Advertisement
E-Paper

নতুন মাসুলে লাভ রাজ্যের, বলছে রেল

নতুন প্রকল্পের শিকে সে ভাবে না ছিঁড়লেও, আগামী দিনে পণ্য পরিবহণের খরচ কমতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত বা অসমের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে। অথচ, বাজেটে যাত্রীভাড়া না বাড়লেও বেড়েছে পণ্য পরিবহণের মাসুল।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৮

নতুন প্রকল্পের শিকে সে ভাবে না ছিঁড়লেও, আগামী দিনে পণ্য পরিবহণের খরচ কমতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত বা অসমের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে। অথচ, বাজেটে যাত্রীভাড়া না বাড়লেও বেড়েছে পণ্য পরিবহণের মাসুল। গড়ে মূল মাসুল বেড়েছে প্রায় দশ শতাংশ। যার ফলে সার্বিক ভাবে কয়লা, খাদ্যশস্য বা সারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু আনা-নেওয়া করতে যথাক্রমে ৬.৩ শতাংশ ও ১০ শতাংশ হারে বাড়তি গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের। খরচ যখন বাড়তে চলছে তখন কী ভাবে ফায়দা পাবেন সীমান্তবর্তী রাজ্যের মানুষ?

রেল কর্তাদের যুক্তি, এটি মাসুল বৃদ্ধি নয়। আসলে বাজেটে পণ্য মাসুলের পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। সাধারণত পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে এত দিন স্ল্যাবের হিসেবে (০-১২৫ কিলোমিটার, ৪০০-৬০০ কিলোমিটার) থোক মাসুল নেওয়া হতো। রেল বোর্ডের সদস্য (ট্র্যাফিক) অজয় শুক্ল বলেন, “এর ফলে কোনও ব্যবসায়ী বা সংস্থা ১৫১০ কিলোমিটার দূরে মাল নিয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে ১৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বের অর্থ গুনতে হতো তাঁকে। সেই নিয়ম এ বার পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রক। বিশেষ করে দূরপাল্লার পণ্য পরিবহণে।”

নতুন নিয়মে প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে ১৫০০ কিলোমিটারের পর থেকে স্ল্যাবের পরিবর্তে গন্তব্যস্থল পর্যন্ত (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) দূরত্বের মাসুল নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক। আর ১৫০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে যাঁরা মাল পাঠাবেন তাঁদের নতুন হারে অর্থাৎ বেশি হারে ভাড়া গুনতে হবে। এর ফলে মন্ত্রকের ঘরে বাড়তি ৪ হাজার কোটি টাকা আসতে চলেছে। অজয় শুক্লের দাবি, “এই সিদ্ধান্তের ফলে যারা কম দূরত্বের জন্য মাল পাঠাবেন তাঁদের মাসুল বেশি দিতে হবে ঠিকই। কিন্তু যাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জম্মু-কাশ্মীর, গোটা উত্তর-পূর্বের মতো সীমান্তবর্তী এলাকায় মাল পাঠাবেন তাঁরা উপকৃত হবেন।” মন্ত্রকের দাবি, এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবে পশ্চিমবঙ্গও।

রেলের দাবি, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি বা জম্মু-কাশ্মীর খাদ্যশস্য ও তেলের প্রশ্নে দেশের মূল ভূখণ্ডের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু পুরনো নিয়ম চালু থাকায় এ যাবৎ সেখানকার ব্যবসায়ী বা বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে পণ্য পরিবহণের জন্য বাড়তি অর্থ দিতে হতো। ওই এলাকাগুলিতে জিনিসের দাম দেশের অন্য অংশের তুলনায় বেশি। এই অসাম্য দূর করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। রেলের আশা, এর ফলে আগামী দিনে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জিনিসের দাম কমবে।

উদাহরণস্বরূপ বলা হয়েছে, নতুন সিদ্ধান্তে কয়লা পরিবহণের খরচ বেড়েছে ৬.৩ শতাংশ। খরচ বাড়া সত্ত্বেও কোনও ব্যবসায়ী বা সংস্থা ছত্তীসগঢ়ের কোরবা থেকে গুজরাতের গাঁধীনগরে (১৫২৪ কিমি) কয়লা ভর্তি একটি ট্রেন নিয়ে গেলে ট্রেন পিছু সাশ্রয় হবে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। আবার সিমেন্টের ক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে ২.৭ শতাংশ। কিন্তু জব্বলপুর থেকে গুয়াহাটি (১৫৯৩ কিমি) পর্যন্ত মালগাড়িতে সিমেন্ট নিয়ে যেতে সাশ্রয় হবে ৪ লক্ষ ৬ হাজার টাকা। নতুন ভাড়ায় পেট্রো পণ্য পরিবহণের খরচ কমেছে ১ শতাংশ। সেখানে বডোদরা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (২০৩৬ কিমি) পর্যন্ত তেলের ট্যাঙ্কার নিয়ে যেতে সাশ্রয় হবে প্রায় ৬.৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি মালগাড়ি পিছু বাঁচবে ৫ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা।

বাজেটে পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা ১০০ কোটি টন থেকে ১৫০ কোটি টন করেছে মন্ত্রক। দেশের আর্থিক বৃদ্ধি আট শতাংশের বেশি থাকায়, আগামী এক বছরে ওই লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যাবে বলে আশাবাদী মন্ত্রক। শুক্লর দাবি, “লক্ষ্যমাত্রা কঠিন হলেও আগামী দিনে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের চাঙ্গা হয়ে ওঠার আশা দেখা যাচ্ছে। মন্ত্রকের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সিমেন্ট, লৌহ-আকরিক, কয়লা কিংবা ইস্পাতের চাহিদা বাড়বে। তা পূরণের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করবে রেল।”

goods tax rail transport
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy