১০ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। রেড কর্নার নোটিস জারি করেছিল ইন্টারপোলও। এশিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ বন্যপশু পাচারকারী ইয়াংচেন লাচুংপাকে সিকিম থেকে গ্রেফতার করল মধ্যপ্রদেশে স্টেট টাইগার স্ট্রাইক ফোর্স (এসটিএসএফ) এবং ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো (ডব্লিউসিসিবি)-এর যৌথ বাহিনী। লাচুংপাকে গ্রেফতারে সহযোগিতা করেছে সিকিম পুলিশ, এসএসবি এবং সিকিম বন দফতর।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভারত-চিন সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে উত্তর সিকিমের লাচুং থেকে লাচুংপাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১০ বছর ধরে ভারত এবং বিদেশে লাচুংপার খোঁজ চলছিল। এর আগে বেশ কয়েক বার পুলিশের নাগালে এলেও, পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন লাচুংপা। মূলত নেপাল, তিব্বত এবং চিন ছিল তাঁর নিরাপদ আশ্রয়। এমনটাই জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ভারতে ঢোকার জন্য মূলত পাহাড়ি দুর্গম রাস্তা ব্যবহার করতেন, যে সব এলাকায় নজরদারি কম, সেই এলাকাগুলিকেই বেছে নিতেন লাচুং। বার বার পালাতেও সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু এ বার অনেক আঁটঘাঁট বেঁধেই লাচুংকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
গোপন সূত্রে খবর আসে উত্তর সিকিমে রয়েছেন লাচুং। বড় কোনও পাচারের উদ্দেশে এসেছেন। সেই খবর পেয়েই এসটিএসএফ, ডব্লিউসিসিবি যোগাযোগ করে সিকিম পুলিশ এবং সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)-এর সঙ্গে। তার পরই লাচুং থেকে গ্রেফতার করা হয় এশিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ এবং পাচারকারীকে। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সাল। মধ্যপ্রদেশের সাতপুরা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের কামতি রেঞ্জে বাঘের হাড়, চামড়া, প্যাঙ্গোলিনের আঁশ উদ্ধার হয়। সেই সূত্র ধরে বিরাট এক পাচারচক্রের হদিস পায় বন দফতর। মূলত বাধের হাড়, চামড়া, নখ, হাড়ের তেল এবং প্যাঙ্গোলিনের আঁশ নেপাল, চিন এবং তিব্বত-সহ বিদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় পাচার করা হচ্ছিল। যার আন্তর্জাতিক বাজারদর কোটি কোটি টাকা। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার তিন মাসের মধ্যে জয় তামাং নামে এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। মূলত তামাঙের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে পাচার করা হত। আর পাচারচক্রে মাথা ছিলেন লাচুং। তামাঙের সূত্র ধরেই লাচুং-সহ ৩৬ জনের হদিস মেলে। ২০২২ সালে নর্মদাপুরম আদালত ২২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। কিন্তু লাচুংপার হদিস মিলছিল না। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মূলত লাচুং এবং গ্যাংটক থেকে তাঁর পাচার সাম্রাজ্যের উত্থান। তার পর সেই চক্র ছড়িয়ে পড়ে দিল্লি, শিলিগুড়ি, কলকাতা, কানপুর, হোসাঙ্গাবাদ হয়ে নেপাল, তিব্বত এবং ভুটানে।