Advertisement
E-Paper

বারবার রবি-বাড়ি বদলে যায়

‘এই তো ভালো লেগেছিল আলোর নাচন পাতায় পাতায়। শালের বনে খ্যাপা হাওয়া, এই তো আমার মনকে মাতায়। রাঙা মাটির রাস্তা বেয়ে হাটের পথিক চলে ধেয়ে, ছোটো মেয়ে ধুলায় বসে খেলার ডালি একলা সাজায় সামনে চেয়ে এই যা দেখি চোখে আমার বীণা বাজায়।’

পারমিতা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০০

‘এই তো ভালো লেগেছিল আলোর নাচন পাতায় পাতায়।
শালের বনে খ্যাপা হাওয়া, এই তো আমার মনকে মাতায়।
রাঙা মাটির রাস্তা বেয়ে হাটের পথিক চলে ধেয়ে,
ছোটো মেয়ে ধুলায় বসে খেলার ডালি একলা সাজায়
সামনে চেয়ে এই যা দেখি চোখে আমার বীণা বাজায়।’

প্রায় বছর আটেক আগে কলকাতার বিধাননগরে ‘কবি-প্রণাম’ অনুষ্ঠানে এই গানটি সমবেত কণ্ঠে গেয়েছিলাম। কবির জন্মদিন পঁচিশে বৈশাখ নিয়ে লিখতে বসে আবার মনে এল গানটি। গানটির মধ্য দিয়ে প্রকৃতির যে ছোট্ট ছোট্ট আপাতদৃষ্টিতে অতিসাধারণ ছবি ফুটে উঠেছেতাদের তুচ্ছতাই যেন তাদের উত্তীর্ণ করেছে এক অসাধারণ রূপকল্পে। তারা তুচ্ছ অথচ তুচ্ছ নয়। যার দেখার চোখ আছে, সেই এর মধ্য থেকে আহরণ করে নিতে পারবে আনন্দ প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে দেওয়ার আনন্দ— জীবনানন্দ। এই দেখার চোখ ছিল বলেই না তিনি কবিগুরু।

শান্তিনিকেতনের উদাত্ত প্রকৃতি তাঁর মনের দুয়ার খুলে দিয়েছিল। তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে কবি। তাই তাঁর মন কোনও দিনই গতানুগতিকতার নাগপাশে বন্দি হতে চাইত না। কাব্যসৃষ্টির তাগিদে তিনি সদাই অনুসন্ধান করতেন নিত্য নতুনকে— যা তাঁকে প্রেরণা দিত, অনুপ্রাণিত করত নব নব কাব্যসৃষ্টিতে।

শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণ চত্বর রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিধন্য। কোনার্ক-শ্যামলী-পুনশ্চ-উদয়ন-উদিচী এই পাঁচটি বাড়ি মিলিয়েই উত্তরায়ণ। একঘেয়েমির বন্ধন থেকে মুক্তির আশায় কবিগুরুর ইচ্ছেয় একের পর এক নির্মিত হয়েছিল বাড়িগুলি। অবশ্যই এই নির্মাণের পশ্চাতে যে নিপুণ কিছু পরিকল্পনা ছিল তা নয়— মনের দুয়ার খোলা রাখার তাগিদই এ ক্ষেত্রে অধিক হয়ে উঠেছিল। শিল্পগুরু অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠ পুত্র শিল্পী-ভাস্কর-লেখক অলোকেন্দ্রনাথের কনিষ্ঠ পুত্র সুমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘শান্তিনিকেতন চেনা অচেনা’ বইটির থেকে এই সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। আজকের লেখায় কবির স্মৃতিবিজড়িত উত্তরায়ণ নিয়েই আলোকপাত করব।

১৯২৯ সালে শিলং থেকে শান্তিনিকেতনে এসে রবীন্দ্রনাথ বাস করতে শুরু করেন উত্তরায়ণ চত্বরে এবং সেই হেতু মনে করা হয় উত্তরায়ণের প্রথম নির্মিত বাড়ি কোনার্কের ভিত্তি স্থাপিত হয় ১৯১৮ সালেই। প্রথম দিকে এটি কিন্তু সম্পূর্ণ বাড়ি বলতে যা বোঝায় তা ছিল না মোটেই। গুরুদেব চেয়েছিলেন চার দিক খোলা একটি ঘর, যে ঘরে বসে তিনি শান্তিনিকেতনের খোলা দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করবেন এবং প্রাকৃতিক দৈনন্দিন রহস্যকে উপলব্ধি করবেন নীল আকাশের অনন্তলোকে বা সুদূর দিকচক্রবালে। তাই কোনার্ক গড়তে গিয়ে প্রথমে তৈরি হল বেশ উঁচু প্লিন্থের ওপর চারটি থামের ওপর খড়ে ছাওয়া চার দিক খোলা একটি চৌতারা। এই চৌতারায় বসে লিখতে লিখতে তিনি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যেতেন। চৌতারার পশ্চিমে বেশ কয়েকটি সিঁড়ি দিয়ে নীচে একটি ছোট্ট শোওয়ার ঘর ও তার পাশে একটি ছোট্ট খাওয়ার ঘর ছিল। রবীন্দ্রনাথ ১৯১৯ সাল থেকে কোনার্কে বসবাস করতে শুরু করলেও এর নানা পরিবর্তনের কাজ আরম্ভ হয় ১৯২২ সাল থেকে। এর পর ধীরে ধীরে খড়, মাটির দেওয়ালের বদলে উঠেছে ইঁটের মোটা গাঁথনি, সিমেন্টের ঢালাই ছাদ, লাল আট থামের বারান্দা এবং আরও কত কিছু। ১৯২৮ সালে শেষ হয় কোনার্কের সম্পূর্ণ কাজ।

কবিগুরুর যখন ছেষট্টি বছর বয়স তখন তিনি ‘শ্যামলী’ গৃহনির্মাণের পরিকল্পনা করেন। তাঁর চিন্তায় আসে এমন একটি বাড়ি যা হবে পুরোপুরি মাটির এমনকী তার ছাদও। এমন অভিনব পরিকল্পনাটি রূপায়ণের দায়িত্ব পড়ল শিল্পী সুরেন্দ্রনাথ করের ওপর। মৃত্যুর পর মানুষ বিলীন হয়ে যায় এই ধরণীর ধূলিতে। তাই ধুলোমাটি দিয়েই তৈরি হোক একতলা বাড়ি যার নাম হবে ‘শ্যামলী’। চন্দননগরের মোরান সাহেবের বাড়িতে থাকার সময় রবীন্দ্রনাথ এক অদ্ভূত মাটির বাড়ি দেখেন। সেই বাড়িটির কথা মাথায় রেখে এবং তার সঙ্গে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারায় আশ্রয় নিয়ে শ্যামলীর নির্মাণ শুরু হয়। শ্যামলী কোনার্ক-এর ডান দিকে। বাড়িটি তৈরি হয়েছিল মাটির কলসি এক একটা গায়ে গায়ে সাজিয়ে। শ্যামলীর দেওয়াল ছিল খুব মোটা এই কারণে যে কলসিগুলি ছিল গায়ে গায়ে শোওয়ানো এবং তাদের মুখগুলি ঘরের ভিতরের দিকে। সুমিতেন্দ্রনাথের বর্ণনায় ‘কলসির ওপর কলসি সাজিয়ে তার ওপর মোটা মাটি লেপে দেওয়ালের ওপর খাড়াখাড়ি কলসির মাথাগুলি নীচের দিক করে বসিয়ে সারগাছ ও কাশফুলের ডাঁটি গায়ে গায়ে বেঁধে ঘরগুলোর মাথার ফাঁকা অংশ ওপর ও ভিতর মাটির পলেস্তারায় বন্ধ করে ঘরের আকার দেওয়া হল’। গৃহনির্মাণের পর নন্দলাল বসু ও তাঁর কলাভবনের ছাত্রছাত্রীরা বাড়ির বাইরে মাটির দেওয়ালে নানা মূর্তি ও শান্তিনিকেতনের জীবনযাত্রার নানা ছবি এঁকে তাকে অপরূপ করে তুললেন। এই বাড়িটির গায়ে শিল্পী রামকিঙ্কর ফুটিয়ে তোলেন কয়েক জন সাঁওতাল রমণীর চেহারা— এই শিল্পকর্মটিও অপূর্ব। ১৯৩৫ সালে কবি তাঁর পঁচাত্তরতম জন্মদিন পালনের পর এই ঘরে বসবাস করতে আরম্ভ করেন। মাটির ঘরের জানলার পাশে লেখার টেবিলে বসে তাঁর মন উড়ে যেত সেই কোন সুদূরে আলপথের পাখির ডাকে সাড়া দিয়ে। ১৯৩৬-এ প্রবল বৃষ্টিতে ‘শ্যামলী’র ছাদ ধসে পড়ে এবং শ্যামলীর মাথায় ত্রিপল বিছিয়ে আলকাতরা লেপন করে তার সংস্কার করা হয়।

শ্যামলীর পর ‘পুনশ্চ’। রবিঠাকুরের মন এক পরিবেশে, এক ঘরের দেওয়ালের মধ্যে বেশি দিন আবদ্ধ হয়ে থাকতে পারত না। নতুন লেখার তাগিদে প্রয়োজন হল পরিবর্তন। তাই শ্যামলীর পূর্ব দিকে পুনশ্চর আবির্ভাব। ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে চার দিকে চাতালবেষ্টিত একটি বেশ বড় ঘর তৈরি হল সুরেন করের তত্ত্বাবধানে। পুনরায় গৃহনির্মাণ, তাই ঘরটির নাম হল বোধহয় ‘পুনশ্চ’। তাঁর জিনিসপত্র থাকত শ্যামলীতে। সকালবেলা লেখা ও ছবি আঁকার সরঞ্জাম নিয়ে তিনি পুনশ্চর ঘরটিতে প্রবেশ করতেন। সারা দিন ধরে চলত তাঁর লেখা ও ছবি আঁকা। এখানে তিনি বেশির ভাগ সময় ছবি আঁকায় মগ্ন থাকতেন। আবার অনেক সময় কাঠের বাক্স জোড়া লাগিয়ে তার ওপর বিছানা করে রাতও কাটিয়েছেন তিনি এখানে। ‘পুনশ্চ’য় বসবাসকালে সুবিধা মতো ঘরটির রূপও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়।

উত্তরায়ণের এই তিনটি বাড়ির পরিকল্পনা রূপ পরিগ্রহ করে সুরেন করের মাধ্যমে। কিন্তু ‘উদয়ন’ বাড়িটির স্থাপত্য পরিকল্পনা সম্পূর্ণ রবিপুত্র রথীন্দ্রনাথের। রথীন্দ্রনাথ তাঁর সৌন্দর্যচেতনা, শিল্পবোধ উজাড় করে দিয়েছিলেন এই গৃহের নির্মাণকাব্যে। ১৯২০ সালের পর থেকে রথীন্দ্রনাথ ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমাদেবী শান্তিনিকেতনে স্থায়ী ভাবে বসবাস আরম্ভ করেন এবং তখন থেকেই উয়দনের পরিকল্পনার সূত্রপাত। ১৯২১ সাল থেকে উদয়নের কাজ শুরু হয়। যখন যেমন অর্থ পাওয়া গেছে সে ভাবেই এগিয়েছে নির্মাণকাজ। তাই ঘর, ছাদ বা বারান্দায় সঙ্গতি এখানে পাওয়া দুষ্কর। এই অসঙ্গতিই যেন উদয়ন-এর সৌন্দর্য। রথীন্দ্রনাথ উদয়ন-এর একতলার বসবার ঘর সাজিয়েছিলেন জাপানি রীতিতে। উদয়ন-এর স্থাপত্যে চোখে পড়ে দেশি ও বিদেশি শিল্পশৈলির সংমিশ্রণ। বরবুদুর, বালিদ্বীপ, রাজস্থান ও গুজরাতের নানা স্থাপত্য শিল্প এই বাড়ির বারান্দা, অলিন্দ বা গবাক্ষে প্রতিফলিত। সতেরো বছর ধরে উদয়ন-এর কাজ চলে ও তা শেষ হয় ১৯৩৮ সালে। উদয়ন-এ রাত কাটিয়েছেন বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব। মহাত্মা গাঁধী, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন, জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধী, জাকির হোসেন প্রমুখ এবং অনেক বিখ্যাত বিদেশি ব্যক্তিত্ব।

এ বার উত্তরায়ণের শেষ নির্মাণ ‘উদিচী’। যথারীতি ‘পুনশ্চ’য় কয়েক মাস বাস করার পর আর সেখানে ভাল লাগল না কবির। প্রতিবারের মতো এ বারেও প্রয়োজন অনুভূত হল নতুন পরিবেশে চার দিক খোলা একখানি ঘরের যা তাঁর কাব্যশিল্পচর্চার অনুকূল হবে। এ বারে ডাক পড়ল রথীর। পুনশ্চ-র দক্ষিণ পূর্ব কোণে গোলাপ বাগানের গায়ে কয়েকটি ঢালাই করা থামের ওপর একটি চারদিক খোলা ঘর তৈরি হল। সেই ঘরটিতে কাঠ বা কাচের চিরাচরিত জানালা ছিল না ছিল রাজস্থানী স্থাপত্যের অনুকরণে অলংকৃত খোলা গবাক্ষ। সুমিতেন্দ্রনাথ লিখছেন, ‘এই ঘরে ওঠার জন্যে বাগানের রাস্তার ধার থেকে একটা খোলা সিঁড়ি ঘরটির সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই সিঁড়ির পাশে ছিল একটা পলাশ গাছ যা বসন্তের আগমনে উদিচী-র পরিবেশ লালে লাল করে এক রকম আগুন জ্বালিয়ে দিত।’ পরবর্তী কালে কবির মৃত্যুর পর এই বাড়িটির উপর নীচে কয়েকটি নতুন ঘর যোগ হয়। রাজস্থানী জানালাকেও ঘরের চেহারায় ফিরিয়ে আনা হয়। আটাত্তর বছর বয়সে অর্থাৎ চিরতরে চলে যাওয়ার কিছু সময় আগে থেকে কবি এই ঘরে বসবাস শুরু করেন। এই তাঁর শেষ গৃহবদল। কবিগুরুর শেষ জীবনের আঁকা বহু ছবি এবং কবিতার মধ্যে হৃদয়ের যে ব্যাকুলতা ও গভীর অনুভূতির প্রকাশ— তা এই উদিচী-র মুক্ত ঘরেই সৃষ্ট।

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন কবিগুরু। তাঁর লেখা আমাদের জীবনকে ধারণ করে থাকে। প্রকৃতির উদাত্ত স্পর্শ তাতে আছে বলেই না সেই লেখার মধ্যে দিয়ে আমরাও অনুভব করতে পারি অনন্তকে। আজ চারি দিকে এত কোলাহল, এত কলরোল, এত দেখনদারির মাঝে যখন মনটা অস্থির হয়ে ওঠে— চার পাশে অবিরত ঘটতে থাকা নানা ঘটনা থেকে ক্ষণিকের মুক্তি চায়— তখনই আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তি মেলে রবীন্দ্রকাব্যে, গানে, কবিতায়। কোনও দিন কোনও এক নতুন ভোরে এক মনে শুনি দেবব্রত বিশ্বাসের গলায় রবীন্দ্রনাথের গান ‘ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি/মোর ডানা নাই, আছি এক ঠাঁই সে কথা যে যাই পাশরি/আমি উন্মনা হে,/হে সুদূর, আমি উদাসী/...আমি চঞ্চল হে/আমি সুদূরের পিয়াসি’। শুনি আর কোথায় হারিয়ে যাই। মনকে সুদূরে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া এ বোধহয় একমাত্র রবীন্দ্রগানেই সম্ভব।

পঁচিশে বৈশাখ কবিগুরুর জন্মদিন আগতপ্রায়। এ বারে ইংরাজি ৯ মে। কবিগুরুর জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়েই তাঁকে আমরা জানাব আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য যদিও তিনি বছরের প্রায় প্রতিটি দিনই জড়িয়ে থাকেন আমাদের জীবনের সঙ্গে। এ বারে লেখা শেষ করার পালা। তার আগে দু’একটি অনুষ্ঠানের খবরাখবর দিয়ে দিই। ভাসির নবি মুম্বই বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে আগামী ১০ মে পঞ্চকবি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল এবং রজনীকান্ত— এঁদের গান, কবিতা প্রভৃতি সহকারে এক অভিনব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হবে এই অনুষ্ঠান। পানভেলের মিলন তীর্থ ক্লাবের তরফ থেকে ২ মে কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস ও বর্ষবরণ উপলক্ষে একটি ছোটখাটো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মে-র শেষের দিকে মিলন তীর্থ ক্লাবের উদ্যোক্তাদের রবীন্দ্র জয়ন্তী পালনের পরিকল্পনা আছে।

সুধিজন, আগামী ৯ মে রবীন্দ্রজয়ন্তী সে কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু তার আগে ২ মে কার জন্মদিন সে কথা আপনারা ভুলে যাবেন না যেন। হ্যাঁ, চলচ্চিত্র জগতের এক দিকপাল— সত্যজিৎ রায়। ক’দিন আগে সিডিতে গুপী গাইন বাঘা বাইন সিনেমাটি দেখতে দেখতে ভাবছিলাম কী অনবদ্য আবেদন ছবিটির। আমরা যখন খুব ছোট, এই বছর পাঁচ তখন এই সিনেমাটি দেখে কেমন আনন্দ পেয়েছিলাম আজ আমার একরত্তি ছেলে ঠিক সেই একই রকম আনন্দ পেল ছবিটি দেখে। সময়ের সীমারেখা অতিক্রম করে যাওয়া এখানেই তো শিল্পীর সার্থকতা। আর এখানেই সত্যজিৎ রায় জয়ী। তাঁর পরিচালিত পথের পাঁচালী, অপরাজিত, অপুর সংসার, জলসাঘর, চারুলতা প্রভৃতি সিনেমা কী অনবদ্য। সত্যজিৎ রায় কিন্তু তাঁর ছাত্রজীবনের কিছু দিন শান্তিনিকেতনে কাটিয়েছিলেন। আর শুধু তো পরিচালক নন, লেখক ও চিত্রশিল্পী হিসেবেও তিনি খ্যাতি পেয়েছিলেন। তিনি না থাকলে কি আমরা পেতাম ফেলুদা, তোপসে, লালমোহনবাবু বা প্রফেসর শঙ্কুকে? আমাদের বাঙালিদের গর্ব করার মতো ব্যক্তিত্বদের শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষ করছি এই লেখা। সবাইকে নিয়ে ভাল থাকুন, আনন্দে থাকুন।

ঋণস্বীকার: শান্তিনিকেতন চেনা অচেনা/সুমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর

paramita mukhopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy