Advertisement
E-Paper

ভাল বন্ধু রামবিলাস এখন নীতীশের কাছে সুবিধাবাদী

দিন কয়েক আগেই তিনি বলেছিলেন, রামবিলাস পাসোয়ান তাঁর ভাল বন্ধু। কিন্তু বন্ধুর শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে বন্ধু হারালেন রামবিলাস। বিজেপি-র সঙ্গে জোট বাঁধতেই আজ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে নীতীশ কুমারের প্রতিক্রিয়া, “রামবিলাসের কোনও নীতি নেই। যেখানে বোঝাপড়ায় লাভ আছে সেখানে তিনি সেই অনুযায়ীই কাজ করেন। এমন কাজ রামবিলাসের পক্ষেই সম্ভব।”

স্বপন সরকার

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪৩

দিন কয়েক আগেই তিনি বলেছিলেন, রামবিলাস পাসোয়ান তাঁর ভাল বন্ধু। কিন্তু বন্ধুর শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে বন্ধু হারালেন রামবিলাস। বিজেপি-র সঙ্গে জোট বাঁধতেই আজ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে নীতীশ কুমারের প্রতিক্রিয়া, “রামবিলাসের কোনও নীতি নেই। যেখানে বোঝাপড়ায় লাভ আছে সেখানে তিনি সেই অনুযায়ীই কাজ করেন। এমন কাজ রামবিলাসের পক্ষেই সম্ভব।”

কংগ্রেস বা আরজেডি-র সঙ্গে নির্বাচনী জোট করে যে আখেরে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে লাভ কিছু হবে না, তা বুঝতে পেরেই রামবিলাস বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তা নিয়ে সমালোচনা হলেও রামবিলাস বা তাঁর ছেলে চিরাগ নির্বিকার। তাঁরা আগেই বলে দিয়েছেন, আদালত নরেন্দ্র মোদীকে ‘ক্লিন চিট’ দেওয়ার পরে তাঁদের আর কোনও বক্তব্য নেই। অথচ ২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের প্রতিবাদেই এনডিএ মন্ত্রিসভা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন রামবিলাস। ১২ বছর পরে সেখানে ফিরে যাওয়া নিয়ে তার মধ্যে যে কোনও গ্লানি নেই তা বোঝাতেই বাবা-ছেলে মোদীর গুণগান করতে পিছপা হননি। জেডিইউ সূত্রের বক্তব্য, উদ্দেশ্য লোকসভায় অন্তত তিনটি আসন জেতা রামবিলাসের নিজের, তাঁর ভাই পশুপতি নাথ পারস এবং পাসোয়ান-পুত্র চিরাগের। তার জন্য রামবিলাস শেষ পর্যন্ত সাতটি আসনে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা গড়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর চেষ্টায় প্রাথমিক ভাবে সফল। ২০০৯-এর ভোটে আরজেডির সঙ্গে সমঝোতা হলেও একটিও এলজেপি জিততে পারেনি। হাজিপুরেও হেরে যান রামবিলাস-ই।

কেন আরজেডির সঙ্গে জোট হল না?

লোক জনশক্তির নেতাদের কথায়, লালু এলজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কথাই বলতে চাননি। আরজেডি রামবিলাসকে সম্মানও দিচ্ছিল না। অপেক্ষা করার পরে রামবিলাস জানতে পারেন, লালুপ্রসাদ কংগ্রেসকে ১৪টি আসন দিতে চায়। এবং কংগ্রেসকে লালু জানিয়ে দেন, রামবিলাসকে আসন দিতে হলে এই ১৪টি থেকেই তা দিতে হবে। প্রবল অপমানিত বোধ করেন রামবিলাস। শেষ পর্যন্ত পুরনো বন্ধু বিজেপির হাত ধরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কেন লালুপ্রসাদ এটা করলেন? আরজেডি শিবির বলছে, গত লোকসভা নির্বাচনে স্পষ্ট হয়েছে রামবিলাসকে আসন দেওয়ার অর্থ জেতার সম্ভাবনা কমে যাওয়া। ফলে লালুপ্রসাদ যে রামবিলাসের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছিলেন তার প্রমাণ ছিল গত সপ্তাহে দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও রামবিলাসের ফোন লালু ধরেননি। এলজেপি নেতাদের কথায়, গত তিন দিনে লালুপ্রসাদ অন্তত একশো বার ফোন করেছেন। রামবিলাস ধরেননি।

লালুর কাছ থেকে রামবিলাসকে ছিনিয়ে আনতে সক্রিয় ছিলেন নীতীশও। রামবিলাসকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের দলিত ভোট সংগঠিত করতে আগ্রহী ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্য সাংবাদিকদের কাছে কয়েক দিন আগেও রামবিলাসকে ভাল বন্ধু আখ্যা দিয়েছিলেন। ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন রামবিলাসকে। তাতে রাজনীতিক রামবিলাস বিশেষ উদ্বেল হননি। বরং সর্বভারতীয় রাজনীতির নিরিখে মোদী-ঝড়ের আভাস পেয়ে গত পাঁচ বছর দিল্লির ক্ষমতা-অলিন্দ থেকে দূরে থাকা রামবিলাস বিজেপিকেই সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

আর বিজেপি রামবিলাসকে বেছে নিয়েছে বিহার ভোটে রামবিলাসের একেবারে নিজস্ব ৫ শতাংশ ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবে। এই ৫ শতাংশের ‘স্যুইং’ বিহারের ত্রিমুখী রাজনীতিতে অনেক কিছুই এ দিক ও দিক করে দিতে পারে বলে বিজেপি নেতৃত্বের বিশ্বাস।

national politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy