Advertisement
E-Paper

প্রতিরক্ষায় জোর যৌথ উৎপাদনে

শুধুই বেচা-কেনার সম্পর্ক আর নয়। এ বার হাতে হাত ধরে এক সঙ্গে সমরাস্ত্র তৈরি। প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনী যে সব যুদ্ধাস্ত্র হাতে সাফল্য পেয়েছে, এ বার সেই সব যুদ্ধাস্ত্রের প্রযুক্তিই ভারতের হাতে তুলে দিতে চলেছে আমেরিকা। যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির চালকহীন নজরদারি বিমান (ইউএভি)। এই ‘রাভেন মিনি’ নামের ইউএভি এতটাই ছোট, যে তা হাত দিয়েই ওড়ানো যায়। কিন্তু ইউএভি-টি দশ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে নজরদারি চালাতে পারে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৩
হাঁটতে হাঁটতেই কথা। হায়দরাবাদ হাউসের বাগানে। ছবি: রয়টার্স

হাঁটতে হাঁটতেই কথা। হায়দরাবাদ হাউসের বাগানে। ছবি: রয়টার্স

শুধুই বেচা-কেনার সম্পর্ক আর নয়। এ বার হাতে হাত ধরে এক সঙ্গে সমরাস্ত্র তৈরি। প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা।

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনী যে সব যুদ্ধাস্ত্র হাতে সাফল্য পেয়েছে, এ বার সেই সব যুদ্ধাস্ত্রের প্রযুক্তিই ভারতের হাতে তুলে দিতে চলেছে আমেরিকা। যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির চালকহীন নজরদারি বিমান (ইউএভি)। এই ‘রাভেন মিনি’ নামের ইউএভি এতটাই ছোট, যে তা হাত দিয়েই ওড়ানো যায়। কিন্তু ইউএভি-টি দশ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে নজরদারি চালাতে পারে।

দু’দেশের রণকৌশলগত সম্পর্ক ছিলই। কিন্তু এত দিন শুধুই ভারতে সমরাস্ত্র বেচে এসেছে আমেরিকা। রাশিয়ার মতো উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে তেমন সাহায্য করেনি। বারাক ওবামা ও নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আজ নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। আজ দু’দেশের মধ্যে আগামী দশ বছরের জন্য যে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়েছে, তাতে নতুন সংযোজন---এক সঙ্গে গবেষণা, এক সঙ্গে তৈরি।

আজই চারটি বিষয় চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক ইউএভি (আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকল) তৈরির প্রকল্প। বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ তৈরি ও যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরির জন্যও হাতে হাত মিলিয়ে গবেষণা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তিতে আরও বেশি করে যৌথ মহড়া, বেশি পরিমাণে গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান এবং সমুদ্রে নিরাপত্তায় সহযোগিতা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।

সেনা কর্তাদের মতে, এ দেশে অত্যাধুনিক ও ছোট মাপের ইউএভি তৈরি হলে ভারতীয় সংস্থাগুলিও কোটি কোটি ডলারের বরাত পাবে। এই ধরনের ইউএভি হাত দিয়েই ছাড়া যায়। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর সাফল্যের পিছনে রয়েছে এই ইউএভি। কারণ মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় উঠে নজরদারি চালাতে পারে এই ইউএভি। তাই এখন গোটা বিশ্বেই এই ধরনের ইউএভি-র যথেষ্ট চাহিদা।

ওবামার সঙ্গে বৈঠকের পর আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্ক নতুন স্তরে পৌঁছে গেল। কিছু আধুনিক প্রতিরক্ষা প্রকল্পে আমরা নীতিগত ভাবে একসঙ্গে গবেষণা ও এক সঙ্গে যুদ্ধাস্ত্র তৈরিতে রাজি হয়েছি।” এতে দু’টি লাভ হবে বলে মোদী মনে করছেন। এক, দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে জোয়ার আসবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির সঙ্গে দেশীয় সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ভারতেই যুদ্ধাস্ত্র তৈরি হবে। বিদেশেও তা রফতানি হবে। ভারত শুধুই আর অস্ত্র আমদানি না করে রফতানিকারীদের দলেও নাম লেখাবে। দুই, এ দেশে কারখানা উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সঙ্গে এই বিষয়টি খাপ খেয়ে যাবে। আমেরিকাও এখন প্রযুক্তি দিয়ে ভারতকে সাহায্য করতে চাইছে। মার্কিন সংস্থাগুলি যাতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে লগ্নি করতে পারে, সেজন্য মোদী সরকার ইতিমধ্যেই ৪৯ শতাংশ বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দিয়ে রেখেছে। আধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নিরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা চুক্তিতে এ বার যে অধ্যায়টি নতুন সংযোজন হয়েছে, তার নাম ‘ডিফেন্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি ইনিশিয়েটিভ’। এর উদ্দেশ্যই হল, কোন ক্ষেত্রে গবেষণা বা উৎপাদনের জন্য ভারত ও আমেরিকা এক সঙ্গে কাজ করতে পারে, তা খুঁজে দেখা। বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ বলেন, “এই বোঝাপড়ার সূত্রপাত হিসেবে চারটি প্রকল্প বেছে নেওয়া হয়েছে।” তাঁর মতে, চারটি ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের পরিকল্পনা রূপায়িত হলে দু’দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নয়া দিগন্ত খুলে যাবে।

barack obama arms pact premangshu chowdhury nuclear pact narendra modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy