Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভাগবত-বিতর্কে এ বার প্যাঁচে কেন্দ্র

মাদার টেরিজার নেতৃত্বে কোনও ধর্মান্তরণ হয়নি বলে জানিয়ে দিল ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটিজ’। প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্রের মতে, মোহন ভাগবত ঠিক তথ্য জানেন না। বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের তোপে প্যাঁচে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত কাল রাজস্থানে একটি অনুষ্ঠানে আরএসএস প্রধান ভাগবত বলেন, “মাদার টেরিজার দরিদ্রসেবা করার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল ধর্মান্তরণ।”

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৩
Share: Save:

মাদার টেরিজার নেতৃত্বে কোনও ধর্মান্তরণ হয়নি বলে জানিয়ে দিল ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটিজ’। প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্রের মতে, মোহন ভাগবত ঠিক তথ্য জানেন না। বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের তোপে প্যাঁচে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

গত কাল রাজস্থানে একটি অনুষ্ঠানে আরএসএস প্রধান ভাগবত বলেন, “মাদার টেরিজার দরিদ্রসেবা করার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল ধর্মান্তরণ।” এর পরে প্রত্যাশিত ভাবেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

‘মিশনারিজ অব চ্যারিটিজ’-এর মুখপাত্র সুনীতা কুমারের কথায়, “ভাগবত ঠিক তথ্য জানেন না। মাদারের সময়ে এই প্রতিষ্ঠানে কোনও ধর্মান্তরণ হয়নি। এখনও হচ্ছে না। গরিব মানুষের সেবা করে তাঁদের জীবনে আনন্দ ও মর্যাদা আনাই আমাদের কাজ।” তাঁর দাবি, মুসলিম, হিন্দু, শিখ-সকলেরই সেবা করে ওই প্রতিষ্ঠান। সুনীতার কথায়, “আমি শিখ। কিন্তু তাতে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বজায় রাখতে কোনও অসুবিধে হয়নি।” প্রায় একই সুরে “ব্লেসড ভার্জিন মেরি লোরেটো’-র সিস্টার এস এম সিরিল জানিয়েছেন, কখনওই মাদার টেরিজা বা তাঁর প্রতিষ্ঠান ধর্মান্তরণের পক্ষে প্রচার করতেন না। আরএসএস প্রধানের মন্তব্যের সমালোচনা করেছে ক্যাথলিক চার্চও।

আরএসএস নেতা এম জি বৈদ্য অবশ্য ভাগবতের মন্তব্যের পক্ষেই মুখ খুলেছেন। তাঁর কথায়, “খ্রিস্টান মিশনারিরা ধর্মান্তরণ করানোর জন্যই মানুষের সেবা করেন।”

আজ সংসদে বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। সংবিধানে “ধর্মনিরপেক্ষ” ও “সমাজতান্ত্রিক” শব্দ দু’টি নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা চেয়েছিলেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। সেই বিতর্কে কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ভাগবতের মন্তব্য নিয়ে সরব হন। তবে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন জানিয়ে দেন, আরএসএসের কেউ সংসদের সদস্য নন। তাই ভাগবতের মন্তব্য নিয়ে জবাব দেওয়ারও কেউ নেই। ফলে বিরোধীদের ওই বক্তব্য সংসদের রেকর্ডে থাকবে না। গত কাল আরএসএস ও বিজেপিকে এই প্রসঙ্গে তোপ দেগেছিল তৃণমূল। আজ দলের নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী কাল বিষয়টি সংসদে তুলবেন তাঁরা।

আগের অধিবেশনে সাক্ষী মহারাজ, সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে হইচই হয়েছে। ফলে, অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে এগোতেই পারেনি কেন্দ্র। বাজেট অধিবেশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল অন্তত লোকসভায় পাশ করাতে চাইছে তারা। কিন্তু ভাগবতের মন্তব্যের জেরে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছে সেই ধর্মান্তরণই। এই বিষয়ে সব ক’টি ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ দল একজোট হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এগোবে বলেও বুঝতে পারছেন মোদী সরকারের শীর্ষ কর্তারা। তাই আজ মীনাক্ষী লেখি বিক্ষিপ্ত ভাবে ভাগবতের সমর্থনে মুখ খুললেও বিজেপি মোটের উপরে বিষয়টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mohan bhagwat mother teresa remark rss
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE