ফল ঘোষণার পর নয়াদিল্লির বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে কিরণ বেদী। ছবি: পিটিআই।
তিনি এলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হলেন, হেরে গেলেন।
২৫ দিনের সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক সফর। ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব। কিন্তু অচিরেই চুপসে গেলেন কেজরীবাল-ঝড়ে। আইআরএস অফিসার অরবিন্দ কেজরীবালের সামনে দাপট টিকল না আইপিএস অফিসার কিরণ বেদীর। দল তো হারলই, মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থী হয়েও বিজেপির ‘নিরাপদ’ আসন থেকে হার হল তাঁর। তবু বললেন, হারেননি।
গোটা প্রচারে বেদী এটাই বলে এসেছেন, তিনি জীবনে হারতে শেখেননি। ভোট ফলের পরেও এই কথাটি বলার চিত্রনাট্যটি তৈরি ছিল। সেটিই বললেন। রাজনীতিতে সদ্য প্রবেশ করেও ঠারে ঠোরে দায় চাপিয়ে দিলেন দলের অন্য নেতাদের উপর। বললেন, “আমি যদি নিজেকে উজাড় করে না দিতাম, তা হলে মনে করতাম হেরেছি। আমি হারিনি। বিজেপি হেরেছে। আর আমি বিজেপির অঙ্গ। বিজেপি এর পর্যালোচনা করবে।”
বুথ ফেরত সমীক্ষায় আভাস স্পষ্ট হতেই দল থেকে নির্দেশ গিয়েছিল, কোনও ভাবে পরাজয়ের দায় যেন নরেন্দ্র মোদীর কাঁধে না যায়। সেই নির্দেশ অবশ্য বেদীও পালন করেছেন অক্ষরে অক্ষরে। শেখানো বুলি আওড়ে বলেছেন, “নরেন্দ্র মোদী তো আর নির্বাচন লড়েননি। আমি মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ছিলাম। আমার নেতৃত্বেই দল লড়েছে।” তবু বিজেপির অন্য নেতাদের মতো কিরণ বেদীও জানেন, তাঁকে বিজেপিতে এনেও দলের কোনও লাভ হয়নি। কেজরীবালকে টক্কর দিতে বেদীকে এনে যে মোক্ষম চাল দিতে চেয়েছিল মোদী-অমিত শাহ জুটি, তা বুমেরাং হয়েছে। যে কারণে মোদীকেই ফের আসরে নামতে হয়েছিল। শেষ দিকে বিজেপি ভোট চেয়েছিল মোদীর নামেই। আর পরাজয় ঠেকাতে নামাতে হয়েছিল দলের গোটা সংগঠনকে। তাতেও ভরাডুবি ঠেকানো যায়নি। দিল্লির ‘নিরাপদ’ কৃষ্ণনগর আসন থেকে বেদী হেরেছেন ২ হাজারের বেশি ভোটে।
দু’দিন আগেই ঘনিষ্ঠ শিবিরে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি জিতলেও দল যদি হারে তা হলে চুকিয়ে ফেলবেন রাজনীতির পাঠ। বাক্স-প্যাঁটরা গুটিয়ে চলে যাবেন অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ডে। মন দেবেন অধ্যাপনায়। কিন্তু এখন তো তিনি নিজেও হারলেন। প্রচারের সময়ে কেজরীবালকে বিধানসভায় বিতর্ক করার চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন। সেই সৌভাগ্য আর হল না কিরণ বেদীর। মুখ্যমন্ত্রীও হলেন না, বিরোধী দলনেত্রীও নয়। এ বারে কি তবে রাজনীতিতে ইতি টানবেন? জবাবে জানাচ্ছেন, এখনও তিনি কাজ করে যেতে চান। কিন্তু কত দিন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy