বাংলাদেশে অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের আমলে হিন্দু নিপীড়নের যে অভিযোগ উঠেছে তা খারিজ করে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর অভিযোগ, হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন, সবটাই ভারতে প্রচার করা ভুয়ো খবর। তাঁর মতে, ভারতের বিশেষত্ব হল ভুয়ো খবর প্রচার করা। প্রধান উপদেষ্টার ওই মন্তব্যে প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী মানবাধিকার সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। তাদের মতে, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ‘সত্যকে অস্বীকার করা হয়েছে’।
গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে পালাবদলের পরে সংখ্যালঘুদের উপরে লাগাতার আক্রমণের অভিযোগ উঠছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং সংখ্যালঘু সংগঠনগুলির অভিযোগ, হিন্দুরা তো বটেই, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষরাও। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিতে আমেরিকা গিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। সেখানে তিনি সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেন। গোটা বিষয়টিকে ভারতের কারসাজি বলে মনে করেন তিনি।
ইউনূসের কথায়, ‘‘এখন ভারতের অন্যতম বিশেষত্ব হল ভুয়ো খবর (ছড়ানো)।’’ রীতিমতো জোরের সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী হিংসার ঘটনা তেমন ভাবে ঘটছে না। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ নানা ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। আমরা সবাই জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিই।’’
ইউনূসের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আজ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টেও ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট থেকে পরবর্তী সময় চলমান হিন্দু সম্প্রদায়-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের তথ্য উল্লেখিত রয়েছে, যা আজও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত এবং বিচ্ছিন্ন ভাবে অব্যাহত’। ওই বিবৃতিতে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, গত বছরের ১ অক্টোবর আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে ইউনূস স্বীকার করেছিলেন ২০২৪ সালের ৫ অগস্টের পরে হিন্দুদের নির্যাতনের কথা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)