ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফের রেপো রেট হ্রাস করল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআই। চলতি বছরে (পড়ুন ২০২৫) চতুর্থ বারের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। এর কতটা প্রভাব পড়বে আমজনতার স্থায়ী আমানতে (ফিক্সড ডিপোজ়িট বা এফডি)? বাড়ি-গাড়ির মতো সেখানেও কি কমবে সুদ? কতটা লোকসান হবে নতুন লগ্নিকারীদের? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
এ দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে যে সুদের হারে আরবিআই ঋণ দিয়ে থাকে অর্থনীতির পরিভাষায় তাকেই বলে রেপো রেট। এর সূচক নামলে সাধারণ ভাবেই হ্রাস পায় ব্যাঙ্কের ঋণের খরচ। এর সরাসরি প্রভাব গিয়ে পড়ে স্থায়ী আমানতে। রেপো রেট নিম্নমুখী হলে এফডিতে সুদ কমার সম্ভাবনা থাকে প্রবল। তবে স্থায়ী আমানতে সুদের হার কতটা কমবে, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, তিন দিনের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের পর নতুন রেপো রেট ঘোষণা করেন আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্র। এ বার সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ফলে ৫.৫ শতাংশ থেকে ৫.২৫ শতাংশে নেমেছে সূচক। অতীতে ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট হ্রাস সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে স্থায়ী আমানতে ০.১০-০.২৫ শতাংশ সুদ কমাতে দেখা গিয়েছে। এ বারও একই চিত্র দেখা যাবে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।
তবে রেপো রেট কমার সঙ্গে সঙ্গেই এফডিতে সুদ কমে যায়, এমনটা নয়। আর তাই নতুন হার ঘোষণা হওয়ার আগে পর্যন্ত বিদ্যমান সুদে স্থায়ী আমানতে লগ্নির সুযোগ পাবেন বিনিয়োগকারীরা। শুধু তা-ই নয়, রেপো রেটে বদল আসার আগে যাঁরা এফডিতে টাকা রেখেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সুদের হার বা স্থায়ী আমানতের মেয়াদের কোনও বদল হবে না। তবে নতুন লগ্নি এবং এফডি পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে সুদ কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বিশ্লেষকদের দাবি, রেপো রেট হ্রাসে স্বল্পমেয়াদি স্থায়ী আমানতে লোকসানের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এর আওতায় রয়েছে তিন মাস থেকে এক বছরের এফডি। এই আমানতগুলি ব্যাঙ্কের স্বল্পমেয়াদি মুদ্রা ব্যবস্থাপনার (শর্ট টার্ম লিকুইডিটি ম্যানেজমেন্ট) সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত। সেই কারণেই রেপো রেটের বদল একে সংবেদনশীল করে তোলে।
স্থায়ী আমানতে লোকসানের আশঙ্কা থাকলেও আরবিআইয়ের সিদ্ধান্তে অবশ্য বড়দিনের আগে মুখে হাসি ফুটেছে বাড়ি ও গাড়ির ঋণের গ্রাহকদের। রেপো রেট কমায় হ্রাস পাবে তাঁদের মাসিক কিস্তির অঙ্ক। ঋণগ্রস্তরা অবশ্য মাসিক কিস্তি না কমিয়ে মেয়াদ হ্রাসের জন্যেও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করতে পারেন। দু’দিক দিয়েই বেশ কিছু টাকা সঞ্চয়ের সুযোগ পাবেন তাঁরা। তবে এই সুবিধা কেবলমাত্র ভাসমান সুদের ক্ষেত্রেই মিলবে।