Advertisement
E-Paper

বিরোধীদের চাপ, মানিক জানালেন ক্ষমা চাইবেন না

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে ভারতের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে তিনি যা বলেছেন তাতে অনড়ই রইলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে বিধানসভায় দাঁড়িয়েই জানিয়ে দিলেন, ‘‘যা বলেছি, একশো শতাংশ ঠিক বলেছি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৮

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে ভারতের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে তিনি যা বলেছেন তাতে অনড়ই রইলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে বিধানসভায় দাঁড়িয়েই জানিয়ে দিলেন, ‘‘যা বলেছি, একশো শতাংশ ঠিক বলেছি। ভারতের একজন নাগরিক হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের বৈদেশিক নীতির সমালোচনা করার অধিকার আমার রয়েছে। সেই অধিকারেই ভারত সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার অধিকারও রয়েছে।’’

গত কাল আগরতলায় ফিকি আয়োজিত এক শীর্ষ বাণিজ্য সম্মেলনে দাঁড়িয়ে, দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিদের সামনে মানিকবাবু বলেন, ‘‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের দাদাগিরি বন্ধ হওয়া দরকার।’’ বিদেশি প্রতিনিধিদের সামনে দেশের একটি অঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েন সকলেই। স্বভাবতই সরব হয় রাজ্যের বিরোধীরা। বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস—প্রত্যেকেই মানিকবাবুকে কাঠগড়ায় তুলেছে। তাদের বক্তব্য, ফিকির আলোচনা সভায়, দেশ-বিদেশের প্রতিনিধির সামনে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের এ হেন আচরণ ‘দেশবিরোধী’।

প্রতিবাদ গড়ায় বিধানসভাতেও। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তথা প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মণ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর গত কালের মন্তব্য দেশবিরোধী। ওই মন্তব্যের জন্য বিধানসভায় তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্ক, তাতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে পাকিস্তান এ ধরনের মন্তব্য করে থাকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেন এই মন্তব্য করবেন? তিনি বলেন, ‘‘সর্বোপরি আলোচনা সভায় দেশ বিদেশের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। তাঁদের সামনে ভারতের বৈদেশিক নীতি নিয়ে একটি অঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্য মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এতে দেশের মর্যাদাই ক্ষুণ্ণ হয়েছে।’’ মানিকবাবুর এই মন্তব্যের রেশ পড়েছে আগরতলায় যুব তৃণমূলের সমাবেশেও। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া মানস ভুঁইয়ার দাবি, ‘‘ভারতের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবু যে মন্তব্য করেছেন, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করতে রাজ্যের রাজ্যপালকে অনুরোধ করছি।’’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহাও মানিকবাবুর তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতেই পারেন। কিন্তু বিদেশি প্রতিনিধিদের সামনে, একটি বাণিজ্যিক সম্মেলনে দেশের বৈদেশিক নীতির সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী ভুল করেছেন।’’ রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘দেশের বৈদেশিক নীতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একটি অঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য আসলে দেশদ্রোহিতা। তিনি তাঁর সাংবিধানিক গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছেন।’’

তবে বিরোধীরা যাই বলুন না কেন, মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে রাজি হননি। বিধানসভায় বিরোধীদের দাবির মুখে তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ারও প্রশ্নই ওঠে না।’’ প্রত্যাশিত ভাবেই দলের পলিটব্যুরো সদস্য মানিকবাবুর পাশেই দাঁড়িয়েছে রাজ্য সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ফিকির শীর্ষ বাণিজ্য সম্মেলনে গত কাল যা বলেছেন, ঠিকই বলেছেন।’’ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঘটনাবলিকে কেন্দ্র করে দলের অবস্থানকেই বিজনবাবু তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বড় বড় পুঁজির স্বার্থে আমেরিকার জাল বিস্তারে সহযোগী হয়েছে ভারত।’’ বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় সব দেশই ভারতের তুলনায় ছোট। সেখানে আমেরিকার অঙ্গুলি হেলনে ভারত তার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরি করছে।

Manik sarkar trinamool congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy