ফেব্রুয়ারিতে পৃথক বরাকের দাবিতে অবস্থান। রয়েছেন শুভদীপ দত্ত-ও (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)। শিলচরে স্বপন রায়ের তোলা ছবি।
‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ করবে পৃথক বরাক রাজ্য দাবি কমিটি। পৃথক বরাক রাজ্য গঠনের দাবিতে এই বছরের প্রতি মাসের প্রথম কর্মদিবসে ১২ ঘণ্টা অবস্থান করবেন সংগঠনের সদস্যরা। বছরের কোনও এক দিন অতিরিক্ত কর্মসূচিও নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে বারো মাসে ১৩ দিন অবস্থান করা হবে। প্রতি বার রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে স্মারকলিপি।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভদীপ দত্ত। তিনি মলয় নামেই বরাকে পরিচিত। তেরো পাবর্ণের কথা জানাতে গিয়ে বার বার ‘আমরা’ শব্দ ব্যবহার করলেও, এত দিন পর্যন্ত একাই আন্দোলন চালিয়েছেন মলয়বাবু। পৃথক রাজ্যের দাবিতে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে লাগাতার ছ’দিন একা অনশন করেছিেলেন তিনি। বেহাল রাস্তার প্রতিবাদে কাটিগড়ায় গিয়ে কাদায় লুটোপুটি দেওয়ার সময় কেউই তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। এখন তাঁর ‘ট্রেডমার্ক’ পোশাক ধুতি-গেঞ্জি।
মলয়বাবু দাবি জানিয়েছেন, এ বার তাঁর আন্দোলন ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’য় বদলেছে। এ বছরের জানুয়ারি মাসে শিলচরের ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে অবস্থানে বসেছিলেন কাবুগঞ্জের প্রতিনিধিদল ও স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা। ২ ফেব্রুয়ারিও ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। দাবি কমিটির আহ্বায়ক হারান দে বলেন, “এত দিন আমরা মলয়বাবুকে সমর্থন করতাম। এ বার তেরো পার্বণে সক্রিয় ভাবে অংশ নেব।”
পৃথক বরাকের দাবি কেন?
মলয়বাবু বলেন, “বরাক উপত্যকা বরাবর বঞ্চনার শিকার। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে দেখলে বরাক উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা হতে পারে। কারণ এটি মূল ভূখণ্ড থেকে মিজোরাম, মণিপুর ও ত্রিপুরা যাওয়ার প্রবেশপথ।”
তাঁর বক্তব্য, বাংলাদেশ থেকে মায়ানমার ও চিনে যাওয়ার জন্য এটিই সব চেয়ে ভাল করিডর। বরাক উপত্যকা বাণিজ্যিক ভাবে উত্তর-পূর্বের সব ক’টি রাজ্যের কেন্দ্রস্থল।
হারানবাবুর কথায়, “রাজ্য সরকার বরাককে সে ভাবে গুরুত্ব দেয় না। তাই শিল্পের পরিবেশ এখানে তৈরি করা হয় না। স্থানীয় কয়েকটি সংস্থার শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার তরুণ-যুবকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়।”
পৃথক বরাক রাজ্য দাবি কমিটি এ বার ২১ দফা দাবিও প্রকাশ করেছে। ২১ দফার দাবির মধ্যে রয়েছে চাকরিতে স্থানীয় শিক্ষিত বেকারদের নিয়োগ, বরাকে হাইকোর্টের শাখা গঠন, শিলচরে বিমানের নৈশ অবতরণের ব্যবস্থা, সুতারকান্দি সীমান্তে আন্তর্জাতিক হাট, শিলচর-ঢাকা বাস পরিষেবা, নির্দিষ্ট ব্যবধানে পাসপোর্ট মেলার আয়োজন, প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ ও বরাকের চা-কাগজ শিল্পের পুনরুজ্জীবন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy