সত্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে মোদীকে নিশানা কেজরীর। ফাইল চিত্র।
পুলওয়ামাকাণ্ড নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করার পরেই সিবিআই নোটিস পেয়েছেন তিনি। মোদী জমানায় জম্মু ও কাশ্মীর-সহ একাধিক রাজ্যের রাজ্যপালের পদে থাকা সেই সত্যপাল মালিকের সমর্থনে এ বার সরব হলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
শুক্রবার কেজরী বলেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল দেশ জোড়া এই ভয়ের বাতাবরণে নজিরবিহীন সাহস দেখিয়েছেন। দেশ তাঁর পাশে আছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘যারা সিবিআইয়ের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে, তারা আসলে কাপুরুষ। ওরা অশিক্ষিত, দুর্নীতিগ্রস্ত, বিশ্বাসঘাতক। ওরা আপনার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবে না। আপনি এগিয়ে যান।’’
মোদী জমানায় জম্মু-কাশ্মীর-সহ চারটি রাজ্যের রাজ্যপালের পদে থাকা বিজেপি নেতা সত্যপাল সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ তুলেছেন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে পুলওয়ামায় সিআরপি-র কনভয়ে জঙ্গি হানায় ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যুর পরে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। কারণ, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গাফিলতি, নিরাপত্তায় ফাঁক থাকার ফলেই কনভয়ে হামলা হয়েছে। কিন্তু সত্যপালের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, এটা অন্য বিষয়। সত্যপাল যেন মুখ বন্ধ থাকেন।
ওই সাক্ষাৎকারেই সত্যপাল আভাস দিয়েছিলেন, পুলওয়ামায় জওয়ানদের মৃত্যুকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগানো হয়ে থাকতে পারে। ঘটনাচক্রে, গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘প্রথম বারের ভোটারদের বলছি, আপনাদের প্রথম ভোট পুলওয়ামায় যে সব বীর শহিদ হয়েছেন, তাঁদের নামে সমর্পিত হতে পারে!’’
পাশাপাশি, পুলওয়ামাকাণ্ডের সময় জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপালের পদে থাকা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সত্যপালের দাবি, সিআরপি বিমান জম্মু থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত জওয়ানদের নিয়ে যেতে চাইলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তার বন্দোবস্ত করেনি। ওই সাক্ষাৎকারের পরেই জম্মু-কাশ্মীরে বিমা কেলেঙ্কারির তদন্তে তাঁকে আগামী সপ্তাহে তলব করেছে সিবিআই। সত্যপাল নিজে সিবিআইয়ের সমন পাওয়ার কথা টুইট করে বলেছেন, ‘‘আমি সত্য কথা বলে কিছু লোকের পাপ প্রকাশ্যে এনেছি। বোধ হয় সে কারণেই ডাক এসেছে। আমি কৃষকের ছেলে, ভয় পাব না। সত্যের পক্ষে দাঁড়াব।’’
যে বিমা কেলেঙ্কারির মামলায় সিবিআই তাঁকে তলব করেছে, সাক্ষাৎকারে সে প্রসঙ্গেরও অবতারণা করেছিলেন সত্যপাল। প্রধানমন্ত্রী মোদী দুর্নীতিকে তেমন কিছু ঘৃণা করে না বলেও দাবি করে তিনি জানান, বিজেপি এবং আরএসএস নেতা রাম মাধব তাঁর কাছে জম্মু-কাশ্মীরের সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার বিমা প্রকল্পের হয়ে সওয়াল করতে এসেছিলেন। ওই বেসরকারি সংস্থার স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে সরকারি কর্মচারীদের বছরে ৮,৫০০ টাকা, অবসরপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছিল। তাতে সকলেই অখুশি ছিলেন। তাই তিনি ওই প্রকল্প বাতিল করে দেন। প্রকল্পে ছাড়পত্র দিলে ১৫০ কোটি টাকা ঘুষ মিলত বলেও তাঁকে জানানো হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy