Advertisement
E-Paper

নির্বাচনের মুখে ফের মাওবাদী হানার শঙ্কা ঝাড়খণ্ডে

সংগঠনে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে। শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস। কার্যত বন্ধ নতুন ক্যাডার নিয়োগও। সব মিলিয়ে দেশ জুড়ে গোটা দেশে মাওবাদীরা কিছুটা ছত্রভঙ্গ হলেও অদূর ভবিষ্যতে হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫০

সংগঠনে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে। শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস। কার্যত বন্ধ নতুন ক্যাডার নিয়োগও। সব মিলিয়ে দেশ জুড়ে গোটা দেশে মাওবাদীরা কিছুটা ছত্রভঙ্গ হলেও অদূর ভবিষ্যতে হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দাবি, মাওবাদীদের সদর দফতর যে রাজ্যে, সেই ছত্তীসগঢ় তো বটেই, সেই সঙ্গে এই মাসে বিধানসভা ভোটে যাওয়া ঝাড়খণ্ডেও যে কোনও দিন বড় হামলা হতে পারে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতেই মাওবাদীরা কিছু দিনের মধ্যেই হামলা চালাতে পারে বলে রাজনাথ আশঙ্কা করছেন।

ইউপিএ জমানায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাওবাদীদের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন। কিন্তু দেড়-দু’বছর ধরে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর লাগাতার অভিযান, শীর্ষ নেতাদের একাংশের গ্রেফতার হওয়া, মূলস্রোতে ফিরে আসার জন্য ঘোষিত সরকারি প্যাকেজে আকৃষ্ট হয়ে বহু মাওবাদী ক্যাডারের আত্মসমর্পণ এই সব নানাবিধ কারণে মাওবাদীদের প্রভাব আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে বলে কেন্দ্রের দাবি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, গোটা দেশে মাওবাদী নাশকতার ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে গত দু’বছরে মাওবাদী হামলা কার্যত ঘটেনি। বিহারেও নাশকতা কমেছে। মাওবাদী দমনে নতুন নীতি কেন্দ্র নিয়েছে এবং ওই নীতি প্রণয়নের সময়ে মাওবাদী কার্যকলাপের নিরিখে সর্বাধিক প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ৩৪ থেকে ২৩-এ কমিয়ে আনা হয়। পশ্চিমবঙ্গে কোনও মাওবাদী সন্ত্রাসের ঘটনা গত দু’বছরে না-ঘটায় সর্বাধিক প্রভাবিত জেলাগুলির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুরকে। পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র ওই জেলাই দেশের সর্বাধিক প্রভাবিত মাওবাদী জেলাগুলির তালিকায় ছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মাওবাদী নাশকতার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, এমনকী ছত্তীসগঢ়েও।

সার্বিক ভাবে পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক বলে আজ সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে মন্তব্য করেছেন রাজনাথ। তাঁর সতর্কবার্তা, “অতীতে সঙ্কট কাটিয়ে ফের স্বমহিমায় ফিরে আসার উদাহরণ রয়েছে। সুতরাং আমাদের তৈরি থাকতে হবে।” প্রসঙ্গত, মাওবাদী দমনে কোনও রাজ্য যাতে প্রয়োজনে সেনা নামাতে পারে, নীতিগত ভাবে এমন ব্যবস্থায় রাজি মোদী সরকার। এই ব্যাপারে মাওবাদী প্রভাবিত রাজ্যগুলির মতামতও চেয়েছে কেন্দ্র।

আপাতত মাওবাদী প্রশ্নে কেন্দ্রের কাছে মূল চিন্তার বিষয় হল ঝাড়খণ্ডের নির্বাচন। ওই রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন প্রার্থীদের উপর হামলার আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ওই রাজ্যের পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্র। রাজনাথও আজ বলেছেন, “মাওবাদীরা নিজেদের গড়ে এখনও শক্তিশালী। নিজেদের এলাকায় বড় মাপের হামলা চালাতে এখনও সক্ষম তারা।” কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, বড় মাপের হামলা চালালে এক দিকে যেমন প্রচার পাওয়া যায়, তেমনই চাঙ্গা করা যায় ক্যাডারদের। বাড়ে নতুন নিয়োগের সুযোগ। তাই বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডে ভোটের মুখে বড় মাপের মাওবাদী হামলার আশঙ্কা করছে কেন্দ্র।

maoist attack jharkhand assembly election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy