Advertisement
E-Paper

দেশদ্রোহের অভিযোগ থেকে মুক্ত কাশ্মীরি ছাত্ররা

প্রবল বিতর্কের মুখে পড়ে অবশেষে কাশ্মীরি ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ তুলে নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি নষ্টের যে অভিযোগ রয়েছে, তার তদন্ত চলবে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫৭

প্রবল বিতর্কের মুখে পড়ে অবশেষে কাশ্মীরি ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ তুলে নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি নষ্টের যে অভিযোগ রয়েছে, তার তদন্ত চলবে।

ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার। এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন মেরঠের স্বামী বিবেকানন্দ শুভার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা বাধে। ওই ম্যাচে ৬৭ জন কাশ্মীরি ছাত্র পাকিস্তানের হয়ে গলা ফাটিয়েছিল। এই নিয়েই দু’দল ছাত্রের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। কাশ্মীরি ছাত্রদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি নষ্টেরও অভিযোগ ওঠে। পর দিনই ওই ছাত্রদের তিন দিনের জন্য সাসপেন্ড করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর পাক দলকে সমর্থন করার জন্য ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, পড়শি দেশকে ক্রিকেট ম্যাচে সমর্থন করার জন্য দেশদ্রোহের মতো কঠোর অভিযোগ দায়ের করা হল কেন? এতগুলো ছাত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে এ ভাবে ছিনিমিনি খেলতে পারে উত্তরপ্রদেশ সরকার? জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বিষয়টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে তাঁর ফোনে এ নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানান ওমর। কাশ্মীরি ছাত্রদের সমর্থনে মুখ খোলে ইসলামাবাদও।

কালই পাক সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, চাইলে ওই ছাত্ররা পাকিস্তানে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। জম্মু-কাশ্মীরের বিরোধী দলনেত্রী মুফতি মহমম্দ সইদ আবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁকে ফোনে করেন। ঘটনাপ্রবাহ দেখে নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছ থেকে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে তারা।

এই টালবাহানার মধ্যেই দেশদ্রোহের অভিযোগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও স্বীকার করে নেন, দেশদ্রোহের অভিযোগ আনাটা ওই ছাত্রদের পক্ষে অতি কঠোর শাস্তি হয়ে যাবে। তাঁর কথায়, “মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে আমি এ বিষয়ে কথা বলি। ওই ছাত্ররা বোধহয় নিজেরাও ভাবেনি যে জল এত দূর গড়াবে। আমার মনে হয়, ওই ছাত্রদের আরও লঘু কোনও শাস্তি প্রাপ্য।”

মেরঠের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য মনজুর আহমেদ যদিও জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা পুলিশে কোনও এফআইআরই দায়ের করেননি। পুলিশই অতিসক্রিয় হয়ে ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছিল। পুলিশ অবশ্য সে কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। মেরঠের এসপি পি কে গর্গ স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারই সে দিন অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। যার ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়েই পুলিশ দেশদ্রোহের অভিযোগ আনে।

তবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের আজ সমালোচনা করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত বাজপেয়ী আজ বলেন, “অখিলেশ সরকার শুধু ভোটব্যাঙ্ক বোঝে। দেশকে যারা অসম্মান করল, তাদের এ ভাবে ছেড়ে দেওয়াটা কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই সিদ্ধান্ত বিজেপি কখনওই মেনে নেবে না।”

তিন দিন কেটে গেলেও এখনও হস্টেলে ঢুকতে পারছেন না সাসপেন্ড হওয়া কাশ্মীরি ছাত্ররা। নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে এক ছাত্র বললেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা কিছু শুনতেই চাইলেন না। যে দিন হস্টেল থেকে বার করে দেওয়া হল, সে দিন আমাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ ছিল, যাদের কাছে কোনও টাকা-পয়সা ছিল না।

কোনও কথা না শুনে আমাদের হস্টেল থেকে বার করে দেওয়া হল। সাসপেনশনের সময় পেরিয়ে গেলেও আমাদের হস্টেলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।” বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন কর্তৃপক্ষ।

pro-pakistan kashmiri student cricket suspend
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy