E-Paper

ওবিসি না ব্রাহ্মণ, যোগীরাজ্যে বিজেপি সভাপতি ঘিরে চর্চা

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ক্ষত্রিয় সমাজের। বর্তমান রাজ্য সভাপতি চৌধরি ভূপেন্দ্র সিংহ জাঠ সমাজের। মূলত বছর কয়েক আগে জাঠ সম্প্রদায়ের অসন্তোষের কথা মাথায় রেখে ভূপেন্দ্রকে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৭
যোগী আদিত্যনাথ।

যোগী আদিত্যনাথ। — ফাইল চিত্র।

রাত পোহালেই উত্তরপ্রদেশে রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। ওবিসি না ব্রাহ্মণ না ক্ষত্রিয়— আগামী ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে জাতপাতের ভিত্তিতে কোন সমাজের লোক এ বার উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে বিজেপি সভাপতি হতে চলেছেন, তা নিয়ে এখন চর্চা তুঙ্গে। সূত্রের মতে, দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য পঙ্কজ চৌধরি। ওবিসি সমাজের ওই নেতাকে আজ লোকসভায় অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ নিয়ে আলোচনার সময়ে সভাপতি হওয়ার আগাম অভিনন্দন জানান কংগ্রেস সাংসদ দীপেন্দ্র হুডা।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ক্ষত্রিয় সমাজের। বর্তমান রাজ্য সভাপতি চৌধরি ভূপেন্দ্র সিংহ জাঠ সমাজের। মূলত বছর কয়েক আগে জাঠ সম্প্রদায়ের অসন্তোষের কথা মাথায় রেখে ভূপেন্দ্রকে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল। এ যাত্রায় তাই জাতপাতের সমীকরণকে মাথায় রেখে ওবিসি তথা পিছিয়ে পড়া সমাজ অথবা ব্রাহ্মণ তথা উচ্চবর্ণের কোনও নেতাকে রাজ্য সভাপতি করার কথা ভাবা হয়েছে। ব্রাহ্মণ সমাজের যে দু’জনের নাম দৌড়ে রয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ হরিশ দ্বিবেদী ও রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক নেতা গোবিন্দ শুক্ল। বিজেপি উচ্চবর্ণের দল হলেও রাজ্য রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরে ব্রাহ্মণ সমাজকে উপেক্ষা করার অভিযোগ রয়েছে। তাই উচ্চবর্ণের ভোটের কথা মাথায় রেখে ব্রাহ্মণ মুখকে রাজ্য সভাপতি করার দাবি রয়েছে দলের মধ্যে।

কিন্তু বিজেপির সমস্যা হল, উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যায় ওবিসি সমাজের প্রতিনিধিত্ব পঞ্চাশ শতাংশ ছাপিয়ে যাওয়া। রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে ভরসা তাই ওবিসি জনসমর্থন। গত লোকসভা নির্বাচনেই স্পষ্ট, রাজ্যে বিজেপির পিছন থেকে ওবিসি সমর্থন অনেকটাই সরে গিয়েছে। যা নতুন করে ফিরে পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। যে কারণে এ বার ওবিসি কোনও নেতাকেই রাজ্য সভাপতি করার পক্ষপাতী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সভাপতি দু’জনেই উচ্চবর্ণের হলে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই মুখ্যমন্ত্রী উচ্চবর্ণের ও রাজ্য সভাপতিকে ওবিসি সমাজ থেকে বেছে নিয়ে ভারসাম্যের বার্তা দেওয়ার পক্ষপাতী দল।’’

দৌড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরি। তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থাভাজন হলেও মৃদুভাষী এই নেতার স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া জল্পনায় রয়েছেন ওবিসি নেতা ধর্মপাল লোধা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বনওয়ারি লাল বর্মা। দু’জনেই লোধা সম্প্রদায়ের। ওই সমাজের প্রায় ৮-১০ শতাংশ ভোট রয়েছে গোটা উত্তরপ্রদেশে। এঁদের মধ্যে এক জন রাজ্য সভাপতি হলে লোধাদের ওই ভোট বিজেপির ঘরে যাওয়া নিশ্চিত বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা। এ ছাড়া জল্পনায় রয়েছে কুর্মি সম্প্রদায়ের স্বতন্ত্র দেও সিংহ, সাধ্বী নিরাঞ্জনা জ্যোতির নাম। তবে মহিলা হওয়ায় সাধ্বীর কপালে শিকে ছেঁড়া কঠিন। দৌড়ে রয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যও। যাঁকে কালো ঘোড়া বলেই মনে করা হচ্ছে। ওবিসি ওই নেতা রাজ্যে জনপ্রিয় মুখ। উপরন্তু সদ্য বিহারের দায়িত্বে থেকে দলকে জিতিয়েছেন তিনি। তাই বিহার জয়ের পুরস্কার তিনি পান কি না, তাই এখন দেখার। উপরন্তু কেশবের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব (নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ)-র সুসম্পর্কও রয়েছে।

আগামিকাল লখনউয়ে দলীয় নির্বাচন উপলক্ষে মননোয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। একের বেশি মনোনয়ন জমা পড়লে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। আগামী রবিবার ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করবেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Yogi Adityanath BJP Caste

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy