Advertisement
E-Paper

বিশ্বে আন্ত্রিকে মৃত্যুর ২৫% ভারতে! দেশ জুড়ে শুরু হচ্ছে টিকাকরণ

আচমকাই পেট খারাপ, সঙ্গে জ্বর, বমি। পেটে যন্ত্রণা। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের আন্ত্রিকের ঘটনা আকছারই ঘটছে। শরীরে জলের অভাবে নেতিয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে। আগেই অপুষ্টি থাকলে বা ঠিক সময়ে হাসপাতালে না পৌঁছলে মৃত্যু ঘটছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৬ ১৪:১৯

আচমকাই পেট খারাপ, সঙ্গে জ্বর, বমি। পেটে যন্ত্রণা। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের আন্ত্রিকের ঘটনা আকছারই ঘটছে। শরীরে জলের অভাবে নেতিয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে। আগেই অপুষ্টি থাকলে বা ঠিক সময়ে হাসপাতালে না পৌঁছলে মৃত্যু ঘটছে।

ডাক্তাররা বলছেন, এই ধরনের আন্ত্রিকের পিছনে রয়েছে রোটা ভাইরাস। শিশুদের আন্ত্রিকের শতকরা ৪০ ভাগই হয় এই ভাইরাসের আক্রমণে। এ দেশে প্রতি চার মিনিটে একটি শিশুর মৃত্যু হয় রোটা ভাইরাস ঘটিত আন্ত্রিক থেকে। কিন্তু এর কোনও ওষুধ নেই। একবার সংক্রমণ হলে ওআরএস-ই একমাত্র ভরসা।

শিশুদের এই আন্ত্রিক রুখতে এ বার সার্বিক টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় রোটা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার ওড়িশায় যার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা। ওড়িশা, অন্ধ্র, হরিয়ানা ও হিমাচল—এই চারটি রাজ্যে প্রথম দফায় টিকাকরণ চালু হবে। তারপর বাকি রাজ্যগুলিতেও নিখরচায় এই টিকা দেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা শিশুদের রোটাভাইরাসের টিকা খাওয়ালেও সরকারি টিকাকরণের কর্মসূচিতে তা ছিল না।

রাজ্যে নতুন টিকাকরণ কর্মসূচি চালুর আগে প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই মাঠে নামছে ওড়িশা স্বাস্থ্য দফতর। পশ্চিমবঙ্গে সপ্তাহ খানেক আগেই কৃমির ওষুধ খাওয়ানোর পর অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে হুলুস্থূল কাণ্ড ঘটেছিল। ডাক্তাররা একে ভিত্তিহীন বলেছিলেন। রোটা ভাইরাসের নতুন টিকার ক্ষেত্রেও যাতে তেমন কোনও আতঙ্ক না ছড়ায়, তার জন্য ইউনিসেফ-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগাম প্রচার শুরু করেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। ওড়িশার স্বাস্থ্য কল্যাণ দফতরের ডিরেক্টর নির্মলা দেই বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। কিন্তু তার জন্য আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এই টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ। “এ দেশে এখনও শিশুদের টিকা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সরকারি প্রচার, পাড়ায় পাড়ায় শিবির খুলেও দেশের মাত্র ৬২ শতাংশ শিশুর সমস্ত টিকাকরণ সম্ভব হয়েছে। এখনও ৮ শতাংশ শিশুকে কোনওরকম টিকা দেওয়া হয় না। ইউনিসেফ-এর ওড়িশা ফিল্ড অফিসের প্রধান য়ুমি বায় বলেন, “সব মায়েদের এই টিকার সম্পর্কে জানতে হবে। পাঁচ বছরের কয় বয়সী সব শিশুকে এই টিকা দেওয়াটা খুবই জরুরি।

রোটা ভাইরাস থেকে শিশুদের আন্ত্রিক—

উপসর্গ-আচমকাই পাতলা পায়খানা, জ্বর, বমি, পেটে যন্ত্রণা

শিশুদের আন্ত্রিকের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ রোটা ভাইরাস জনিত

এ দেশে প্রতি চার মিনিটে একটি শিশুর মৃত্যু হয়

ওষুধ নেই, ওআরএস ভরসা

বিশ্বে আন্ত্রিকে শিশু মৃত্যুক ২৫ শতাংশ ভারতে

হাতে বা মেঝেতে দীর্ঘ সময় ভাইরাস বেঁচে থাকে

প্রতি বছর ৮ লক্ষ ৭০ হাজার শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি

রোটা ভাইরাসের টিকা--শিশুদের ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ ও ১৪ সপ্তাহ বয়সে পোলিও ও অন্যান্য টিকার সঙ্গে

সরকারি হিসেব বলছে, গোটা বিশ্বে আন্ত্রিকে যত শিশুর মৃত্যু হয়, তার ২৫ শতাংশ মৃত্যু ভারতে ঘটে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর ক্ষেত্রে অন্যতম বড় কারণ অন্যতম বড় কারণ হল রোটা ভাইরাস জনিত আন্ত্রিক। এই ভাইরাস প্রচণ্ড সংক্রামক। হাতে বা মেঝেতে দীর্ঘ সময় এই ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে। ফলে শিশুরা সহজেই সংক্রামিত হয়। বিশেষত অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।

একবার পাতলা পায়খানা, বমি, জ্বর, পেটে ব্যথা শুরু হলে তিন থেকে সাত দিনের আগে এই অসুখ সারে না। কিন্তু এর কোনও ওষুধ নেই। শুধুমাত্র ওআরএস ও জিঙ্ক ভরসা। শরীরে জলের অভাব দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি করা ছাড়া উপায় নেই। এ দেশে প্রতি বছর ৮ লক্ষ ৭০ হাজার শিশুকে রোটা ভাইরাস জনিত আন্ত্রিকের জেরে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

এই মূহুর্তে বিশ্বের ৮০টি দেশে সরকারি টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় রোটা ভাইরাসের টিকা খাওয়ানো হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, নবজাতকদের ক্ষেত্রে তিনটি ডোজে--৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ ও ১৪ সপ্তাহ বয়সে পোলিও ও অন্যান্য টিকার সঙ্গেই এই ভ্যাক্সিন খাওয়ানো হবে। গোটা দেশে টিকা চালু হলে ৫ বছরের কমবয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ৪১ হাজার থেকে ৪৮ হাজার মৃত্যু রোখা যাবে।

diarrhea death rate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy