Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অসমে ১২ হাজার কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ

অসমে কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্য কোষাগারের ১২ হাজার কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি। তবে,এ কথা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়েছে শাসক দল। কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা খরচের হিসেব (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) নয়াদিল্লিতে না পাঠানোর অভিযোগে সম্প্রতি তরুণ গগৈ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিল বিজেপি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্ক ছড়াল অসমে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০৩:১০
Share: Save:

অসমে কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্য কোষাগারের ১২ হাজার কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি। তবে,এ কথা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়েছে শাসক দল।

কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা খরচের হিসেব (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) নয়াদিল্লিতে না পাঠানোর অভিযোগে সম্প্রতি তরুণ গগৈ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিল বিজেপি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্ক ছড়াল অসমে।

গত কাল বিজেপির অসম পর্যবেক্ষক মহেন্দ্র সিংহ অভিযোগ তোলেন, “১৪ বছর গগৈ সরকারের শাসনকালে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার হিসেব রাজ্য সরকার দিতে পারেনি। কংগ্রেসের অনেক নেতা-মন্ত্রী ওই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। অর্থ দফতর রয়েছে গগৈয়ের হাতে। তাই এ সবের দায় মুখ্যমন্ত্রীর।” তিনি হুঁশিয়ারির সুরে জানান, কেন্দ্রকে খরচের হিসেব না দেওয়া হলে, নয়াদিল্লির তরফে অসমকে অর্থ সাহায্য দেওয়া বন্ধও হতে পারে।

বিজেপির অভিযোগের স্পষ্ট জবাব দেননি গগৈ। তিনি বলেছেন, “সিএজি রিপোর্টে সব সময়ই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লেখা হয়। হিসেবে গোলমাল নতুন বিষয় নয়। এটা গুজরাতেও হয়। রাজ্যের সমস্ত দফতরের কাছে হিসেব চাওয়া হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস সচিব ভরত নরহ বলেন, “মহেন্দ্র সিংহ কোথা থেকে এই তথ্য পেলেন জানি না। এত বড় কেলেঙ্কারি হয়ে থাকলে, কেন্দ্রীয় সরকারই এ নিয়ে সরব হত। কেন্দ্রকে নিয়মিত হিসেব পাঠানো হয়।”

রাজ্যপাল পদ্মনাভন বি আচার্য বলেছেন, “যদি সত্যি কোনও কেলেঙ্কারি হয়ে থাকে, তবে জড়িতরা দায় এড়াতে পারবেন না। দুর্নীতির দায়ে জয়ললিতাও জেলে গিয়েছেন। দোষ প্রমাণিত হলে অসমেও তাই হবে।” রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল এআইইউডিএফ সভাপতি তথা ধুবুরির সাংসদ বদরুদ্দিন আজমলের বক্তব্য, “অসম সরকার যদি কেন্দ্রকে ১২ হাজার কোটি টাকার হিসেব জমা না দেয়, তা হলে কেন্দ্র কেন অসমকে ফের অর্থ সাহায্য দেবে! এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত করা হোক।”

বিজেপির অভিযোগের জেরে অসমের মুখ্যসচিব জিতেশ খোসলা অর্থ দফতরে জরুরি বৈঠক ডাকেন। সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের ৬২টি বিভাগের কর্তা। বৈঠকে খোসলা সমস্ত দফতরকে আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত রিপোর্ট এক মাসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। অর্থ দফতর সূত্রে খবর, বিভিন্ন বিভাগ থেকে ‘এ সি বিল’-এর মাধ্যমে তুলে নেওয়া দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকৃত বিল এখনও জমা পড়েনি। পাশাপাশি, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ হওয়া সাড়ে ছ’শো কোটি টাকার নথিও মেলেনি।

রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ মঞ্জুর করছে না বলে সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছিলেন তরুণ গগৈ। জবাবে বিজেপি সাংসদরা দাবি করেন, আগের বরাদ্দের খরচের হিসেব ঠিক সময়ে জমা দেয়নি অসম সরকার। সে জন্যই এখন কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য টাকা মঞ্জুর করছে না। গগৈ জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন খাতে চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যকে ৭ হাজার ১৬১ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু, এসেছে ২ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। এনরেগা, ইন্দিরা আবাস যোজনা, মিড ডে মিল, সর্বশিক্ষা অভিযানের জন্য কেন্দ্র ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ৫ হাজার ৩২৬ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। ওই টাকা খরচের হিসেব নয়াদিল্লিতে পাঠানোও হয়। কিন্তু, তার পরও কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। গগৈ বলেন, “চলতি অর্থবর্ষের কিছু হিসেব ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে জমা দিয়েছি। বাকিগুলিও দ্রুত পাঠানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assam government congress bjp money laundering
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE