Advertisement
E-Paper

ভোট দেয়নি ঘরের মানুষ! ব্যথিত সিপিএম

ভোট দেয়নি নিজের লোকেরাই। যাদের নিয়ে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার স্বপ্ন, সেই গণ সংগঠনের সদস্যরাই ভোট দেয়নি সিপিএম প্রার্থীদের। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। ফলাফলের পর্যালোচনার দলিলে এই আত্মসমীক্ষার কথা তুলে ধরেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। ৭ ও ৮ জুন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এই দলিল গৃহীত হয়েছে। দলের সর্বস্তরে আলোচনার জন্য এ বার তা পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হচ্ছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০৪:০৮

ভোট দেয়নি নিজের লোকেরাই।

যাদের নিয়ে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার স্বপ্ন, সেই গণ সংগঠনের সদস্যরাই ভোট দেয়নি সিপিএম প্রার্থীদের। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। ফলাফলের পর্যালোচনার দলিলে এই আত্মসমীক্ষার কথা তুলে ধরেছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

৭ ও ৮ জুন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এই দলিল গৃহীত হয়েছে। দলের সর্বস্তরে আলোচনার জন্য এ বার তা পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। এখানে বলা হয়েছে, ‘রাজ্য কমিটিগুলির পর্যালোচনা দেখাচ্ছে, গণ সংগঠনগুলির বড় অংশ দল বা বাম প্রার্থীদের ভোট দেয়নি।’ যদিও সমস্যা সমাধানের আশায় কেন্দ্রীয় কমিটির দাওয়াই, ‘গণ সংগঠনগুলির কাজের ধরন পরীক্ষা করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যাতে তারা স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারে এবং রাজনৈতিক আন্দোলন ও পার্টি তৈরির কাজ হয়।’

গণ সংগঠনগুলিতে আন্দোলনের অভাব যে পশ্চিমবঙ্গের হারের পিছনেও বড় কারণ, তা বলা হয়েছে দলিলে। লেখা হয়েছে, ‘গণ সংগঠনগুলি স্বাধীন ভাবে সার্বিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।’ সিপিএম নেতারা মনে করছেন, এত দিন গণ সংগঠনগুলি প্রতি বছর খুব সামান্য অর্থ চাঁদা তুলত। যারা সেই চাঁদা দিয়ে দিত, তাদেরকেই সিপিএমের গণ সংগঠনগুলির সদস্য হিসেবে নাম লিখে ফেলা হত। দলের খাতায় নাম থাকা সত্ত্বেও ওই সদস্যরা কোনও আন্দোলনেই যোগ দিত না। এ বার গণ সংগঠনের সদস্য করার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,“আন্দোলন বা প্রচারের সময় যে সব নতুন সমর্থক যোগ দিচ্ছেন, তাদের গণ সংগঠনে টেনে নিয়ে আসতে হবে। যারা এ সবে এগিয়ে থাকছেন, তাদের পার্টির সদস্য হিসেবে নিয়োগ করার জন্য দলীয় কমিটিগুলোকে পদক্ষেপ করতে হবে।’

সিপিএম নেতৃত্ব মানছেন, ১৮ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সীর মধ্যে সিপিএম পার্টি ও দলের রাজনীতির কোনও আবেদনই অবশিষ্ট নেই। একই ভাবে মধ্যবিত্তদের মধ্যেও পার্টির ভিত দুর্বল হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব মানছেন, তরুণ প্রজন্ম ও মধ্যবিত্ত মানুষের সমর্থন-- দুই জায়গাতেই বাজি মাত করেছেন নরেন্দ্র মোদী। এক দিকে তিনি তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নকে উস্কে দিয়েছেন। মোদী এসে চাকরির সুযোগ তৈরি করবেন, রোজগার বাড়বে, এই আশাবাদ তৈরি হয়েছে। একই ভাবে মধ্যবিত্ত মানুষ মনে করেছেন, মোদী সরকার যে আর্থিক নীতি নিচ্ছে, তাতে তাঁরা লাভবান হবেন। তবে এর পরেও সিপিএম নেতৃত্বের আশা, খুব তাড়াতাড়ি মোদীকে নিয়ে মানুষের মোহভঙ্গ হবে। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হান্নান মোল্লার মন্তব্য, “মোদী সরকারের মধুচন্দ্রিমা পর্বেই যে ভাবে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ছে, তা থেকে স্পষ্ট, মধ্যবিত্তের জন্য মধুর থেকে তেতো ওষুধই বেশি।”

নবীন প্রজন্মের কাছে পৌঁছনো নিয়ে দলের তরুণ সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত,“নরেন্দ্র মোদী তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের আশা দেখিয়েছেন। কিন্তু মোদী সরকারের নীতির ভুলভ্রান্তিগুলোই এখন মানুষকে বোঝাতে হবে।”

সে কাজে দল ও গণসংগঠনগুলি কতটা সফল হয়, সেটাই দেখার।

cpm vote premanshu chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy