প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ফাটল ধরল ‘নাগা পিপল্স ফ্রন্ট’ (এনপিএফ) শিবিরে। নাগাল্যান্ডে জোট সরকারে এনপিএফ-এর ৩৮, বিজেপি-র ৪, সংযুক্ত জনতা দল ও এনসিপি-র ১ জন করে এবং ৮ নির্দল বিধায়ক রয়েছেন। দলীয় সূত্রে খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিওর পক্ষে ২৩ জন এনপিএফ ও তিন বিজেপি বিধায়ক ঝুঁকেছেন। অনেকটাই কোণঠাসা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাননি নেফিয়ু। ফের তিনি রাজ্য রাজনীতির রাশ নিজের হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। লোকসভা ভোটে জেতার পর জেলিয়াংকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন রিও। তাঁর আশা ছিল, এনডিএ সরকারের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাবেন। কিন্তু, দু’বারের চেষ্টাতেও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী হতে পারেননি। ক্ষুব্ধ রিও রাজ্যে ফেরার পর জেলিয়াংকেই সরানোর ছক কষেন। রিও-র পক্ষ নিয়ে দলকে দুর্বল করার চেষ্টা ও দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে গত কাল রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী জি কাইটো আয়ে, সড়কমন্ত্রী তথা মুখ্য সচেতক নিয়েনু, পরিষদীয় সচিব ঝালেও রিও, পুখাই, পি কন্যাক, সেতোই, টি আয়েমিকে সাসপেন্ড করে এনপিএফ। মুখ্যমন্ত্রী জেলিয়াংয়ের নেতৃত্ব অস্বীকার করে রিও অনুগতরা জি কাইটো আয়েকে বিধায়ক দলের নেতা হিসেবে মনোনীত করেন। দলীয় মুখপাত্র করা হয়েছে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইমকং ইমচেনকে। আয়ের কাঁধে পরবর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। যদিও, দলের অন্য বিধায়ক ও নেতারা রিওর হঠকারী ও স্বৈরাচারী পদক্ষেপকে সমর্থন করছেন না। এনপিএফ সভাপতি সুরহোজেলি লেজিয়েৎসু এ নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। তবে রিওপন্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, দলীয় নেতৃত্ব ও মুখ্যমন্ত্রী বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুত জটিলতা কাটবে। প্রকাশ্যে না এসেও বিবৃতি দিয়ে আও শিবিরকে সমর্থন জানিয়েছেন লোকসভার সাংসদ রিও ও রাজ্যসভার সদস্য খেইখো জিমোমি। এই পরিস্থিতিতে কোহিমার একটি হোটেল জেলিয়াংপন্থী ও ডিমাপুরের একটি হোটেল রিওপন্থীদের দুর্গে পরিণত হয়েছে। সূত্রের খবর, তিন মন্ত্রী, ৫ পরিষদীয় সচিব-সহ ২৩ জন এনপিএফ বিধায়ক রিও শিবিরে যোগ দিয়েছেন। ওই সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। বিজেপি-র তিন বিধায়কও রিওকে সমর্থন করবেন বলে খবর। তবে বিজেপি জানিয়েছে, তারা এনপিএফ-এর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ঢুকবে না।
২০০৩ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত তিন দফায় নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রিও রাজ্যের অবিসংবাদী নেতা ছিলেন। জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। লোকসভা ভোটে জেতার পর মন্ত্রী হওয়ার আশায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিলেও মোদী সরকারে মন্ত্রিত্ব মেলেনি। রাজ্যেও তাঁর প্রভাব কমতে থাকে।
রিও-র কথায় চলতে রাজি হননি জেলিয়াং। চাপ সত্ত্বেও রিও-র জামাইকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দেননি মুখ্যমন্ত্রী। গত নভেম্বর থেকেই তাই জেলিয়াংকে পদচ্যূত করার ছক কষতে থাকেন রিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy