পৃথক জেলার দাবিতে ডাকা ১০০ ঘণ্টার ডিমা হাসাও বন্ধ শেষ হল। অ-ডিমাসা উপজাতিদের জন্য পৃথক জেলার দাবিতে বুধবার থেকে বন্ধের আহ্বান করেছিল ‘ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরাম’ এবং ‘ইন্ডিজেনাস উওমেন ফোরাম’।
প্রথম দু’দিন শান্তি থাকলেও, তৃতীয় দিন উত্তেজনা ছড়ায়। বৃহস্পতিবার মাহুরে একটি মালগাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ প্রহরায় তার পরের দিন সেটি সরাতে গেলে ঝামেলা শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক মহিলা কনস্টেবল গুরুতর জখম হন। পাল্টা লাঠিচার্জে ৭ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়। ৫ জনকে গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ধৃতদের ছাড়াতে থানার সামনে ভিড় জমায় শ’পাঁচেক মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের। ওই রাতেই লামডিং ও বাগেটারের মধ্যে প্রায় ১ কিলোমিটার রেল লাইন উপড়ে ফেলে আন্দোলনকারীরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় রেলের একটি সেতুও।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌগত লাহিড়ি জানিয়েছেন, বন্ধের প্রথম দিনেই ওই রুটে সমস্ত যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। তৃতীয় দিন পণ্য বোঝাই একটি মালগাড়ি সুরক্ষার জন্য হাফলং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। রেলের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, নষ্ট করে দেওয়া রেল লাইন সারানো হয়েছে। আজই ওই লাইনে ট্রেন চলাচল করেছে।
এ দিকে, আন্দোলনকারীরা কাল রাতে আচমকা হামলা চালায় হাফলং সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসে। দরজা-জানলায় ইট-পাথর ছুড়তে থাকে। তবে কেউ জখম হয়নি। পুলিশ সুপার বেদান্তমাধব রাজখোয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
‘ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরাম’-এর সভাপতি ডেভিড কেইডম জানিয়েছেন, ৩ বছর আগে উত্তর কাছাড়ের নাম বদলে ডিমা হাসাও (অর্থাৎ ডিমাসাদের অঞ্চল) হওয়ায় তাঁরা আশঙ্কায় ভুগছেন।
তিনি জানান, সে কারণেই এই জেলাকে ভাগ করে অ-ডিমাসা উপজাতিদের জন্য পৃথক অঞ্চলের দাবি তোলা হয়েছে। সংবিধান মেনেই তাঁরা এই দাবি করছেন বলে উল্লেখ করেন কেইডম। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দেন, এ নিয়ে সরকার দ্রুত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না-করলে তাঁরা জেলা জুড়ে অনির্দিষ্ট কালের বন্ধ ডাকবেন।
এই হুমকির জেরে ডিমা হাসাওয়ের পাশাপাশি উদ্বেগ ছড়িয়েছে বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং মণিপুরে। কারণ, বিরাট এই অঞ্চলের পণ্য সরবরাহ ও যাত্রী পরিবহণের জীবনরেখা ডিমা হাসাওয়ের পাহাড়ই।
নাগা লঙ্কাগাছ নিয়ে ফিরছেন তাই রাজকন্যা
নিজস্ব সংবাদদাতা, গুয়াহাটি, ২ মার্চ: তিন দিনের নাগাল্যান্ড সফরে এসে ‘নাগা লঙ্কা’ আর ‘নাগা শুঁটি’র চারাগাছ, বীজ নিয়ে নিজের ঘরে ফিরলেন তাইল্যান্ডের রাজকন্যা মহাচক্রী সিরিন্ধর্ন।
২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সেখানে পৌঁছন। বাগান তৈরি, চাষবাসে উৎসাহী রাজকন্যা এ দেশে পৌঁছনোর আগেই ‘কিং চিলি’ আর ‘ইয়াংচুক’ (সিম জাতীয় শুঁটি)-এর বীজ, চারাগাছের বরাত দিয়েছিলেন। রাজ্যে প্রতি কিলোগ্রাম নাগা লঙ্কার দাম ৩০০ টাকা হলেও, বিশ্বের বাজারে তার দর এখন প্রায় ৪ হাজার টাকা। রাজকন্যার ইচ্ছা, তাঁর প্রাসাদের বাগানে ওই লঙ্কার চাষ করবেন। প্রাসাদের কৃষিজমির জন্য তিনি নাগাল্যান্ডের বাঁশও নিয়ে গিয়েছেন। তাইল্যান্ডে তাঁর রাজপ্রাসাদের সামনের বাগানে নিজের হাতে হরেক রকম গাছ বসিয়েছেন রাজকন্যা। ফল, ফুলের গাছ তো বটেই, নানা রকম সব্জিও হয় সেই বাগানে। এ বার নাগাল্যান্ডের লঙ্কাগাছ, বাঁশও থাকবে রাজকন্যার পছন্দের সেই বাগানে।
রাজভবনে না-থেকে মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিওর হোটেলের আতিথ্যে ছিলেন সপারিষদ রাজকন্যা। ‘আঙ্গামি নাগা সেক্রেমাই’ উৎসবে বিভিন্ন উপজাতির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন তিনি। কিসামায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংগ্রহশালা ও কোহিমায় বিশ্বযুদ্ধ স্মারকও ঘুরে দেখেন। খোনোমায় রাজকন্যার সফর ঘিরে স্মারক বসানো হয়েছিল। সিরিন্ধর্নই সেটির উদ্বোধন করেন। ঘুরে দেখেন খোনোমা দূর্গ। নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও অনেকটা সময় কাটান রাজকন্যা।
ডিমাপুরে ‘নাগাল্যান্ড ব্যাম্বু রিসোর্স সেন্টার’ ঘুরে দেখেন। রাজকন্যা জানান, নাগাল্যান্ডের সঙ্গে দক্ষতা, গবেষণা, প্রকল্প পরিকল্পনা ও ছাত্রছাত্রী বিনিময়ের বিষয় নিয়ে তিনি চিন্তা ভাবনা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy