নিজের বান্ধবীর সঙ্গে ভাইপোর এই ঘনিষ্ঠতায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন বিজয়। প্রতীকী ছবি।
সন্দেহ ছিল, বান্ধবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে ভাইপোর। সেই সন্দেহের বশেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন কাকা। এর পর ভাইপোকে ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করে ফ্ল্যাটের মেঝেতেই তাঁর দেহ পুঁতে দেন। পুলিশের চোখ এড়াতে শহর ছেড়ে অন্যত্র চলেও যান তিনি। ঘটনার প্রায় তিন বছর পর পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ওই ব্যক্তি। রবিবার হায়দরাবাদ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বিজয়কুমার মহারাণা। ঘটনার সময় নয়ডার একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। ৩৭ বছরের বিজয় আদতে ওড়িশার গঞ্জাম জেলার বাসিন্দা। বান্ধবী দিল্লিতে থাকা শুরু করলে তিনিও সেখানে চলে আসেন। ২০১২ থেকে দিল্লির দ্বারকা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। এর বছর তিনেক পর হায়দরাবাদ থেকে বিজয়ের ভাইপো জয় প্রকাশ তাঁর ফ্ল্যাটে এসে ওঠে। এর পর থেকে বিজয়ের সঙ্গেই থাকতেন জয় প্রকাশ।
এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ের বান্ধবীর সঙ্গে জয় প্রকাশের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। নিজের বান্ধবীর সঙ্গে ভাইপোর এই ঘনিষ্ঠতায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন বিজয়। এর পর জয় প্রকাশকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
দ্বারকা পুলিশের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার রাজেন্দ্রসিংহ সাগরের দাবি, ২০১৬-র ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে জয় প্রকাশকে ঘুমের মধ্যেই খুন করে বিজয়। ফ্ল্যাটে একটি সিলিং ফ্যানের মোটর রাখা ছিল মেরামতির জন্য। খুনের অস্ত্র হিসাবে সেটাকেই বেছে নেন বিজয়। ঘুমন্ত জয় প্রকাশের মাথা ওই ভারী মোটর দিয়ে থেঁতলে দেন তিনি। এর পর বিছানার চাদরে তাঁর দেহ মুড়ে একটি কম্বল চাপা দিয়ে নিয়ে যান ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে। সেখানকার মাটি খুঁড়ে সেখানেই জয় প্রকাশের দেহ কবর দেন বিজয়। যাতে কারও সন্দেহ না হয়, তার জন্য তার উপর কয়েকটি ফুলগাছের চারাও পুঁতে দেন।
আরও পড়ুন: রাজ-শক্তি, সিবিআই ডিরেক্টরের পদ ফিরে পাওয়ার দু’দিনের মাথাতেই বিদায় বর্মার
এই ঘটনার সপ্তাহখানেক পর ডাবরি থানায় জয় প্রকাশের নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করে বিজয়। পুলিশের কাছে বিজয় দাবি করে, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি ভাইপো। এর মাস দু’য়েক পর ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে দিল্লির নাঙ্গলোই এলাকায় চলে যান বিজয়। ২০১৭-তে দিল্লির পাট চুকিয়ে হায়দরাবাদে থাকতে শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রতিবাদ না করলে ‘শত্রু’ বাঙালিরা, হুমকি পরেশের
গত বছরের অক্টোবরে দিল্লির ওই ফ্ল্যাটে মেরামতির কাজ শুরু হয়। সে সময়ই ওই ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে কঙ্কাল উদ্ধার হয়। শার্ট-নীল রঙের জ্যাকেট পরা একটি কঙ্কালটি বিছানার চাদর ও কম্বলে মোড়া ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফ্ল্যাটের মালিক বিক্রম সিংহকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিজয়ের নাম জানতে পারে পুলিশ। তদন্তে নেমে প্রথমে বিজয়ের কোনও খোঁজখবর পায়নি তারা। এমনকি, তার বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-পরিজনেরাও তার খোঁজ দিতে পারেনি। সে সময়ই সন্দেহ হয় পুলিশের। তদন্তের পর পুলিশে জানতে পারে, নিজের মোবাইল নম্বর বদলে ফেলেছেন বিজয়। এমনকি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত টাকা তুলে তা বন্ধও করে দিয়েছে। এর পর বিজয়ের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরেই গত ২৬ ডিসেম্বর বিশাখাপত্তনমে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের একটি দল। এর পর ১ জানুয়ারি পৌঁছে যায় হায়দরাবাদে। সেখান থেকেই গত রবিবার বিজয়কে গ্রেফতার করে দিল্লিতে নিয়ে এসেছে পুলিশ।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy