ছোট মন্ত্রিসভা গড়েই কর্মদক্ষতা বাড়াতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। আগামিকাল শপথ গ্রহণের চব্বিশ ঘণ্টা আগে এই কথাটিই জানিয়ে দেওয়া হল স্বয়ং মোদীর পক্ষে। এনডিএ-র এক সূত্রের মতে, আগামিকাল তিন ডজনের মতো মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন।
রবিবার রাত দশটা নাগাদ ভাবী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রথম সরকারি বিবৃতি দিয়ে বলা হয় গত চার দিন ধরে নরেন্দ্র মোদী নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য ব্যস্ত ছিলেন। এই মন্ত্রিসভা গঠনের সময় মোদী সবার প্রথমে যে নীতি গ্রহণ করেছেন, সেটি হল ‘মিনিমাম গভর্নেন্স, ম্যাক্সিমাম গভর্নেন্স।’ কর্মসংস্কৃতি ও প্রশাসনের সাবেকি শৈলী বদলানোর জন্য অনেকগুলি মন্ত্রককে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উদ্দেশ্য দক্ষতার পাশাপাশি তাদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো।
শপথ অনুষ্ঠানকে একটি মেগা-ইভেন্টে পরিণত করেছেন মোদী। এ বারে শপথ নেওয়ার আগে মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে তাঁর ভাবনা কী, সেটিও প্রকাশ্যে এনে আর একটি নজির গড়লেন তিনি। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে আজ দুপুরেই জানিয়ে দেওয়া হয়, কাল শপথের আগে আজ রাতেই বিজেপির পক্ষ থেকে মন্ত্রীদের তালিকা দিয়ে দেওয়া হবে।
নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য মুখ
বিজেপি সূত্রের মতে, মোদীর মন্ত্রিসভায় বিগ-ফোরে রাজনাথ সিংহ, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনাথ সিংহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পেলে জগত্প্রকাশ নাড্ডা দলের পরবর্তী সভাপতি হতে পারেন। অরুণ জেটলি পেতে পারেন অর্থ মন্ত্রক। সুষমার নাম বিদেশ মন্ত্রকের জন্য ভাবা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকটি নিয়ে এখনও টানাপড়েন চলছে। মুরলীমনোহর জোশীকে কোন মন্ত্রক দেওয়া হবে, তা এখনও স্থির হয়নি। লালকৃষ্ণ আডবাণীকে ফোন করে মোদী জানিয়েছেন, শপথের পর রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে উপস্থিত থাকতে। আডবাণী যে মন্ত্রিসভায় সামিল হচ্ছেন না, সেটি স্পষ্ট।
মহারাষ্ট্র থেকে তিন জন মন্ত্রী হতে পারেন। গোপীনাথ মুন্ডে, নিতিন গডকড়ী ও অনন্ত গীতে। এর মধ্যে নিতিন গডকড়ী পেতে পারেন পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রক। মোদী যে ভাবে বিভিন্ন মন্ত্রককে মিশিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন, তাতে রেল, পরিবহণ, জাহাজের মতো মন্ত্রককে মিশিয়ে একটি মন্ত্রক করা হতে পারে। অনন্ত গীতে শিবসেনার নেতা। এ ছাড়াও রবিশঙ্কর প্রসাদকে আইন মন্ত্রক দেওয়ার কথা চলছে। বাণিজ্য পীযূষ গয়ালকে। তথ্য ও সম্প্রচারের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করে স্মৃতি ইরানিকেও মন্ত্রিসভায় রাখা হতে পারে। বেঙ্কাইয়া নাইডুকে কৃষি মন্ত্রক দেওয়া হতে পারে। এই মন্ত্রকের সঙ্গে উপভোক্তা সংক্রান্ত দফতরও জুড়ে দেওয়া হতে পারে। বিদ্যুত্, কয়লা, অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রককে মিশিয়ে একটি করা হতে পারে। ভাঙ্গা হতে পারে খনি ও ইস্পাত মন্ত্রককে। বাণিজ্য মন্ত্রকের একটি অংশ বিদেশের সঙ্গে মেশানোরও প্রস্তাব রয়েছে।
শরিক ও বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সদানন্দ গৌড়া, হংসরাজ আহির, হর্ষবর্ধন, কলরাজ মিশ্র, উমা ভারতী, মেনেকা গাঁধী, কিরণ রিজাজু, সদানন্দ সোনোয়াল, নরেন্দ্র সিংহ তোমর, থাওরচাঁদ গহলৌত, পুনম মহাজন, অশোক গজপতি রাজু, পরেশ রাওয়াল, অনন্ত কুমার, মুখতার আব্বাস নকভি, অনুরাগ ঠাকুর, রামবিলাস পাসোয়ান, প্রাক্তন সেনা প্রধান ভি কে সিংহ, মুম্বইয়ের প্রাক্তন কমিশনার সত্যপাল সিংহের নামও শোনা যাচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদের জন্য শোনা যাচ্ছে অজিত দোভালের নামও। নৃপেন্দ্র মিশ্রের নাম প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি পদে। কাল শপথের পর কাজ শুরু করে এঁদের নিয়োগ করবেন ভাবী প্রধানমন্ত্রী।
স্পিকার পদ নিয়ে জট এখনও কাটেনি। সে পদে জোশীর নাম নিয়ে ভাবনা চলছিল। আবার কারিয়া মুন্ডা মোদীর সঙ্গে দেখা করার পর তাঁর নাম নিয়েও জল্পনা শুরু হয়। সুমিত্রা মহাজনের নামও সেই পদের জন্য বিবেচনায় এসেছে। কিন্তু সেই বিষয়টি পরে স্থির হবে শপথের পরে।