ছবি পিটিআই।
আর সন্দেহ নেই, ভারতে এসেই গিয়েছে এক্সই শাখা-প্রজাতির করোনাভাইরাস।
ওমিক্রনের এক্সই শাখা-প্রজাতির নমুনা এ দেশে কোভিডে সংক্রমিতদের শরীরে পাওয়া গিয়েছে বলে নিশ্চিত ভাবে জানিয়ে দিল সার্স কোভ-২ জিনোমিক্স কনসর্টিয়াম (ইনসাকগ)। ব্রিটেনের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞদের মত ছিল, সংক্রমণ ছড়ানোর প্রশ্নে ওমিক্রনের বিএ.২ শাখা-প্রজাতির থেকেও এক্সই সামান্য বেশি শক্তিশালী। তবে একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, ভারতে এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনের যে শাখা-প্রজাতিগুলি পাওয়া গিয়েছে, তাদের চেয়ে এক্সই-কে বেশি মারাত্মক বলে মনে হচ্ছে না। তা ছাড়া, এখনও এই শাখা-প্রজাতি ভারতের কোনও প্রান্তে সংক্রমণের ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করতে পারেনি। যার অর্থ, এক্সই ভারতে এলেও তা বিশেষ ছড়াতে পারেনি।
মাসখানেক আগে মহারাষ্ট্র ও গুজরাতে দু’জন কোভিড রোগীর শরীরে করোনাভাইরাসের নতুন শাখা-প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। সেই সময়েই মহারাষ্ট্র সরকার ওই শাখা-প্রজাতিটিকে এক্সই বলে দাবি করলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সেই বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক বুলেটিনে ‘ইনসাকগ’ স্বীকার করে নিয়েছে, ভারতে কিছু ‘রিকম্বিন্যান্ট’ (জিনগত পুনর্বিন্যাস হওয়া) প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। এক্সই সেই রিকম্বিন্যান্ট প্রজাতির সদস্য। ওমিক্রনের বিএ.১ এবং বিএ.২ শাখা-প্রজাতিতে যে চরিত্রগত পরিবর্তনগুলি হয়েছে, সেগুলির লক্ষণ পাওয়া গিয়েছে এক্সই-তেও। গত জানুয়ারি মাসে ব্রিটেনে ফের সংক্রমণের ঢেউ আসার অন্যতম কারণ ছিল এক্সই শাখা-প্রজাতি।
এখনও পর্যন্ত ভারতে পাওয়া ওমিক্রনের সবচেয়ে সংক্রামক প্রজাতি ছিল বিএ.২। ব্রিটেনের অভিজ্ঞতার নিরিখে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছিলেন যে, এক্সই তার থেকে কিছুটা হলেও বেশি শক্তিশালী। তবে ‘ইনসাকগ’ রিপোর্টে জানিয়েছে, ভারতে পাওয়া রিকম্বিন্যান্ট প্রজাতিগুলিই এ দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী, এ কথা বলা যায় না। কারণ যেখানে ওই শাখা-প্রজাতিগুলি পাওয়া গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সেই এলাকায় বা অন্যত্র সংক্রমণের লেখচিত্রের ঊর্ধ্বগতি বা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এমনকি এক্সই-তে আক্রান্তদের উপসর্গ সাধারণ করোনা রোগীদের মতোই। তাঁদের নতুন কোনও উপসর্গ চোখে পড়েনি।
এর পাশাপাশি, ভারতে যেহেতু প্রায় ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কেরই টিকার দু’টি ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাই সংক্রমণ বিশেষ বাড়তে পারেনি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে ১২টি রাজ্যে সংক্রমণ যেমন বেড়েছে, তেমনই ১৯টি রাজ্যে তা কমেছে। ফলে সংক্রমণ যে বেড়ে চলেছে, তা কোনও ভাবেই বলা যায় না। এ ছাড়াও ওমিক্রনের বিএ.২.১০, বিএ.২.১২ এবং বিএ.২ শাখা-প্রজাতিগুলির খোঁজ পাওয়া গেলেও এর কোনওটির ফলেই রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়নি।
এক্সই-র পাশাপাশি আরও একটি রিকম্বিন্যান্ট শাখা-প্রজাতি এক্সইডি-কেও নজরে রেখেছেন বিশেষজ্ঞেরা। ডেল্টা জিনোমের মধ্যে ওমিক্রনের ‘এস’ জিনের উপস্থিতি এক্সডি শাখা-প্রজাতিটিকে শক্তিশালী করে তুলেছে। ওই শাখা-প্রজাতি প্রথম পাওয়া গিয়েছে ফ্রান্সে। ভারতে সরকারি ভাবে এক্সইডি-র অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও, ইউরোপ থেকে আসা যাত্রীদের মাধ্যমে সেটি এ দেশে ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy