Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বছরে ৭১২ লক্ষ কোটি টাকা ‘বেতন’ মার যাচ্ছে মহিলাদের!

নিজেদের সমীক্ষায় এমনই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক অধিকার রক্ষা সংগঠন ‘অক্সফ্যাম’।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
দাভোস শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৬
Share: Save:

ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে স্কুলে পাঠানো কিংবা বরের জন্য ভাত বেড়ে দেওয়া, শ্বশুর-শাশুড়ির ওষুধ হাতের কাছে রাখা... সারা বিশ্বের মহিলাদের দিনভরের এমন হাজারো বেতনহীন কাজের মোট মাইনে যদি ধার্য করা হয়, তা হলে বছরে তা দাঁড়াবে আনুমানিক ১০ লক্ষ কোটি ডলার! যা কি না অ্যাপল-এর মতো সংস্থার এক বছরের ব্যবসার ৪৩ গুণ। নিজেদের সমীক্ষায় এমনই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক অধিকার রক্ষা সংগঠন ‘অক্সফ্যাম’।

ভারতের ক্ষেত্রে ছবিটা আরও বিবর্ণ। মেয়েদের ঘরের কাজের বেতন ধরলে তা জাতীয় আয়ের ৩.১ শতাংশ। এমন কাজে শহরের মেয়েরা সারা দিনে ৩১২ মিনিট ব্যয় করে। গ্রামাঞ্চলে সেটা ২৯১ মিনিট। সেখানে তুলনা করলে শহরের ছেলেরা ব্যয় করে মাত্র ২৯ মিনিট। আর গ্রামের ছেলেরা ৩২ মিনিট। কিছু দিনের মধ্যেই সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে শুরু হচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম’ (ডব্লিউইএফ)-এর বার্ষিক সম্মেলন। তার আগে এই রিপোর্টকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। ভারতের জন্য মহিলাদের আর্থিক বৈষম্য চোখে পড়ার মতো। অক্সফ্যামের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এ দেশে আর্থিক-বৈষম্যের মুখই মেয়েরা। বেতনহীন কাজের পাশাপাশি বেতনভুক্ত, কিংবা কোটিপতিদের

তালিকাতেও মেয়েদের অবস্থান শোচনীয়। ১০০ কোটির মালিকানার তালিকায় দেশের ১১৯ সদস্যের মধ্যে মহিলা মাত্র ৯ জন। এমনকি, যে সব মহিলা চাকরি করেন, মাইনে পান, তাঁদের আয়ও ছেলেদের থেকে কম। আয়ের এই পার্থক্যের জন্যই খুব কম ক্ষেত্রে দেখা যায় মেয়েদের আয়ের উপর সংসার চলে। ছেলে ও মেয়েদের এই আয়ের ব্যবধান প্রায় ৩৪ শতাংশ। এর পাশাপাশি সামাজিক স্তর, ধর্ম, বয়সের প্রভাব তো আছেই। অক্সফ্যাম-এর ‘বিশ্ব লিঙ্গ ব্যবধান সূচক-২০১৮’ তালিকায় ভারতের স্থান ১০৮-এ। ২০০৬ সালের থেকে ১০ ধাপ নীচে নেমে গিয়েছে। চিন, বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে।

আরও পড়ুন: গরিবের নয়, ধনীদের আরও ‘অচ্ছে দিন’

কিন্তু ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে এই আর্থিক বৈষম্যের কারণ কী? ভারতীয় সমাজের চিন্তাধারাকেই দায়ী করা হয়েছে রিপোর্টে। অক্সফ্যাম-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘নারী-হেনস্থা রুখতে ভারতে অনেক আইন তৈরি করা হয়েছে। যদিও বাস্তবে তা মেনে চলা হয় না।’’ যেমন, কর্মস্থানে হেনস্থা রুখতে ২০১৭ সালে আইন পাশ হয়েছে। কিন্তু সেই আইন আনতেই ১৭ বছর লেগে গিয়েছে। সেই আইনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে সাম্প্রতিক ‘#মিটু’ আন্দোলনের পরে। বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের দেখাশোনায় অবহেলা হলে ৬০ শতাংশ মানুষই মহিলাদের দায়ী করেন। বাড়ির মেয়ে-বৌ রান্না করতে পারেন না, ৪১ শতাংশ মানুষই একে অপরাধ মনে করে। সমাজের একটা বড় অংশ এখনও মনে করে, মেয়েদের চাকরি করার প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভে সক্রিয় রাহুল, অণ্ণা হজারেও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

OXFAM Report Women Salary Household work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE