Advertisement
E-Paper

জেডিইউ বিদ্রোহে মদত বিজেপির

শেষ পর্যন্ত আগামী রাজ্যসভা নির্বাচনে দলের বিধায়কদের বিদ্রোহ দমন করে বিক্ষুব্ধ দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে ব্যর্থ হলেন নীতীশ কুমার। একটি আসনে জেডিইউয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি শরদ যাদব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেলেও অন্য দু’টি আসনে নীতীশের ‘নিজস্ব পছন্দ’-এর দুই প্রার্থী তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে দাঁড়িয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০৩:৩৬

শেষ পর্যন্ত আগামী রাজ্যসভা নির্বাচনে দলের বিধায়কদের বিদ্রোহ দমন করে বিক্ষুব্ধ দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে ব্যর্থ হলেন নীতীশ কুমার। একটি আসনে জেডিইউয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি শরদ যাদব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেলেও অন্য দু’টি আসনে নীতীশের ‘নিজস্ব পছন্দ’-এর দুই প্রার্থী তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে দাঁড়িয়ে।

আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরিয়ে যেতেই তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়েছে বিজেপিও। গত কয়েকদিন ধরে চুপচাপ জল মেপেছেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। আজ বিকেলের পর থেকে তাঁরা বিক্ষুব্ধ জেডিইউ বিধায়কদের শক্তি যাচাইয়ে নেমে পড়েছেন। ২৩২ সদস্যের বিধানসভায় এই মুহূর্তে বিজেপি-র বিধায়ক সংখ্যা ৮৪। দু’জন নির্দল তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন। মোট ৮৬। বিক্ষুব্ধ জেডিইউ বিধায়কদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বিধায়ক রয়েছেন। তবে বিজেপি সূত্রের হিসেব, এই মুহূর্তে কমপক্ষে ৩৬ জন বিক্ষুব্ধ জেডিইউ বিধায়ক নীতীশের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহে সামিল। সে ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধদের যদি বিজেপি সমর্থন করে তবে নীতীশের পছন্দের দুই প্রার্থী, লেখক পবন বর্মা এবং কবি গুলাম রসুল বালিয়াভি কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়বেন। হেরে গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। তবে আজ শেষ মুহূর্তে বিজেপি তাঁদের ‘নির্দল’ প্রার্থী দিলীপ জায়সবালকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

বিজেপি এক সূত্রের বক্তব্য, “জেডিইউ-বিক্ষুব্ধরা যদি তাঁদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিত, তাহলে জায়সবাল লড়াইয়ে থাকতেন। এখন তো নীতীশের লড়াই জেডিইউয়ের সঙ্গেই। আমরা নীতীশের বিরুদ্ধে।”

উল্লেখ্য, নীতীশের থেকে শরদ যাদবকেও বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে বিজেপি। যে কারণে তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে রেখে সরাসরি রাজ্যসভায় পাঠাতে বিজেপি পরোক্ষে সাহায্যই করল।

এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন জেডিইউ শিবিরের তরফে মন্ত্রী শ্যাম রজক বলছেন, “বিহারে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছেন সুশীল মোদী।” তিনি বলেন, “সুশীল মোদীর ফোনের কললিস্ট বের করলেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে।” বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, বিজেপির নন্দকিশোর যাদব আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই অভিযোগ খারিজ করেছেন। তাঁর কথায়, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। নিজেদের বিধায়কদের ওঁরা সামলাতে পারছেন না।” বিজেপির মুখপাত্র বিনোদ নারায়ণ ঝায়ের বক্তব্য, “নীতীশকে চাপে রাখাই আমাদের কাজ। লোকসভা নির্বাচনে পর্যুদস্ত হওয়ার পরে নীতীশের জেডিইউকে রাজসভার নির্বাচনেও আমরা লড়াই দিতে চাই। সেই কারণেই নীতীশকে ময়দান ছাড়ার প্রশ্ন নেই।”

পরিস্থিতি এমন মোড় নেওয়ায় দিশেহারা জেডিইউ। আজ জেডিইউ রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠ নারায়ণ সিংহ পরোক্ষে আরজেডির সমর্থন চেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা এবং আরজেডি, দুই দলই ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা আরজেডির সমর্থনকে স্বাগত জানাব।”

উল্লেখ্য, কয়েকি দন আগে জীতনরাম মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের সময় নীতীশ কুমাররা যে ভাবে আরজেডি ছেড়ে বেরিয়ে আসা সম্রাট চৌধুরীদের মন্ত্রী করেছেন তাতে প্রবল ক্ষুব্ধ লালুপ্রসাদ। তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, বিধানসভায় জেডিইউ সরকারকে আস্থা ভোটে আরজেডি সমর্থন করেছিল।

নীতীশ তার মর্যাদা দিলেন না। এরপর নীতীশের সম্মান বাঁচানোর দায় আরজেডি আর নেবে না। দলের মুখপাত্র মনোজ ঝা বলেন, “আজ সবে মনোনয়ন প্রত্যাহার হল। ১৯ জুন ভোট। এই নিয়ে দলের প্রধান ভাবনাচিন্তা করছেন। তবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত হবে না যাতে বিজেপির সুবিধা হয়।”

আরজেডি-র এক সূত্রে কথায়, আগ বাড়িয়ে লালু কিছু করবেন না। ধর্মনিরপেক্ষতার খাতিরে এ বার নীতীশ তাঁর অহংকার ছেড়ে লালুর কাছে এসে সমর্থন চাইলেই তা দেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে আরজেডি-র বিধায়ক সংখ্যা ২১, কংগ্রেস-৪, নির্দল-৩ ও সিপিআই-১। আর জেডিইউ-১১৭। শেষ পর্যন্ত লালু যদি নীতীশের পিছনে দাঁড়ান তাহলে অ-বিজেপি দলগুলির মিলিত শক্তি হবে ১৪৬। কিন্তু বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের দলে যদি ৩০-৩১ জন বিধায়কও থাকেন, তবে নীতীশের সম্মান লালুপ্রসাদও বাঁচাতে পারবেন না।

jdu bjp patna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy