়ি পুরোহিত মন্দিরের গেটে পরপর দাঁড়িয়ে প্রাচীর তৈরি করেছিলেন। চলছিল তীব্র স্বরে প্রার্থনা। কবিতা আর রেহানা মন্দিরের দরজার কাছে পৌঁছতেই পুজো বন্ধের পাশাপাশি মন্দিরের তোরণ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন পুরোহিতের দল। সেই হুমকির কথা দুই মহিলাকে জানান পুলিশ কর্তারা। এর পরই বিগ্রহ দর্শনের আশা ছেড়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কবিতা আর রেহানা।

রেহানা আর কবিতা ছাড়াও আর এক মহিলা ভক্ত এ দিন শবরীমালা বিগ্রহ দর্শনের জন্য পাহাড়ে চড়তে শুরু করেছিলেন। মেরি সুইটি নামের এই ভক্ত এর আগে অসংখ্য গির্জা, মসজিদ, মন্দির আর গুরুদ্বারে প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু আয়াপ্পা স্বামীকে দর্শন করা হয়ে ওঠেনি তাঁর। যদিও তাঁকে কোনও নিরাপত্তা দেয়নি পুলিশ। তাঁকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে তাঁকে নিজ দায়িত্বে যেতে হবে। ভক্তদের প্রতিবাদের উন্মত্ত চেহারা দেখে তিনিও আর মন্দিরের দিকে পা বাড়াননি।

কালো পোশাকে মন্দিরের রাস্তায় রেহানা ফতিমা। ছবি: এপি।

বিগ্রহে ঢুকতে না পারলেও বিগ্রহের খুব কাছে পৌঁছে যাওয়ায় নিজেকে গর্বিত বলে মনে করছেন। এমনটাই জানিয়েছেন মোজো টিভির ২৪ বছরের সাংবাদিক কবিতা জাক্কাল। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরা কবিতা জাক্কালকে ঘিরে রেখেছিলেন ৩০০ জন পুলিশকর্মী। এর আগে কবিতা জানিয়েছিলেন, আয়াপ্পাস্বামীকে দর্শন না করে তিনি ফিরবেন না। কিন্তু তাঁর সেই আশা শেষ পর্যন্ত পূর্ণ হয়নি।

আরও পড়ুন: আটকে রেখে ১০ দিন ধরে গণধর্ষণ, কোণার্কে উদ্ধার কলকাতার তরুণী

শবরীমালা মন্দির যে ধর্মীয় ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণ করে, তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, ওই দুই মহিলা আয়াপ্পা স্বামীর ভক্ত নন। কোনও কিছু প্রমাণের জন্যই তাঁরা আয়াপ্পা স্বামীর মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন।

মন্দিরের দরজায় পুরোহিতদের অবস্থান। ছবি: এএফপি।

আয়াপ্পা স্বামীর মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ। কারণ মন্দির পরিচালকদের বিশ্বাস আয়াপ্পা স্বামী চিরকুমার। মহিলাদের প্রবেশে সেই কৌমার্য নষ্ট হবে এই বিশ্বাস থেকেই এই প্রথা। যদিও গত ২৮ সেপ্টেম্বর এই মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের দাবিতে সিলমোহর দেয় সুপ্রিম কোর্ট। যদিও এখনও পর্যন্ত মহিলারা আটকে আছেন ৫০০ মিটার দূরত্বে। এখনও ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোনও মহিলা মন্দিরে ঢুকতে পারেননি।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

Sabarimala Supreme Court Temple Entry Priest Kavitha Jhakkal Rehana Fatima
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy