Advertisement
E-Paper

দিল্লি জয়ে এ বার আসরে অমিত শাহ

মোদী-জাদু টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে এ বারে দিল্লি বিজেপির হাল ধরলেন সেনাপতি অমিত শাহ। অরবিন্দ কেজরীবালকে টক্কর দিতে কিরণ বেদীকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে যে মোক্ষম চালটি দিতে চেয়েছিলেন মোদী-শাহ জুটি, তা যে কাজে দিচ্ছে না তা বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের নিজস্ব সমীক্ষাতেই দিল্লি জয়ের লড়াইয়ে কেজরীবালের থেকে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৭
দিল্লিতে বিজেপির দফতরে কিরণ বেদী। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।

দিল্লিতে বিজেপির দফতরে কিরণ বেদী। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।

মোদী-জাদু টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে এ বারে দিল্লি বিজেপির হাল ধরলেন সেনাপতি অমিত শাহ।

অরবিন্দ কেজরীবালকে টক্কর দিতে কিরণ বেদীকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে যে মোক্ষম চালটি দিতে চেয়েছিলেন মোদী-শাহ জুটি, তা যে কাজে দিচ্ছে না তা বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের নিজস্ব সমীক্ষাতেই দিল্লি জয়ের লড়াইয়ে কেজরীবালের থেকে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। কিন্তু খোদ রাজধানী হাতছাড়া হয়ে গেলে যে মোদী-জাদুই প্রশ্নের মুখে পড়বে, সেটি জানেন সকলে। তাই গত কাল অরুণ জেটলির নেতৃত্বে আধা ডজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নির্বাচনের কাজে লাগানো হয়েছে। আর আজ মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ নিজে দিল্লি দফতরে বসা শুরু করলেন। একই সঙ্গে দ্বিমুখী কৌশল নিতেও শুরু করল দল। এক, কেজরীবালকে তীব্র ভাষায় লাগাতার আক্রমণ করা। দুই, কংগ্রেস যাতে কেজরীবালের ভোট কাটতে পারে, তার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

কথা ছিল আজ সকালে অমিত শাহ ১৫ মিনিটের জন্য দিল্লি বিজেপি দফতরে যাবেন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু প্রচারের কৌশল দেখে এতটাই ক্ষুব্ধ হন তিনি, সেই বৈঠক দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে। বিজেপি সূত্রে খবর, এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা অমিত শাহের কোপে পড়েন। কিরণ বেদীকে দলে এনে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণার পর যে নেতারা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছেন, তাঁদের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। ধর্মেন্দ্র প্রধান থেকে সতীশ উপাধ্যায়- অমিত শাহের রোষের শিকার হন সকলেই। সভাপতির নির্দেশ, অবিলম্বে সব নেতাদের প্রতিটি বুথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে হবে। বুথের দায়িত্বে থাকা এক এক জন নেতাকে কুড়িটি করে বাড়িতে আগামী দশ দিনে অন্তত তিন বার গিয়ে বোঝাতে হবে, কেন বিজেপিকে ভোট দেওয়া উচিত। এ ক’দিনে আড়াইশোর মতো ছোট-বড় সভা করতে হবে। ভিন রাজ্য থেকে ১২০ জন সাংসদের একটি টিমও গড়া হয়েছে, যাঁরা গোটা প্রক্রিয়ার উপরে নজরদারি করবেন। শিবরাজ সিংহ চৌহান, মনোহরলাল খট্টরদের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও দিয়ে প্রচার করানো হবে।

বিজেপির এক নেতা বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের দলের কৌশল দুটি। এক, কংগ্রেস যদি একটু শক্তিশালী হয়, তাহলে আমাদের লাভ। যে ভাবে রাহুল গাঁধী সক্রিয় হচ্ছেন, তাতে বিজেপিরই মঙ্গল। কারণ, বিজেপি বিরোধিতার পরিসরে কংগ্রেসের শক্তি বাড়লে আম আদমি পার্টিকে দুর্বল হবে। জম্মু-কাশ্মীর নির্বাচনেও এই কৌশল নেওয়া হয়েছিল। সেখানেও দলের লক্ষ্য ছিল, ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স যেন এতটা দুর্বল না হয়, যাতে মুফতির দল পিডিপি একার জোরে সরকার গড়ে ফেলে। সে ক্ষেত্রে বিজেপি সরকার গড়ার অবস্থাতেই থাকত না। আর দলের দ্বিতীয় কৌশল হল, লাগাতার কেজরীবালকে সর্বশক্তি দিয়ে বিঁধে যাওয়া।”

সেই কৌশলের অঙ্গ হিসেবে আজ থেকে ভোট পর্যন্ত রোজ কেজরীবালের উদ্দেশে পাঁচটি করে প্রশ্ন তুলে তাঁর জবাব চাওয়া হবে ও জনতার সামনে তাঁর মুখোশ খোলার চেষ্টা হবে। আজ কেন্দ্রের দুই মন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডি ও নির্মলা সীতারমণকে দিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন তোলা হয়। এক, অতীতে কংগ্রেসের কোনও সমর্থন না নেওয়ার কথা বলেও শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভেই কি কেজরীবাল তাদের সমর্থন নিয়েছিলেন? দুই, ভোটের আগে শীলা দীক্ষিতের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেও কেন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সে পদক্ষেপ করলেন না? তিন, লালবাতি থেকে নিরাপত্তা না নেওয়ার কথা বললেও কেন ভুরি-ভুরি নিরাপত্তা নিলেন? চার, প্রথম দিকে মেট্রো, সাধারণ গাড়িতে সফর করে পরে এসইউভি ছাড়া ঘোরেন না কেন? পাঁচ, নিজেকে আম আদমি বলেও কেন প্রাইভেট বিমান বা যাত্রীবাহী বিমানে প্রথম শ্রেণি ব্যবহার করেন?

রুডির প্রশ্ন, “নিজেকে যিনি আগাগোড়া আম আদমি বলে মেলে ধরেছেন, তিনি এ বছর ২৬ জানুয়ারিতে আমন্ত্রণ না পাওয়ার জন্য গোঁসা করেছেন? কেন তিনি আম আদমির মতো টিকিট কেটে দেখতে গেলেন না? অণ্ণা হজারেকে ধোঁকা দিয়েছেন। এ বারে মানুষকেও ধোঁকা দিচ্ছেন।”

amit shah delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy