প্রশাসনের উদ্যোগে ফিরে আসছেন শ্রমিকেরা। ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীর উত্তপ্ত হওয়ার খবর পেয়ে বুক কেঁপেছে রাজ্যের অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের। বীরভূমের মুরারই ২ ব্লকের দাতুড়া গ্রামের বেশ কয়েক জন শ্রমিক কাশ্মীরের আপেল বাগানে কাজ করেন। পরিস্থিতি ভাল নয় বুঝে তাঁরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে সাদরুল কাজী ও লাল্টু শেখ ফোনে জানান, কাশ্মীরে বারামুলা কানিশপুরা আপেল বাগানে এলাকার ১৫-১৬ জন কাজ করতেন। অনেকেই মঙ্গলবার ট্রেন ধরেছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘বিএসএফ ও পুলিশ এ দিনই আমাদের দ্রুত বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আট জন আজ, বুধবার ট্রেন ধরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হব।’’
মালদহ, উত্তর দিনাজপুর এবং কোচবিহার, উত্তরবঙ্গের এই তিন জেলা থেকে সর্বাধিক শ্রমিক কাজের সন্ধানে পাড়ি দেন ভিন্ রাজ্যে। কাশ্মীরেও পাড়ি দেন তিন জেলার বহু শ্রমিক। বছর দুয়েক আগে কাশ্মীরের আপেল বাগানে দুষ্কৃতী হামলার ঘটনায় পরে প্রশাসনের উদ্যোগে ফিরে আসেন শ্রমিকেরা। ফের কাশ্মীর উত্তপ্ত হতেই ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের নিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তবে প্রশাসনের একাংশের দাবি, কাশ্মীরে কাজে যাওয়ার প্রবণতা এখন অনেকটাই কমেছে জেলার শ্রমিকদের। তাও তাঁদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
কাশ্মীরে অশান্তির খবরে এখন অবশ্য আর হৃতকম্প ধরে না মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির গ্রাম বাহালনগরের। এখান থেকেই প্রতি বছর শীতে আপেল বাগানের কাজে যেতেন প্রায় আড়াইশো মানুষ। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর সেখানেই কুলগ্রামে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ যায় ৫ জন পরিযায়ী শ্রমিকের। তার পর থেকে আর কাশ্মীর মুখো হন না গ্রামের কেউ। তাদেরই এক জন মুরসালিম শেখ বলছেন, ‘‘কাশ্মীর না গেলেও কাশ্মীরের খবর রাখি নিয়মিতই। আপেলের বাগান মালিকেরাও খবরাখবর নেয়। ২০/ ২২ বছর ধরে কাশ্মীরে গেলেও জঙ্গি হামলার মুখে কখনও পড়িনি কেউ। ৫ জনের মৃত্যুর পর আতঙ্ক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি গোটা গ্রাম। শীতের সময় দু মাস কাজ করে মোটা টাকা আয় ছিল। তাই পরিবেশ শান্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছি। তার পরে কাজে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy