পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই তিনি ‘ড্রিমগার্ল’-এ মজে! অল্প বয়সের সেই মুগ্ধতা এখনও আছে মনে। আর তাই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কূট বৈঠক করার আগে সকালে হোটেলের ঘরে হেমা মালিনীর সঙ্গে এক ঝলক দেখা করে নিলেন মিঞা মহম্মদ নওয়াজ শরিফ।
মথুরা থেকে জিতে দিল্লি এসেছেন হেমা। ধর্মেন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে হাজির ছিলেন গতকালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। তাঁরা যে হোটেলে উঠেছেন, ঘটনাচক্রে সেখানেই উঠেছিলেন শপথ অনুষ্ঠানের সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য অতিথি পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজও। পাক হাইকমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর পেয়েই নায়িকা-সকাশে যান নওয়াজ। উপস্থিত ছিলেন ‘বীরু’ও। তিন জনের মধ্যে কিছুক্ষণ নির্ভেজাল আড্ডাও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ধর্মেন্দ্র-হেমাকে পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করেছেন নওয়াজ।
দীর্ঘ দিন পরে শরিফের এই সফরে নয়াদিল্লি স্বাক্ষী থাকল তাঁর বলিউড প্রেমেরও। শুধু হেমা বা ধর্মেন্দ্রই নন, দুপুরে তিনি বেশ কিছুটা সময় কাটিয়েছেন শত্রুঘ্ন সিন্হার সঙ্গেও। নওয়াজ দেখা করতে চান শুনে দুপুরে শত্রুঘ্ন নিজেই চলে আসেন তাঁর হোটেলে। নিচে তখন অন্তত দেড়শো জন সাংবাদিক পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য পাওয়ার জন্য হা পিত্যেশ করছেন। আর তিনি দিব্যি নিজের ঘরে ‘বিহারি বাবুর’ সঙ্গে গল্পে মগ্ন! বিরাট বড় বাক্সে তাঁর জন্য উপহারও নিয়ে এসেছিলেন শত্রুঘ্ন।
বলিউড যদি প্রথম প্রেম হয়, তবে শরিফের দ্বিতীয় প্রেম নির্ঘাৎ পুরনো দিল্লি। পাক সেনা, আইএসআই-কে বুঝিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মাত্র দেড় দিনের জন্য দিল্লি আসার ‘ভিসা’ জোগাড় করেছেন নওয়াজ। আজ তাই সময় নষ্ট না-করে ভোরবেলা থেকেই তিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন। অনেক ক্ষণ ধরে ঘুরেছেন জামা মসজিদ, লাল কেল্লা। ইচ্ছা ছিল চাঁদনি চকে নেমে ঘুরে দেখবেন চারপাশ, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে এবং সময়াভাবে সেটা সম্ভব হয়নি। কালো মার্সিডিজের ভিতর থেকেই ঘোলে মিটিয়েছেন স্বাদ। তবে জামা মসজিদে গিয়ে অনেক ক্ষণ কথা বলেছেন সেখানকার শাহি ইমাম বুখারির সঙ্গে। বুখারি পরে জানিয়েছেন, “ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে উনি এসেছেন। এতে আমরা খুবই খুশি।” আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে শরিফ ছেলেকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন দিওয়ান-ই-আম, দিওয়ান-ই-খাস, মীনা বাজারের মুঘল রোম্যান্স।
আসার পর থেকেই যে তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ীর অভাব অনুভব করছেন এ কথা কিন্তু বার বার বুঝিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। গতকাল এবং আজদু’দিনই উল্লেখ করেছেন ১৯৯৯ সালের লাহৌর বাসযাত্রার স্মৃতি। কালই বিদেশ মন্ত্রককে জানানো হয় যে বাজপেয়ীর সঙ্গে এক বার দেখা করতে যাবেন তিনি। সেই মতো ব্যবস্থা করা হয়। কথা অনুযায়ী, দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে তাঁর কনভয় দৌড়য় কৃষ্ণ মেনন মার্গে বাজপেয়ীর বাড়ি। সেখানে সকাল থেকেই বাজপেয়ীর পাশে ছিলেন জামাতা রঞ্জন ভট্টাচার্য। চলচ্ছক্তিহীন হয়ে রয়েছেন বাজপেয়ী। নির্বাকও। তবুও তাঁর সঙ্গে এক বার দেখা করে পুরনো স্মৃতিকেই হয়তো সম্মান দিতে চাইলেন নওয়াজ শরিফ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy