অখিলেশ সিংহ যাদব (বাঁ-দিকে) এবং যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরপ্রদেশের ভোট যত এগিয়ে আসছে, ধর্মীয় মেরুকরণের ছবি ততই নগ্ন হচ্ছে সে রাজ্যের রাজনীতিতে। গত কাল জওহরলাল নেহরু এবং সর্দার বল্লভভাই পটেলের সঙ্গে মহম্মদ আলি জিন্নাকে একাসনে বসিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি করেছেন এস পি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সংখ্যালঘু মনকে কাছে টানতে তাঁর এই মরিয়া প্রয়াস।
অন্য দিকে আজ পাল্লা দিয়ে মেরুকরণ করে হিন্দু ভোটকে সংহত করতে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। জানিয়েছেন, তাঁর লক্ষ্যই হল অতীতের অবিভক্ত ভারতকে নতুন করে গড়ে তোলা। কেবল পাকিস্তান নয়, আফগানিস্তানের মাটিতেও ভারতের তেরঙা পতাকা ওড়ানোর সংকল্প রয়েছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। ভোট প্রচারে বেরিয়ে যোগী বলছেন, তালিবান ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের উপরে বোমা ফেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বায়ুসেনার বিমান।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ইচ্ছা করেই ভোটের ময়দানে তালিবানকে টেনে এনেছেন যোগী। তাঁর কথায়, “তালিবান রাস্তা বদলে ভারত আক্রমণের কথা ভাবলে, তাদের মনে রাখতে হবে যে আমাদের বায়ুসেনার বিমানগুলি পাল্টা বোমা ফেলার জন্য তৈরি রয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর আমলে আরও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে ভারত। বর্তমানে ভারত এতটাই শক্তিধর হয়ে উঠেছে যে অন্য কোনও দেশের ক্ষমতা নেই ভারতের দিকে চোখ খুলে তাকাবে।”
আফগানিস্তান প্রসঙ্গে একটি প্রবন্ধে যোগী আদিত্যনাথ লিখেছিলেন, তিনি চান অতীতের মতোই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হোক আফগানিস্তান। এক সময়ে যে ভাবে হিন্দু রাজারা সেখানে শাসন চালিয়েছে, ঠিক সে ভাবেই আজকের দিনে ফের এক বার ভারতের তেরঙা পতাকার নিচে আসুক আফগানিস্তান। আজ তালিব জঙ্গিদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার সঙ্গেই এ দেশে অখিলেশের মতো নেতার ‘তালিবানি মানসিকতা’র সমালোচনা করেন যোগী আদিত্যনাথ।
গত কাল জন্মদিন ছিল সর্দার বল্লভভাই পটেলের। তাঁকে নিয়ে বলতে উঠে পটেলের সঙ্গে মহম্মদ আলি জিন্নার তুলনা করে বসেন অখিলেশ। অখিলেশ বলেন, “জিন্না আসলে পটেল, নেহরু, গাঁধীজীর মতোই বড় মাপের স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁরা সবাই একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন। তাঁরা ব্যারিস্টার হয়েছেন এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছেন।”
পড়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হিন্দু ভোটের মেরুকরণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। বিজেপি মুখপাত্র রাকেশ ত্রিবেদী সরাসরি এসপি নেতৃত্বকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “ছেলের কথা শুনলে লজ্জায় মাথা কাটা যাবে পিতা মুলায়ম সিংহের। তবে যে পিতা করসেবকদের উপর গুলি চালায়, তার কাছ থেকে কী আর প্রত্যাশা করা যায়!” অখিলেশের বক্তব্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন যোগীও। তাঁর কথায়, “জিন্নাকে ওই সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে তুলনা করা আসলে অখিলেশের তালিবানি মানসিকতার পরিচায়ক। তালিবানি মানসিকতাই এ ভাবে বিভাজনের কথা বলতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভারত এখন অখণ্ড। যে কোনও বহিঃশত্রুর আক্রমণের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।” বিজেপি মুখপাত্র রাকেশ ত্রিবেদীর দাবি, যে জিন্না দেশভাগের জন্য দায়ী, তাঁর প্রশংসায় সরব হওয়ার পিছনে অখিলেশ যাদবের সংখ্যালঘু তুষ্টিকরণের রাজনীতিই দায়ী। তিনি এসপি নেতার নাম দিয়েছেন ‘অখিলেশ সিংহ জিন্না’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy