Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
World Largest COVID Hospital

১০ হাজার শয্যা, ২৫০ আইসিইউ, দিল্লিতে ১২ দিনে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোভিড হাসপাতাল

২৫০ শয্যায় রয়েছে আইসিইউ-এর ব্যবস্থা। ১০ শতাংশ অর্থাৎ ১০০০ বেডে অক্সিজেন দেওয়া যাবে রোগীদের।

দিল্লিতে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোভিড হাসপাতালের ভিতরে কর্তব্যরত জওয়ান ও নার্সরা। ছবি: পিটিআই

দিল্লিতে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোভিড হাসপাতালের ভিতরে কর্তব্যরত জওয়ান ও নার্সরা। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ১৬:৩৮
Share: Save:

লম্বায় ১৭০০ ফুট, চওড়া ৭০০ ফুট। মাত্র ১২ দিনেই এক ছাদের তলায় ১০ হাজার শয্যার এই কোভিড হাসপাতাল তৈরি করে ফেলল প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গবেষণার সরকারি সংস্থা ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)। রাজধানী দিল্লি পেল বিশ্বের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল— ‘সর্দার পটেল কোভিড কেয়ার সেন্টার অ্যান্ড হসপিটাল’। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজল রবিবার এই হাসপাতালের সূচনা করার পর একসঙ্গে পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ

দক্ষিণ দিল্লিতে ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই একটি বিশাল জমি রয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের অধীন। সেই জায়গাতেই অস্থায়ী ভাবে গড়ে উঠেছে এই হাসপাতাল। রয়েছে ৫০ বেডের মোট ২০০টি আলাদা ঘেরা জায়গা। অর্থাৎ মোট ১০ হাজার বেড রয়েছে এই হাসপাতালে। তার মধ্যে ২৫০ শয্যায় রয়েছে আইসিইউ-এর ব্যবস্থা। ১০ শতাংশ অর্থাৎ ১০০০ বেডে অক্সিজেন দেওয়া যাবে রোগীদের। প্রাথমিক ভাবে মৃদু কোভিড আক্রান্ত ও উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হবে এই হাসপাতালে।

রবিবার সকালে হাসপাতালের সূচনার পর দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বলেন, দিল্লি ও ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওন (এনসিআর)-এর বাসিন্দারা এই হাসপাতালে পরিষেবা পাবেন। তিনি জানান, চিকিৎসক নার্সের পাশাপাশি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া করোনা আক্রান্তদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছেন মনরোগ বিশেষজ্ঞরাও।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বাধিক আক্রান্ত, সুস্থও হলেন চার লক্ষের বেশি

পরে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পরে অমিত শাহ টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সর্দার পটেল কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শন করলাম, যা রেকর্ড কম সময়ের মধ্যে টাটা সন্স, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় করে বানিয়েছে ডিআরডিও। এই সঙ্কটের মোকাবিলায় এগিয়ে আসার জন্য ডিআরডিও, টাটা সন্স এবং আমাদের সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।’’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ডিআরডিও, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, টাটা সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং অন্যান্য অনেকের সাহায্য ও সমন্বয়ে মাত্র ১২ দিনে এই হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। হু-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী তৈরি হয়েছে ২৫০ আইসিইউ বেড।’’

হাসপাতাল পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই

হাসপাতাল তৈরির কারিগরি ও প্রযুক্তিগত প্রায় সমস্ত বিষয়ের পরিকল্পনা ডিআরডিও-র। সংস্থার চেয়ারম্যান জি সতীশ রেড্ডি এ দিন বলেছেন, ‘‘এই হাসপাতালে চিকিৎসার সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সেনাবাহিনীর জওয়ানরা রাতদিন পরিষেবা দেবেন। হাসপাতালের পাশাপাশি বিশাল ডাম্পিং গ্রাউন্ডও তৈরি হয়েছে।’’ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এই বর্জ্য নষ্ট করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বূপূর্ণ। এ ছাড়া দেশীয় প্রযুক্তিতে ভেন্টিলেটর সহ অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরির প্রযুক্তিও রয়েছে ডিআরডিও-র। সতীশ রেড্ডি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এখনও পর্যন্ত দেশীয় প্রযুক্তিতে অন্তত ৭০টি পণ্য তৈরি করছে ডিআরডিও। এখন আমরা প্রতি মাসে অন্তত ২৫ হাজার ভেন্টিলেটর তৈরি করতে পারি। এমনকি, বিদেশে রফতানিও করতে পারি।’’

তখনও সম্পূর্ণ হয়নি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সর্দার পটেল কোভিড কেয়ার সেন্টার অ্যান্ড হসপিটাল তৈরির কাজ। ছবি: পিটিআই

আরও পড়ুন: লে সফরের দু’দিন পর রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদী, কথা সাম্প্রতিক বিষয়ে

এই হাসপাতালের পুরো দায়িত্বভার সামলাবে সেনাবাহিনী। প্রথম মাসের জন্য চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ মিলিয়ে মোট ৬০০ জনকে মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেনাবাহিনীর মহিলা চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাধুরী কানিতকর বলেন, ‘‘এই সংখ্যাটা পরে রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী রদবদল হবে। আমরা খুবই উৎসাহিত।’’ আবার আইটিবিপি-র ডিজি এসএস দেসওয়াল বলেছেন, ‘‘দেশের সীমান্ত ও জাতির সুরক্ষায় আমরা নিবেদিত। ... দেশের জন্য প্রাণ দিতে আমরা তৈরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE